পুকুর ভরা মাছ। ফলে ভরপুর গাছ। পুকুরপাড়ে রয়েছে সবজি বাগান। পাশে শোভা পাচ্ছে হরেক রকম ফুলের গাছ। পার্শবর্তী মাঠে আবার করেছেন ধানের আবাদ। হাঁস-মুরগি থেকে শুরু করে রয়েছে গবাদি পশুও। 


প্রিয় পাঠক, বলছিলাম হবিগঞ্জ জেলার আজমিরীগঞ্জ উপজেলার শিবপাশা গ্রামের খালেদ হোসেন চৌধুরী'র সমন্বিত খামারে সফলতার গল্প। 



উপজেলার শিবপাশা গ্রামের মাদানী পল্লীতে নিজের ৩২ একর জমিতে খালেদ হোসেন চৌধুরী গড়ে তুলেছেন 'এমএজি এগ্রো ফার্ম' নামে সমন্বিত বিশাল এক খামার। তার খামারে রয়েছে ছোটবড় ১৪ টি পুকুর। এসব পুকুরে রয়েছে হরেক রকমের মাছ। এগুলোর মধ্যে তেলাপিয়া, পাঙ্গাস, রুই, কাতল, মৃগেল, গ্রাসকার্প,  ব্ল্যাক কার্প, ব্রিগেড, স্বরপুটি, লাছোসহ আরও অনেক প্রজাতির মাছ। 


পুকুরে মাছ চাষের পাশাপাশি পুকুরপাড়ে গড়ে তুলেছেন মনোমুগ্ধকর ফলের বাগান। পুকুরের পাড়গুলোতে শোভা পাচ্ছে সারি সারি ফলের গাছ। রয়েছে ৬০ প্রজাতির প্রায় ৩ হাজার ফলগাছ। ফলের মধ্যে রয়েছে আম, কাঁঠাল, কলা, পেয়ারা, জাম, লিচু, আনারস, নারিকেল-সুপারিসহ আরও অসংখ্য ফলের সমাহার। 


খালেদ হোসেন চৌধুরী জানান, প্রথমে ২০১৪ সালে নিজের জমিতে শুরুতেই ১০ টি পুকুর খনন করে শুরু করেন তার খামার প্রকল্প। শুরুতে মাছ চাষ করেন পুকুরে। পরবর্তীতে পুকুরপাড়ে বিভিন্ন রকমের ফলের গাছ লাগান। বর্তমানে তার খামারে ১৪ টি পুকুর রয়েছে।
 

সরেজমিন খামার ঘুরে দেখা যায়, শ্রমিকদের সাথে নিজেও কাজ করছেন খালেদ হোসেন চৌধুরী। 


তিনি জানান, তার খামারে প্রায় ১০ জন লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে। তাছাড়া তিনি নিজেও প্রতিদিন ভোর থেকে বিকেল পর্যন্ত কাজ করেন। 


খালেদ হোসেন চৌধুরী জানান, সমন্বিত খামার কর্মসূচিতে সফল হতে চাইলে অর্থ বিনিয়োগের পাশাপাশি কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। কারন ধৈর্য এবং কঠোর পরিশ্রম ছাড়া কেউ সফল হতে পারে না। 


এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তার এই প্রকল্পে বর্তমানে স্থাবর সম্পত্তি বাদে প্রায় ২ কোটি টাকার বিনিয়োগ রয়েছে। 


খালেদ হোসেন চৌধুরী জানান, এতবড় খামার প্রকল্পে মাত্র ২৫ লাখ টাকা সরকারি একটি ব্যাংক থেকে লোন পেয়েছেন তিনি। 


তিনি জানান, আরও বৃহৎ পরিসরে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে নিজের আয়ের পাশাপাশি তার এখানে আরও অনেক লোকের কর্মসংস্থান করা যেত। 

 

ভবিষ্যত পরিকল্পণা সম্পর্কে খালেদ হোসেন চৌধুরী সিলেটভিউ’কে জানান, ভবিষ্যতে তার এখানে মনোরম এবং প্রাকৃতিক পরিবেশে দর্শনার্থীদের জন্য একটি রিসোর্ট গড়ে তুলতে চান। যাতে স্থানীয় এবং দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দর্শনার্থীরা তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে আনন্দ ভ্রমণে আসতে পারেন। 


সিলেটভিউ২৪ডটকম/জেইউ/এসডি-১৪