প্রতীকী ছবি

রাজশাহী জেলা যুবদলের এক নেতাকে নিয়ে ফেসবুক পোস্টে কমেন্ট করার জেরে ওই দলের কর্মীদের তুলে নিয়ে পিটিয়েছে ছাত্রদল নেতাকর্মীরা। ওই কর্মীকে হাতুড়ি দিয়ে পেটানোর দৃশ্য ও চিৎকার ভিডিওকলে নেতাকে শোনানো হয়। 

জেলার বাগমারা উপজেলার ভবানীগঞ্জে এ ঘটনা ঘটে। এ বিষয়ে নির্যাতিত যুবদল কর্মী বাদী হয়ে রবিবার বাগমারা থানায় অভিযোগ করেছেন।


নির্যাতনের শিকার ওই যুবদল কর্মীর নাম নজরুল ইসলাম (৩০)। তিনি বাগমারা উপজেলা যুবদলের আগামীর সম্মেলনে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী। তার বাড়ি বাসুপাড়া ইউনিয়নের সাইপাড়া গ্রামে।

গত বুধবার বিশৃঙ্খলার মধ্য দিয়ে যুবদলের কমিটি গঠনের জন্য আগ্রহী ব্যক্তিদের মাঝে ফরম বিতরণ করা হয়। ওই বিশৃঙ্খলায় কারা কারা জড়িত, তা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি পোস্ট দেওয়া হয়। ওই পোস্টে মন্তব্য করেছিলেন নজরুল।

নির্যাতনের শিকার ও যুবদলের স্থানীয় কর্মীদের কাছ থেকে জানা যায়, শুক্রবার সন্ধ্যায় উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মহব্বত হোসেন কয়েকজন অনুসারী নিয়ে উপজেলা সদরের ভবানীগঞ্জে যান। তিনি ভবানীগঞ্জ কলেজ মোড়ের একটি চায়ের দোকানে বসে অনুসারীদের নিয়ে চা পান করেন। ফেরার পথে রাত সাড়ে আটটার দিকে ভবানীগঞ্জ নিউমার্কেটের নিচতলায় নজরুল ইসলামকে দেখতে পান। এ সময় মহব্বত হোসেন ও তার অনুসারীরা নজরুলকে ধরে ভবানীগঞ্জ-দেউলা সেতুর দক্ষিণ পাশে একটি গ্যারেজের সামনে নিয়ে যান। এরপর ফেসবুকে তিনি কেন মন্তব্য করেছিলেন, সে বিষয়ে জানতে চান। একপর্যায়ে তারা নজরুলকে হাতুড়ি দিয়ে পেটানো শুরু করেন।

মারধরের সময় বাসুপাড়া ইউনিয়ন ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ফরিদুল ইসলাম মোবাইল ফোনে ভিডিওকলে পিটানোর দৃশ্য জেলা যুবদলের সদস্য সচিব রেজাউল করিম টুটুলকে দেখান। এ সময় তিনি টুটুলের কাছে জানতে চান মারধরের ভিডিও ফেসবুক লাইভে দেবেন কি না।

হাতুড়ি দিয়ে এলোপাতাড়ি মারধরে ওই যুবদল কর্মী মাটিতে লুটিয়ে পড়লে তাকে ফেলে চলে যান ছাত্রদল নেতাকর্মীরা। পরে ওই যুবদল কর্মী দলের অন্যদের জানালে তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।

এ ঘটনায় নজরুল ইসলাম উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মহব্বত হোসেন, সদস্য সচিব উজ্জ্বল হোসেন, ভিডিও ধারণকারী ছাত্রদলের বাসুপাড়া ইউনিয়ন শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক ফরিদুল ইসলামসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন।

নির্যাতনের শিকার যুবদল কর্মী নজরুল ইসলাম বলেন, তিনি উপজেলা যুবদলের সম্মেলনে যুগ্ম সম্পাদক প্রার্থী। গত বুধবার ভবানীগঞ্জ গুদাম মোড়ে যুবদলের ফরম বিতরণকে কেন্দ্র্র করে সংঘটিত অপ্রীতিকর ঘটনা ও জেলার নেতার গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে তাকে তুলে নিয়ে গিয়ে পেটানো হয়েছে। ওই দিন হামলাকারীদের ছবি ফেসবুকে পোস্ট করা হলে তিনি মন্তব্য করেছিলেন। এ জন্য তাকে মারধর করা হয়।

নজরুল বলেন, ‘আমাকে হাতুড়ি দিয়ে পেটানোর দৃশ্য ও চিৎকারের শব্দ ভিডিওকলের মাধ্যমে জেলা যুবদলের সদস্য সচিব রেজাউল করিম টুটুলকে দেখানো হয়েছে। তিনি ছাত্রদল নেতাদের বারবার অনুরোধ করেও রক্ষা পাননি। তাদের পিটুনিতে আমি মাটিতে পড়ে গেলে তারা ফেলে রেখে চলে যায়।’

বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাক আহম্মেদ বলেন, যুবদলের এক কর্মীকে পেটানোর একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন। অভিযোগ তদন্তের জন্য একজন এসআইকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।


সিলেটভিউ২৪ডটকম/ডেস্ক/জিএসি-১৯


সূত্র : বিডি-প্রতিদিন