প্রকাশিত: ১১ মে, ২০২৩ ১৫:৩৩ (বুধবার)
সিলেটে মা-ছেলে হত্যা, গৃহকর্মীসহ দুইজনের  মৃত্যুদণ্ড

সিলেটে মা-ছেলেকে খুনের দায়ে দুজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার (১১ মে) দুপুরে সিলেটের অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক নূরে আলম ভূঁইয়া এ রায় দেন।

এ রায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুজনকে এক লাখ টাকা করে অর্থদণ্ডও প্রদান করা হয়েছে। এছাড়াও রায়ে এক শিশুকে হত্যাচেষ্টার দায়ে আসামিদের ১০ বছরের কারাদণ্ডের রায়ও দিয়েছেন আদালত। 

দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- কুমিল্লার তিতাস এলাকার বাসিন্দা ইউসুফ খান ও তাঁর কথিত স্ত্রী তানিয়া বেগম। 

রায় ঘোষণার সময় আদালতে দুই আসামি উপস্থিত ছিলেন। 

আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালের ১ এপ্রিল সিলেট মহানগরের মিরাবাজার খারপাড়ার একটি বাসা থেকে রোকেয়া বেগম (৪০) নামের এক নারী ও তার ছেলে রবিউল ইসলামের (১৬) লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। সে সময় রোকেয়া বেগমের পাঁচ বছর বয়সী শিশুকন্যা রাইসা ইসলামকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।

এ ঘটনায় নিহতের ভাই মো. জাকির হোসেন বাদী হয়ে ওই দিন রাতে সিলেট কোতোয়ালি থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন। 

মামলার পর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) অভিযান চালিয়ে তানিয়া ও ইউসুফ খানকে গ্রেপ্তার করে। ঘটনার সময় রোকেয়ার বাসায় কাজ করতেন তানিয়া। পরে এক মনোমালিন্যের জেরে তানিয়া চলে গিয়েছিলেন। তিনি স্বামী ইউসুফ খানের সঙ্গে মহানগরের একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন। 

পূর্ববিরোধের জেরেই ইউসুফ ও তানিয়া মিলে চায়ের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে মা-ছেলেকে খাইয়ে কুপিয়ে খুন করে বিছানায় ফেলে যান। এ সময় রোকেয়ার পাঁচ বছর বয়সী শিশু রাইসা ইসলামকেও শ্বাস রোধ করে খুন করার চেষ্টা করা হয়েছিল। একপর্যায়ে ওই শিশু অচেতন হয়ে পড়লে মৃত ভেবে ফেলে রেখে চলে যান তানিয়া ও ইউসুফ।

পিবিআই সিলেটের পরিদর্শক দেওয়ান আবুল হোসেন ২০১৯ সালের ১৯ মে ইউসুফ ও তানিয়াকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। পরে আদালতের বিচারক ২০২০ সালে ৯ জানুয়ারি চার্জ গঠন করে বিচারকাজ শুরু হয়। 

গ্রেপ্তারের পর দু আসামি-ই আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। মামলায় ২৩ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৯ জন আদালতে সাক্ষ্য দেন।  দীর্ঘ বিচারপ্রক্রিয়ায় আদালতে হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি সন্দেহাতিতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় অবশেষে বৃহস্পতিবার আদালত এ রায় দেন।

এদিকে, এ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন কথা জানিয়েছেন আসামিপক্ষের আইনজীবী দিদার আহমেদ।

 

সিলেটভিউ২৪.কম/ মোজাম্মেল / মাহি / ডি.আর