দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করে নির্বাচন কমিশন। সংলাপে সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন সম্পন্ন করতে কী কী করা যায় সেই পরামর্শ চাওয়া হয়েছে দলগুলোর কাছ থেকে। সংলাপে অংশ নেওয়া দলগুলো সুষ্ঠুভাবে ইসিতে বিভিন্ন পরামর্শ দেওয়ার পাশাপাশি ইভিএমে ভোট নেওয়ার বিষয়েও ভিন্ন মত দেন।
বেশিরভাগ দলই ইভিএমে ভোট না করতে নিজেদের আপত্তির কথা নির্বাচন কমিশনকে জানায়। তবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগসহ তাদের জোটভুক্ত কয়েকটি দল ইভিএমে ভোটে আপত্তি নেই বলে জানায়। এমন পরিস্থিতিতেও দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন ইভিএমে ভোট করার চিন্তাভাবনা ছিল নির্বাচন কমিশনের। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ইভিএমে ভোট করার সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে নির্বাচন কমিশন। ইভিএম কেনা ও মেরামতের জন্য পর্যাপ্ত অর্থ না পাওয়া, রাজনৈতিক দলের মধ্যে ঐক্যমত না থাকায় আগামী নির্বাচনে ইভিএম বাদ দিয়ে স্বচ্ছ ব্যালটে ভোট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
সোমবার (৩ এপ্রিল) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনের সম্মেলন কক্ষে কমিশনের অনুষ্ঠিতব্য সভায় দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার না করার সিদ্ধান্ত নেয় ইসি।
১৭তম কমিশন সভা শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সচিব মো. জাহাংগীর আলম। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। সভায় অন্য চার কমিশনারসহ ইসি সচিব ও ঊর্ধ্বতন কর্মকতারা উপস্থিত ছিলেন।
ভোটে ইভিএম ব্যবহার না করার সিদ্ধান্তের কারণ হিসেবে ইসি সচিব বলেন, ইভিএম কেনা ও মেরামতের জন্য পর্যাপ্ত অর্থ না পাওয়ায়, রাজনৈতিক দলের মধ্যে ঐক্যমত না থাকায় কমিশন এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
জাহাংগীর আলম আরও জানান, আগামী দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে ৩০০ আসনে স্বচ্ছ ব্যালট পেপারে ভোট হবে।
প্রসঙ্গত, দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের জন্য নতুন করে ইভিএম কেনার জন্য সরকারের কাছে প্রথমে ৮ হাজার কোটি টাকার বেশি অর্থ চেয়ে পায়নি নির্বাচন কমিশন। পরে ইসির হাতে থাকা ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) প্রয়োজনীয় মেশিন মেরামতে নির্বাচন কমিশনের চাহিদা অনুযায়ী এক হাজার ২৫৯ কোটি ৯০ লাখ টাকা বরাদ্দ চাইলেও অসম্মতি জানায় অর্থ মন্ত্রণালয়।
সম্প্রতি নির্বাচন কমিশন সচিবকে চিঠি দিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয় তাদের অবস্থান জানায় অর্থ বিভাগ। ওই টাকা দিয়ে এক লাখ ১০ হাজার ইভিএম আগামী নির্বাচনের জন্য মেরামত করতে চেয়েছিল ইসি। তবে ইসির এমন চাহিদার বিপরীতে ৫০০ কোটি টাকা দিতে সম্মত হয় অর্থ মন্ত্রণালয়। যে কারণে পরিকল্পনা ছিল স্বল্প পরিসরে জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের। কিন্তু নির্বাচন কমিশনের ১৭তম কমিশন সভায় পুরো ভোটেই ইভিএম ব্যবহার না করার সিদ্ধান্ত নিল।
চলতি বছরের ডিসেম্বর কিংবা ২০২৪ সালের জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ নির্বাচনে তফসিল ঘোষণা করা হবে এ বছরের নভেম্বরে।
সিলেটভিউ২৪ডটকম/ডেস্ক/ইআ-১৫