অর্থের হিসেবনিকেশ নিয়ে জীবনভর কেটেছে তাঁর সময়। কখনোবা ছিলেন কূটনীতির মারপ্যাঁচ নিয়ে ব্যস্ত। এর সাথে রাজনীতিতেও দিতে হতো বেশ কিছুটা সময়। যাপিত এই ব্যস্ত জীবনের বাইরে আবুল মাল আবদুল মুহিতের ছিল অন্য এক ভূবন। যেখানে তাঁর সময় কাটতো রঙ-বেরঙের প্রচ্ছদের হাজারো বইয়ের সাথে।

পারিবারিক সূত্র বলছে, সদ্য প্রয়াত এই অর্থমন্ত্রী নিজের সংগ্রহে থাকা ৫০ হাজার বই রেখে গেছেন।


কয়েক মাস আগে একটি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে আলাপচারিতায়ও তিনি নিজের সংগ্রহে এই অর্ধলক্ষ বই থাকার কথা জানিয়েছিলেন।

সেই আলাপচারিতায় মুহিত জানিয়েছিলেন, তাঁর সংগ্রহে থাকা সবচেয়ে পুরনো বইটি তিনি ক্রয় করেছিলেন ১৯৪৯ সালে! বইটি ছিল রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘সঞ্চয়িতা’।

নিজের বইপ্রিয়তার কথা বিভিন্ন সময়ে অকপটে জানিয়েছিলেন আবুল মাল আবদুল মুহিত। অবসর পেলেই তিনি হারিয়ে যেতেন বইয়ের মায়াবী রাজ্যে। রাজনীতি, অর্থনীতি, সমাজ, সংস্কৃতি নিয়ে লিখা বই তো পড়তেনই; সমকালীন গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধও তাঁকে টানতো।

ইংরেজি সাহিত্য নিয়ে পড়াশোনা করা মুহিত ঢাকার বনানীতে নিজের বাসায় গড়ে তুলেছিলেন একটি সমৃদ্ধ লাইব্রেরি। দুই হাজার ৬০০ স্কয়ার ফুটের সেই লাইব্রেরিতে অর্ধলক্ষ বই রেখে গেছেন তিনি।

পৃথিবীর বহু দেশে গেছেন মুহিত। সেসব দেশ থেকে পছন্দের লেখকদের বই তিনি সংগ্রহ করে আনতেন।

আবুল মাল আবদুল মুহিতকে নিয়ে স্মৃতিচারণমূলক এক লেখা সাহিত্যিক আনিসুল হক উল্লেখ করেছেন, বহু সময় ব্যয় করে গড়ে তোলা লাইব্রেরি নিয়ে বিশেষ পরিকল্পনা ছিল আবুল মাল আবদুল মুহিতের। এ লাইব্রেরিটি তিনি সর্বস্তরের মানুষের জন্য উন্মুক্ত করে দিতে চেয়েছিলেন, যাতে সবাই সেখানে গিয়ে বই পড়তে পারেন।

মুহিতের সেই ইচ্ছার প্রতিফলন এখন আর ঘটবে কিনা, তা আপাতত সময়ের গহ্বরে তোলা থাকছে।

 

সিলেটভিউ২৪ডটকম/আরআই-কে