ছবি : নাজাত আহমদ পুরকায়স্থ

সিলেটে ট্রেনের টিকেট যেন সোনার হরিণ। সাধারণ যাত্রীদের টিকেট পেতে পোহাতে হচ্ছে সীমাহীন ভোগান্তি। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই কাউন্টারে মেলে না টিকেট, মেলে কাউন্টারের সামনে ঘুর ঘুর করা কালোবাজারিদের কাছে।

ভুক্তভোগিদের অভিযোগ- সকালে কাউন্টার ও অনলাইনে টিকেট বিক্রি শুরু হওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই সার্ভার থেকে হাওয়া হয়ে যায় সব টিকেট। 


অভিযোগ রয়েছে, সিলেটে এক সময় ট্রেনের টিকেট কালোবাজারি হিসেবে আলমগীর নামের একজনের কথা সামনে আসতো। তবে তিনি এখন আবাসিক হোটেল ব্যবসায়ী। এখন সিলেটে ট্রেনের টিকেট কালোবাজারি হিসেবে আব্দুল্লাহ, কবির, জুফেন ও নোমান নামের এ চারজনের কথা শুনা যায়।

সাধারণ যাত্রীদের অভিযোগ- কাউন্টারে গিয়ে ট্রেনের টিকেট না মিললেও বাড়তি টাকা দিয়ে স্টেশনের বাইরে টিকেট পাওয়া যায়। দ্বিগুণ বা তার বেশি দাম দিলে কাউন্টারের সামনেই কালোবাজারিদের হাতে পাওয়া যায় সব শ্রেণির টিকেট। কিন্তু কারা এসব টিকিট কালোবাজারে বিক্রি করে তা জানেন না খোদ স্টেশনের কর্তাব্যক্তিরা।

এদিকে টিকেট কালোবাজারি রোধে দায়িত্বশীলদের নজরদারির অভাবে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে এই চক্র। প্রভাবশালী এই চক্রের নিয়ন্ত্রণে সিলেটে ট্রেনের সব টিকিট। ফলে বাধ্য হয়েই যাত্রীদের স্টেশনের বাইরে থেকে বাড়তি টাকা দিয়ে টিকেট কিনতে হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ট্রেনের টিকেট চক্রের সঙ্গে জড়িত রয়েছেন সিলেট রেলওয়ে স্টেশনের ভেতরের কবির এন্টারপ্রাইজের মালিক কবির। স্টেশনের সামনে কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল লাগোয়া যমুনা মার্কেট। স্টেশনে টিকেট পাওয়া না  গেলে এই মার্কেটে টিকেট পাওয়া যায় সেটা অনেকেই জানেন। এ মার্কেটে ট্রেনের টিকেট কালোবাজারি চক্রের মধ্যে ওয়ান মিডিয়ার আব্দুল্লাহ সবার শীর্ষে। ওই মার্কেটে বরইকান্দির আব্দুল্লাহর ফোন ফ্যাক্সের দোকান। জুফরান ও রুমানের অনলাইন টেলিকম নামীয় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে চলে টিকেট কালোবাজারী ব্যবসা। গেল ঈদুল ফিতরের আগে ৬টি টিকেট সহ জুফরান পুলিশের হাতে আটক হয়। এছাড়াও পত্রিকার হকার, সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক ও স্টেশনের বাইরের দুটি স্টেশনারি দোকানের মালিক রয়েছেন টিকেট কালোবাজারীদের মধ্যে।

স্টেশনে টিকিট কিনতে আসা ট্রেনের এক যাত্রী জানান, ‘কাউন্টারে গেলে টিকেট নেই বলে বিদায় করে দেওয়া হয়। সারাদিন স্টেশনে ঘুরেও টিকেটের ব্যবস্থা হয়নি। পরে অতিরিক্ত দাম দিয়ে কালোবাজারিদের কাছ থেকে টিকেট কিনতে হয়েছে। 

এ ব্যাপারে জানতে সিলেট রেলওয়ে স্টেশনের ম্যানেজারের মোবাইলে বার বার কল দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

রেলওয়ে থানার ওসি আলীম হোসেনের সাথে এ ব্যাপারে কথা বললে তিনি জানান, স্টেশনের ভেতরে যারা টিকেট কালোবাজারি করে তাদের অনেককেই আমরা আটক করি। তবে আমাদের উপস্থিতি টের পেলে কালোবাজারিরা গা ঢাকা দিয়ে পালিয়ে যায়। কালোবাজিদের ধরতে আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে। 

সিলেটভিউ২৪ডটকম / আর.এইচ.এস / ডি.আর