দেশে শুধুমাত্র ভোজ্যতেলের দামই অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পায় নি। গত কিছুদিনে তেল, চাল, আটা, ডিম, পেঁয়াজ, চিনি, মসুর ডাল, মাংস ও মাছের ঊর্ধ্বমুখী মূল্যের সঙ্গে মানিয়ে নিতে হিমশিম খাচ্ছে সীমিত আয় ও নিম্ন মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষজন।

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর (ডিএনসিআরপি) ভোজ্যতেলের দাম নিয়ন্ত্রণে গুরুত্ব দিলেও অন্যান্য পণ্য বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।


কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট হুমায়ুন কবির ভূঁইয়া বলেন, কোনো বৈধ কারণ ছাড়াই সপ্তাহে দুবার এগুলোর দাম বাড়ানো হচ্ছে।

তিনি ইউএনবিকে বলেন, ‘সরবরাহের ঘাটতি, মজুদদারি, মিল মালিকদের কারসাজি, বিক্রেতাদের উচ্চ মুনাফা ইত্যাদি নানা কারণে সয়াবিনের দাম সারাদেশে আলোচিত-সমালোচিত হচ্ছে। সরকারকে মাঠ পর্যায়ে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য কাজ করা উচিত।’

তিনি বলেন, বাস্তবতা হলো শুধু ভোজ্যতেল নয়, সব পণ্যের দাম বাড়ছে।

চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত পাইকারি বাজার বিশ্লেষণ করেছে বেসরকারি সংস্থা কনজ্যুমারস ফোরাম (সিএফ)।

সিএফের তথ্য অনুসারে, জানুয়ারির তুলনায় মার্চ মাসে সব জিনিসের পাইকারি দাম গড়ে সাত দশমিক ৩৩ শতাংশ বেড়েছে। কিছু ক্ষেত্রে এই সময়ের মধ্যে দাম দুই থেকে ২০ শতাংশ বেড়েছে। মূল্যবৃদ্ধি এখন পর্যন্ত ঊর্ধ্বমুখী।

সিএফের পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণ হলো বিশ্ববাজারে দামের ক্রমবর্ধমান প্রবণতা। তবে দেশীয়ভাবে উৎপাদিত পণ্যের দামও নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে।

সিএফ সাধারণ সম্পাদক এমদাদ হোসেন মালেক বলেন, পণ্যের বাজারে অস্থিতিশীলতার জন্য ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট দায়ী।

তিনি বলেন, ‘যখন পণ্যের চাহিদা ও যোগান মুক্তবাজার অর্থনীতিতে ছেড়ে দেয়া হয় তখন কিছু অসাধু মুনাফাখোর ব্যবসায়ী অযৌক্তিকভাবে নিত্যপণ্যের দাম বাড়িয়ে দেয়।

সিএফের মতে, জানুয়ারির তুলনায় মার্চ মাসে সরিষার তেল সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে। পণ্যটির দাম বেড়েছে গড়ে ২২ দশমিক ৬৩ শতাংশ। উন্নত মানের মসুর ডালের দাম ২০ দশমিক ১ শতাংশ বেড়েছে।

লবণের দাম ১৬ শতাংশ এবং প্যাকেটজাত গুঁড়া মশলার দাম ১৩ দশমিক ৩৭ শতাংশ বেড়েছে। চালের দাম বেড়েছে সাত দশমিক ১৬ শতাংশ।

আটা, ময়দা ও সুজির দাম বেড়েছে এক দশমিক ২৪ শতাংশ। ডালের দাম গড়ে চার দশমিক ২৫ শতাংশ বেড়েছে।

এ সময়ে মাঝারি মানের (বড় বীজ) মসুর ডালের দাম বেড়েছে এক দশমিক ১১ শতাংশ এবং মুগ ডালের দাম ৫ দশমিক ১৬ শতাংশ বেড়েছে এবং চিনির দাম বেড়েছে এক দশমিক ৭১ শতাংশ।

টুথপেস্টের দাম ৪ দশমিক ৫৫ শতাংশ বেড়েছে। নুডুলস ও স্যুপের দাম বেড়েছে ২ দশমিক ১৫ শতাংশ। গুঁড়ো দুধের দাম বেড়েছে ৭ দশমিক ৬৯ শতাংশ।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/আরআই-কে


সূত্র : ইউএনবি