আইসক্রিমের লোভে পড়ে প্রথমবার ধর্ষণের শিকার হয় ১২ বছরের শিশু। দিনমজুর বাবা বিচারের জন্য থানায় যাওয়ার আগেই স্থানীয় সালিসকারীরা অভিযুক্ত ধর্ষককে কানধরে উঠবস করিয়ে ক্ষমা করে দেয়। এর ছয় মাস পার না হতেই ফের ওই শিশু ধর্ষণের শিকার হলে মামলা দায়ের করেন মা। কিন্তু এবার ওই মামলা প্রত্যাহারে হুমকির পাশপাশি ৫০ শতক জমি লিখে দেওয়ার প্রস্তাব দিয়ে আসছে শিশুর পিতাকে।

এ ঘটনা ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার চণ্ডীপাশা ইউনিয়নের পূর্ববাঁশহাটি গ্রামে।


আজ সোমবার বিকেলে শিশুটির বাড়িতে গিয়ে জানা যায়, শিশুটি স্থানীয় একটি বিদ্যানিকেতনে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ে। সে বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী। গত শুক্রবার সকালে তার মা ধান শুকানোর জন্য পাশের একটি খলায় যান। ওই সময় শিশুাটিও মায়ের সাথে ছিল। একসময় মা বাড়িতে গেলে এই সুযোগে পাশের পূর্ববাঁশহাটি গ্রামের মৃত আব্দুল হাকিমের ছেলে মাসুদ মিয়া (২২) সুযোগ বুঝে শিশুটিকে কাছে ডেকে নিয়ে খলার আড়ালে নিয়ে ধর্ষণ করে। ওই সময় শিশুটির মা বাড়ি থেকে খলায় এসে তার মেয়েকে না পেয়ে এদিক-সেদিক খোঁজ করেন। পরে দেখতে পান কিছুদূরে একটি জায়গায় আপত্তিজনক অবস্থায় রয়েছে মাসুদ। একপর্যায়ে মাসুদ দৌড়ে পালিয়ে যায়। এ ঘটনার পরদিন মেয়েটির মা থানায় গিয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে পুলিশ তদন্তসাপেক্ষে অভিযোগটি এফআইআরভুক্ত করলেও অভিযুক্ত ধর্ষক মাসুদকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। এর মধ্যে মামলা প্রত্যাহারে উঠেপড়ে লাগে অভিযুক্তের পরিবার। তারা দফায় দফায় শিশুটির পরিবারকে চাপ দিতে থাকে। এ অবস্থায় নিরাপত্তাহীনতায় ভুগে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন শিশুটির মা।

নির্যাতনের শিকার শিশুটির বাবা জানান, প্রায় ছয় মাস আগে এই মাসুদ তার প্রতিবন্ধী শিশুকে আইসক্রিমের লোভ দেখিয়ে একটি লেবুবাগানে নিয়ে ধর্ষণ করে। তখন শিশুটি খুব অসুস্থ হয়ে যায়। অনেক ওষুধ খাইয়ে তাকে সুস্থ করা হয়। পরে ঘটনাটি নিয়ে আইনের আশ্রয় নিতে চাইলে স্থানীয় সালিসকারীরা 'সম্মানী ছেলের ইজ্জত যাবে' এবং 'মেয়ের সম্মানহানি ঘটবে' এই অজুহাতে স্থানীয়ভাবে এক সালিসের আয়োজন করে অভিযুক্তকে সকলের সামনে কান ধরে উঠবস ছাড়াও মারধর করে ক্ষমা করে দেয়। সেই সঙ্গে সিদ্ধান্ত হয় অভিযুক্ত মাসুদকে গ্রাম ছাড়তে হবে। এ সিদ্ধান্তে প্রায় এক মাস লাপাত্তা থাকলেও ফের সে গ্রামে চলে আসে। এর মধ্যে গত শুক্রবার ফের ধর্ষণ করে তার শিশুকন্যাকে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও নান্দাইল থানার উপপরিদর্শক বাবলু রহমান খান জানান, শিশুটির ডাক্তারি পরীক্ষা ছাড়াও আদালতে ২২ ধারায় জবানবন্দির কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। অভিযুক্তকে অচিরেই গ্রেপ্তার করা হবে।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/ডেস্ক/জিএসি-০৯


সূত্র : কালের কণ্ঠ