হেডফোনের উচ্চশব্দের কারণে বিশ্বে ১০০ কোটির বেশি কিশোর ও তরুণ-তরুণী শ্রবণশক্তি হারানোর ঝুঁকিতে রয়েছে। সম্প্রতি বিএমজে গ্লোবাল হেলথ জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণা বলছে, ১২ থেকে ৩৪ বছর বয়সীর মধ্যে ২৪ শতাংশই হেডফোন, ইয়ারফোন এবং ইয়ারবাডে নিরাপদ মাত্রার চেয়ে বেশি শব্দে গান শোনেন। এ জন্য তাৎক্ষণিক কানের সমস্যার পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি হচ্ছে তাদের। এ ক্ষতি রোধে এসব ডিভাইসে নিরাপদ শব্দমাত্রা ঠিক করতে নীতিমালা প্রণয়নের পরামর্শ দিয়েছেন গবেষকরা।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরিসংখ্যান বলছে, বিশ্বজুড়ে সব বয়সের ৪৩ কোটির বেশি মানুষ এরই মধ্যে কানের সমস্যায় ভুগছেন। এদের মধ্যে তরুণ-তরুণীরাই বেশি আক্রান্ত। কারণ, তারা স্মার্টফোন, হেডফোন ব্যবহার ছাড়াও বিভিন্ন উচ্চশব্দের মিউজিক ভেন্যুগুলোতে অংশ নেন। এসব অনুষ্ঠানের মাত্রাতিরিক্ত শব্দ নিয়ন্ত্রণে কোনো দেশেই সরকারি নীতিমালা নেই।



গবেষকদের দাবি, উচ্চমাত্রার শব্দ শ্রবণ ইন্দ্রিয়ের পাশাপাশি, মানসিক স্বাস্থ্যেরও ক্ষতি করে। এর প্রভাব পুরো জীবন ধরেই বয়ে বেড়াতে হয়। এমনিতেই মানুষের বয়স হলে শ্রবণ ক্ষমতা কমতে থাকে; কিন্তু কম বয়সেই উচ্চমাত্রার শব্দের সংস্পর্শে এলে ক্ষতির পরিমাণ বাড়ে।


ইউনিভার্সিটি অব সাউথ ক্যারোলিনার এক অডিওলজিস্ট লরেন ডিলার্ড পরিচালিত গবেষণাটি ২০০০ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত চালানো হয়। এতে ১২ থেকে ৩৪ বছর বয়সী ১৯ হাজারের বেশি অংশগ্রহণকারীকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। গবেষণায় দেখা গেছে, ২৪ শতাংশ তরুণ-তরুণী স্মার্টফোনের মতো ডিভাইসের সঙ্গে হেডফোন ব্যবহারের ফলে ঝুঁকিতে রয়েছে। আর ৪৮ শতাংশ অংশগ্রহণকারী কনসার্ট বা নাইটক্লাবের মতো বিনোদন স্থানগুলোতে অনিরাপদ শব্দের মাত্রার সংস্পর্শে এসেছে বলে দেখা গেছে। এই ফলাফল একত্রিত করে গবেষণায় অনুমান করা হয়েছে যে, বিশ্বে প্রায় ১৩০ কোটি তরুণ-তরুণী শ্রবণশক্তি হারানোর ঝুঁকিতে রয়েছে।


লরেন ডিলার্ড দ্য গার্ডিয়ানকে বলেন, ‘হেডফোন থেকে মানুষের শ্রবণশক্তি হ্রাসের ঝুঁকি কমানোর সর্বোত্তম উপায় হলো ভলিউম কমিয়ে দেওয়া এবং অল্প সময়ের জন্য শোনা।’ রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে হেডফোনে গান শোনার প্রবণতা কমিয়ে দেওয়ার পরামর্শও তিনি দিয়েছেন।

 

 

 

সিলেটভিউ২৪ডটকম / নাজাত-০৯


সূত্র : কালবেলা