শেখ হাসিনার পদত্যাগ এবং ক্ষমতা হস্তান্তরের পর থেকেই দেশের প্রায় সব ক্ষেত্রেই ব্যাপক পরিবর্তন শুরু হয়েছে। বাদ যাচ্ছে না দেশের ক্রিকেটাঙ্গনও। বোর্ডের সভাপতির পদে দীর্ঘদিন ধরেই আছেন নাজমুল হাসান পাপন। কিশোরগঞ্জ থেকে নির্বাচিত এই সংসদ সদস্য ক্রিকেটের সর্বোচ্চ পদে আছেন এক যুগের বেশি সময় ধরে। তবে পাপন ক্রিকেটের দৃশ্যপটে নেই গেল তিনদিন ধরে।
পরিচালকদের মধ্যেও অনেকেই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সরাসরিই যুক্ত ছিলেন। পরিচালকদের মধ্যে নাইমুর রহমান দুর্জয় ছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য। আ জ ম নাসির চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র। আরেক পরিচালক শফিউর রহমান নাদেল সদ্য বিলুপ্ত হওয়া সংসদেরই একজন সদস্য। যে কারণে সামনেই ক্রিকেট বোর্ডে আসতে যাচ্ছে বড় পরিবর্তন।
দেশের এমন পরিস্থিতিতে ক্রিকেট বোর্ড নিয়ে ঢাকা পোস্টের সঙ্গে কথা বলেছেন সাবেক অধিনায়ক খালেদ মাসুদ পাইলট। শুরুতে বলেন, 'আমার কাছে মনে হয় এখন তো বিসিবিতে ম্যানেজমেন্ট আছে সিইও দায়িত্ব পালন করছেন। এরকম মুহূর্ত সিইও চালান। এখন যেহেতু ক্রিকেট বোর্ড তো আর ভাঙতে পারবে না। এটার গঠনতন্ত্র হচ্ছে ইলেকশন করে নির্বাচিত হওয়ার। প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করবেন আর প্রত্যেকটা ডিপার্টমেন্টের যে ম্যানেজার আছে তারা সেগুলো পরিচালনা করবেন।'
এরপর আফসোসের সুরে পাইলট বললেন, 'এই বোর্ড কিন্তু ১৫ বছরের মত সুযোগ পেয়েছিল কিন্তু ক্রিকেটকে সেভাবে এগোতে পারে নাই৷ নতুন কেউ আসতে পারে না, আবার অনেক সিনিয়র ক্রিকেটার আছে যাদের আর সুযোগ দেওয়া হয় নাই তেমন। নাইম ইসলাম, শামসুর রহমান শুভ, রাকিবুল, জুনায়েদ সিদ্দিকী এরকম অনেক প্লেয়ার আছে যাদের কেউ সুযোগ দেওয়া হয়নি বাদ দেওয়া হয়েছে। শুধু জুনিয়রদের সুযোগ দেওয়া হয়েছে তারা যদি খেলার জন্য ক্যাপাবল না হয় তাহলে তাদের কেন নেওয়া হলো। তারা শুধু বলেছে যে ভবিষ্যতের দিকে চিন্তা করছে সে ভবিষ্যতটা কখন হবে৷ ক্রিকেট বোর্ডের সেই কালচারটাই নাই।'
পাইলটের দাবি ঘরোয়াতে কম্পিটিশন নাই, 'আমি এখন যতটুক জানি যে দুটা কোম্পানি সবগুলো টিম চালায়। কথার কথা বেক্সিমকোর অধীনে ৫৩ টা টিম রয়েছে। একটা মালিকের অধীনে যদি এতগুলো টিম থাকে তাহলে পুরো সিস্টেমটাই নষ্ট ছিল। আম্পায়ার নিয়ে অনেক বিতর্ক হয়েছে এ সময়। খেলার মধ্যে কোনো কম্পিটিশন ছিল না।'
পাইলটের চাওয়া বিসিবিতে পলিটিক্যাল লোক না থাকায় ভালো, 'এই বোর্ডটা পাপন ভাইয়ের ওপর নির্ভর ছিল পুরোটা। এখন ক্রিকেটটাকে উদ্ধার করে যারা ভালো মানুষ আছে যাদের ব্যাকগ্রাউন্ড ক্রিকেট আছে তাদেরকে দিতে হবে। এখন ছয়টা বিভাগের যে ৮ জন আছে তাদের ভিতর সাতজন খেলার ব্যাকগ্রাউন্ড নাই তারা পলিটিক্যাল। রংপুরের যিনি উনি কোনদিন ক্রিকেট খেলেন নাই। তো পলিটিক্যাল পোস্ট এখানে না আসাই ভালো।'
পাইলটের দাবি দুর্নীতি হয় ক্রিকেট বোর্ডে, যে কারণে মন চায় না বোর্ডে কাজ করতে। তবে ভালো পরিবেশ হলে বোর্ডে কাজ করতে চান পাইলট, 'আমি অপছন্দ করি দুর্নীতি। ক্রিকেট বোর্ড অনেক অনিয়ম আছে আমার মনে চায় না এখানে কাজ করি। আমাদের মত মানুষজন স্বাধীনভাবে কাজ করতে চাই, মাথা উঁচু করে কাজ করবো। অনেকে আমাদের বোর্ডে কাজ করছেন বিগত দিনগুলোতে, কিন্তু মাথা নিচু করে যা বলছে তাই শুনছি।'
'অবশ্যই ইচ্ছা আছে যদি সুন্দর একটা পরিবেশ সৃষ্টি হয়। যেমন আমাদের একটা গভমেন্ট হচ্ছে ভালো ভালো মানুষগুলো আসছে। ক্রিকেট বোর্ড যদি মানুষ আসে অবশ্যই কাজ করব কেন করব না। দেশের জন্য কাজ করতে বাংলাদেশের জন্য কাজ করতে পারবো। ক্রিকেট বোর্ডে গেলে তো অনেক বড় পরিসরে কাজ করা যায়।'-যোগ করেন সাবেক এই অধিনায়ক।
সিলেটভিউ২৪ডটকম/ডেস্ক/এসডি-৬৪১২