প্রকাশিত: ১৮ মার্চ, ২০২৩ ২১:২২ (শুক্রবার)
সিলেটে বরাক-সুরমা নাট্যোৎসবে ‘আওরঙ্গজেব’ মঞ্চস্থ

কথাকলি সিলেটের চার দশক পূর্তি উপলক্ষ্যে ছয় দিনব্যাপি বরাক-সুরমা নাট্যোৎসব-২০২৩ এর দ্বিতীয় দিনে মঞ্চস্থ হয়েছে দেশের সুপরিচিত নাট্য সংগঠন প্রাঙ্গণেমোরের আলোচিত নাটক ‘আওরঙ্গজেব’।
 

নাটকটি রচনা করেছেন মোহিত চট্টোপাধ্যায় এবং নির্দেশনা দিয়েছেন অনন্ত হিরা।

শনিবার সন্ধ্যা সোয়া ৭টায় রিকাবীবাজার কবি নজরুল অডিটোরিয়ামের মঞ্চে নাটকটি মঞ্চস্থ হয়।
 

নাটকটির সম্পর্কে সংশ্লিষ্টরা জানান, ভারতবর্ষে মুঘল রিয়াসতে ছিল তৈমুরলঙ্গ আর চেঙ্গিস খাঁর রক্ত। সেই তৈমুর বংশের প্রথা ছিল মসনদে প্রত্যেক শাহাজাদার সমান অধিকার। যার তলোয়ার যত দীর্ঘ, যত ধারালো, যত সফল ততই মসনদে তার অধিকার। এটাই চলেছে মুঘল রিয়াসতে যুগের পর যুগ। সম্রাট হুমায়ূন তার ভাই কামরান, আশকরী, হিন্দালের বিরুদ্ধে লড়াই করে তখ্ত দখল করেছিল। শাহেনশাহ আকবর পর্যন্ত মির্জা মুহম্মদ হাকিমের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধারণ করেছিল। বাদশা জাহাঙ্গীর নিজের আব্বাজানের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছিল। বাদশা শাহজাহান আপন ভাই খসরু শাহ্রিয়ারের রক্তপাত ঘটিয়ে মসনদ দখল করেছিল। কিন্তু সেই শাহজাহানই শেষ বয়সে নিজ পুত্র আওরঙ্গজেবের হাতে বন্দী জীবন কাটান। আওরঙ্গজেব একজন ধর্মপ্রাণ সুন্নি মুসলমান হয়েও নিজ পিতাকে বন্দী করে মসনদ দখল করেন এবং মসনদের অন্য দাবিদার আপন ভাই দারা, মুরাদ আর সুজাকে একে একে হত্যা করেন। মসনদ আর রাষ্ট্র ক্ষমতার লড়াই তো যুগে যুগে একই বৃত্তে ঘুরতে থাকে। মৃত্যুর পূর্বে নব্বই বছর বয়সে বৃদ্ধ আওরঙ্গজেবের উপলব্ধি হয়-পবিত্র কুরআন বুকে নিয়েও কেউ যদি হৃদয়হীন হয় তাহলে তার ক্ষমা নেই, কারণ আল্লাহ্ এবং পবিত্র কোরআন কাউকে জল্লাদ হতে বলে না। যুগে যুগে দেশে দেশে মসনদ বা রাষ্ট্র ক্ষমতা দখলের রাজনীতিতে ধর্মের ব্যবহার, ধর্মের নামে নির্মমতা, নিষ্ঠুরতা বা যে কোন অমানবিক অন্যায়ের বিরুদ্ধে এক তীব্র প্রতিবাদের নাম নাটক ‘আওরঙ্গজেব’।
 

এরআগের দিন শুক্রবার একই মঞ্চে মঞ্চস্থ হয় প্রাঙ্গণেমোরের আরেকটি আলোচিত নাটক ‘কনডেম সেল’।
 

এদিকে, আজ রবিবার (১৯ মার্চ) ভারতের আসাম রাজ্যের হাইলাকন্দির নাট্যদল বিবর্তন থিয়েটার ও আসামের শিলচরের নাট্যদল আজকের প্রজন্ম থিয়েটার পরপর নাটক মঞ্চায়িত করবে। প্রথমে সন্ধ্যা সোয়া ৭টা থেকে বিবর্তন থিয়েটার ‘অধরা মাধুরী’ ও পরে আজকের প্রজন্ম থিয়েটার ‘তিন পুতুলের গল্প’ মঞ্চায়িত করবে। উভয় নাটক রচনা করেছেন ইন্দ্রনীল দে ও নির্দেশনায় রয়েছেন সায়ন বিশ্বাস।
 

উল্লেখ্য, ভারতের বরাক নদী অববাহিকা, আসামের শিলচর ও সুরমা নদী অববাহিকা সিলেটের নাট্যদলের অংশগ্রহণে এই উৎসবের সহযোগিতায় রয়েছে ভারতীয় হাইকমিশন, ঢাকা ও সিলেট সিটি করপোরেশন।

 

সিলেটভিউ২৪ডটকম/প্রেবি/এসডি-২৬