ভারতের পশ্চিমবঙ্গে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় গ্রেফতার হয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যয় ও তার ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত অর্পিতা মুখোপাধ্যয়। কলকাতা হাইকোর্ট তাদেরকে ২৪ ঘণ্টা পর পর স্বাস্থ্য পরীক্ষার নির্দেশ দিয়েছেন।

 


আদালতের নির্দেশে শুক্রবার (২৯ জুলাই) দুপুরে অর্পিতাকে জোকা ইএসআই হাসপাতালে নেওয়া হয়। তবে গাড়ি থেকে নেমে হাসপাতালে যাওয়ার পথে চরম নাটকীয় ঘটনা ঘটেছে।

 

হাসপাতাল প্রাঙ্গণে গাড়ি পৌঁছানোর পর অর্পিতাকে নামানোর চেষ্টা করেন ইডির কর্মকর্তারা। এসময় হাউমাউ করে কেঁদে ফেলেন তিনি। গাড়ি থেকে নেমে হাসপাতালে যেতে অস্বীকৃতি জানান। শেষমেষ তাকে জোর করে গাড়ি থেকে নামিয়ে হুইলচেয়ারে করে হাসপাতালে নেওয়া হয়।

হুইলচেয়ারেও হাত-পা ছুড়ে কাঁদতে থাকেন অর্পিতা। এসময় উচ্চস্বরে নিজেকে নির্দোষ এবং কিছুই জানেন না বলে দাবি করেন তিনি। আরও বেশকিছু কথা হট্টগোলের মধ্যে স্পষ্ট শোনা যায়নি। অর্পিতার এমন কাণ্ডে হাসপাতাল প্রাঙ্গণে ব্যাপক ভিড় জমে।

 

এদিকে, ইডি হেফাজতে পার্থ ও অর্পিতাকে মুখোমুখি বসিয়ে এবং নথিপত্র মিলিয়ে জেরা করেছেন তদন্ত কর্মকর্তারা। কলকাতার সিজিও কমপ্লেক্সে দিনভর চলেছে এ জেরা। তবে খাবার খাওয়া নিয়েও ইডি হেফাজতে টালবাহানা করেছেন অর্পিতা।

এরআগে টালিগঞ্জের ফ্ল্যাট থেকে গ্রেফতারের সময়ও অর্পিতা একদফা চিৎকার-চেঁচামেচি করেছিলেন। উচ্চস্বরে তিনি বলতে থাকেন, আমি নির্দোষ। এ সবই বিজেপির চাল। তবে ইডি হেফাজতে সুর নরম করছেন অর্পিতা। দিন যতই গড়াচ্ছে নমনীয় হচ্ছেন এ অভিনেত্রী।

 

অন্যদিকে জিজ্ঞাসাবাদে অর্পিতা জানিয়েছেন, তার ফ্ল্যাট থেকে যে ৫০ কোটিও বেশি রুপি উদ্ধার করা হয়েছে, তাতে তার কোনো অধিকার ছিল না। এ টাকা তার নয়। তার বাসায় অর্থ থাকলেও এর ধারেকাছেও যেতে দেওয়া হতো না।

 

অর্পিতার এমন দাবির সঙ্গে একমত ইডির নাম প্রকাশে এক কর্মকর্তাও। তিনি গণমাধ্যমকে নাম প্রকাশ না করে বলেছেন, মূলত পার্থ ও তার চক্রের কয়েকজনই অর্পিতার বাড়িটিকে মিনি ব্যাংক বানিয়েছিলেন।

 

গত ২২ জুলাই অর্পিতার টালিগঞ্জের ফ্ল্যাটে অভিযান চালিয়ে নগদ ২১ কোটি ৯০ লাখ রুপি উদ্ধার করা হয়। ওই ফ্ল্যাট থেকে দামি গয়না ও বিদেশি মুদ্রাও উদ্ধার করেন ইডি কর্মকর্তারা। এরপর গ্রেফতার করা হয় অর্পিতাকে।

 

পরে ২৭ জুলাই বেলঘরিয়ার রথতলার একটি আবাসনে অর্পিতার নামে থাকা দুটি ফ্ল্যাটে অভিযান চালায় ইডির দল। সেখানে উদ্ধার হয় ২৭ কোটি ৯০ লাখ রুপি। উদ্ধার করা হয় ছয় কেজি স্বর্ণ, যার বাজারমূল্য ৪ কোটি ৩০ লাখ টাকা।

 


সিলেটভিউ২৪ডটকম/ডেস্ক/এসডি-০৮


সূত্র : জাগোনিউজ