প্রকাশিত: ০৯ জানুয়ারী, ২০২৪ ১৯:১৫ (সোমবার)
মৃত সুরঞ্জিত সেন আরও শক্তিশালী!

জীবিত সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের চেয়ে মৃত সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত আরও বেশি শক্তিশালী বলে মনে করছেন স্থানীয় ভোটাররা। অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সুনামগঞ্জ-২ (দিরাই-শাল্লা) আসনে মনোনয়ন বঞ্চিত ড. জয়া সেন গুপ্তাকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করেছেন সাধারণ ভোটাররা।


প্রয়াত সুরঞ্জিতের প্রতি ভালোবাসা,সম্মান ও দাপটের প্রতি আনুগত্য দেখাতেই এমনটা হয়েছে বলে দাবী দিরাই-শাল্লার সধারণ  ভোটারদের । নির্বাচনী এলাকার দুইটি উপজেলাতেই আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী চৌধুরী আব্দুল্লাহ্ আল মাহমুদ (আল-আমিন চৌধুরী) চেয়ে বেশি ভোট পেয়েছেন সুরঞ্জিত পত্নী জয়া সেন।


স্থানীয় ভোটাররা বলছেন- জয়া সেনের বিজয়ের নেপথ্যে সুরঞ্জিতের ব্যক্তি ইমেজ বড় ইস্যু ছিলো। নির্বাচনের প্রতিদ্বন্দ্বি দুই প্রার্থীর উপরই সন্তুষ্টি কম ছিল ভোটারদের। কিন্তু প্রয়াত সুরঞ্জিতের প্রতি ভালোবাসা থেকেই, তাঁর প্রতিনিধি চিন্তা করে জয়া সেনকে বেঁচে নিয়েছেন তাঁরা।


প্রয়াত পার্লামেন্টারিয়ান- রাজনীতিবিদ সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত নির্বাচনী এলাকা সুনামগঞ্জ-২ (দিরাই - শাল্লা) আসনে সাতবার নির্বাচন করায় আসনটি ভোটের রাজনীতিতে ‘সুরঞ্জিতের আসন’ হিসেবে পরিচিত। ২০১৭ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি তিনি মারা গেলে, তার স্ত্রী ড. জয়া সেনগুপ্তা ওই বছরের ৩০ মার্চ অনুষ্ঠিত উপনির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর ২০১৮ সালের নির্বাচনেও জয়া সেন দ্বিতীয়বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এবার দলের মনোনয়ন চেয়েও পাননি তিনি। মনোনয়ন পান আইজিপির ভাই শাল্লা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী আব্দুল্লাহ্ আল মাহমুদ (আল-আমিন চৌধুরী)।


দিরাইয়ের রাজানগরের সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান কৃষক নেতা ছত্তার মিয়া বললেন, প্রায় ৫০ বছর দিরাই-শাল্লার মানুষের সঙ্গে নিবিরভাবে জড়িত ছিলেন প্রয়াত নেতা সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত। তাঁকে কুঁড়ে ঘর প্রতীকেও ভোট দিয়েছে এলাকার মানুষ। প্রয়াত সুরঞ্জিতের রাজনৈতিক প্রতিভাকে মানুষ মূল্যায়ন করেছে। সুরঞ্জিত সেনের আমলে এলাকা সবসময় অসাম্প্রদায়িকতা বজায় ছিল।কোন গ্রুপিং রাজনীতি ছিলনা।সাধারণ ভোটাররা তাঁর স্ত্রীকে ভোট দিয়েছে।নির্বাচনে দুইপক্ষই ‘সম্প্রদায় ইস্যু’ প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে কাজে লাগানোর চেষ্টা করেছেন। কিন্তু দিরাই-শাল্লার অসাম্প্রদায়িক মানুষ এসব প্রচারণাকে খুব একটা আমলে নেন নি।


এ ব্যাপারে জয়া সেনগুপ্তা  বলেন, ‘এই এলাকার ভোটাররা সুরঞ্জিত সেনগুপ্তকে ভালোবাসেন। তার অনুসারী হিসেবে আমাকেও পছন্দ করেন। ভোটে তারা আবারও তার প্রমাণ দিয়েছেন। আমি সবার কাছে কৃতজ্ঞ।


প্রসঙ্গ, স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ভোটে লড়ে শাল্লা উপজেলায় নৌকার চেয়ে কাঁচি মার্কায় চার হাজার ১৩ এবং দিরাই উপজেলায় পাঁচ হাজার ৯০ ভোট বেশি পান জয়া সেন। নির্বাচনী এলাকার তিন কেন্দ্রের ভোট স্থগিত করা হয়। ওই তিন কেন্দ্রের ভোট ছিল নয় হাজার ৫৭। জয়া সেন ওই তিন কেন্দ্র ছাড়াই ভোট পান ৬৭ হাজার ৭৭৫ এবং আল আমিন চৌধুরী পান ৫৮ হাজার ৬৭২ ভোট। ওই তিন কেন্দ্রের সকল ভোট আল আমিন চৌধুরী পেলেও জয়া সেন’র ভোট বেশি হয় বিবেচনায় বেসরকারিভাবে তিনি বিজয়ী হন।


সিলেটভিউ২৪ডটকম / ডি.আর