বিশ্বকাপ শেষ উরুগুয়ের। গ্রুপপর্ব থেকে বাদ পড়ায় সাইডবেঞ্চে বসে হাউমাউ করে কাঁদতে দেখা যায় লুইস সুয়ারেজকে। উরুগুইয়ান তারকার কান্নায় আক্ষেপ মিটেছে ঘানার সমর্থকদের। সুয়ারেজ শূন্য হাতে বিদায় নেয়ায় বেজায় খুশি ঘানার অধিবাসীরা।

 


ঘানার বিপক্ষে জয়ের বিকল্প ছিল না উরুগুয়ের। একইসঙ্গে নজর রাখতে হতো পর্তুগাল-দক্ষিণ কোরিয়া ম্যাচে। কোরিয়ানরা হারলে কিংবা ড্র করলেই শেষ ষোলোর টিকিট পেতো উরুগুয়ে। শুক্রবার আল জানুব স্টেডিয়ামে ৩২ মিনিটেই ২ গোলে এগিয়ে যাওয়া দলটি সেই স্বপ্নই বুনছিল। তবে এডুকেশন সিটি স্টেডিয়ামে ১-১ ড্র হতে চলা ম্যাচের অন্তিম মুহূর্তে ‘সুপার সাব’ হং-হি চাংয়ের গোলে পর্তুগালকে হারিয়ে দেয় সাউথ কোরিয়া। তাতে পয়েন্ট সমান হলেও গোল ব্যবধানে টেবিলের দুইয়ে উঠে যায় এশিয়ান দলটি। তাতেই কান্নায় ভেঙে পড়েন উরুগুইয়ান তারকা লুইস সুয়ারেজ।

 

কোরিয়ার ম্যাচ শেষ হওয়ার পরও প্রায় দশ মিনিটের খেলা বাকি ছিল উরুগুয়ে। এই সময়ে একটি গোল পেলেও শেষ ষোলোতে যেতো উরুগুয়ে। তা হয়নি, ঘানাকে ২-০ গোলে হারিয়েও বাদ পড়লো লাতিন আমেরিকার দলটি। 
ম্যাচশেষে আল জানুব স্টেডিয়ামের বাইরে ঘানা সমর্থকদের সাক্ষাৎকার নিয়েছে ‘টকস্পোর্ট’। সেখানে একজন বলেন, ‘ঘানাকে ২-০ গোলে হারিয়েও সুয়ারেজ শূন্য হাতে বাড়ি ফিরছে। আমি খুবই আনন্দিত।’ একজন বলেন, ‘সুয়ারেজ আমাদের সঙ্গে যা করেছিল, তার বিচার করলেন ফুটবল ঈশ্বর।’ আরেকজন বলেন, ‘এটা বলতে দ্বিধা নেই যে, ঘানাইয়ানরা সুয়ারেজের বিদায়ে অনেক আনন্দিত।’
সুয়ারেজের সঙ্গে কিসের বিরোধ ঘানাইয়ানদের? ২০১০ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে হাত দিয়ে গোল ঠেকিয়ে ঘানাকে জয়বঞ্চিত করেছিলেন সুয়ারেজ। উরুগুয়ের কাছে ‘হিরো’ হলেও ঘানার কাছে তিনি ‘ভিলেন’ বনে যান। 

 

২০১০ সালের ২রা জুলাইয়ের ঘটনা। জোহানেসবার্গে বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে উরুগুয়ের প্রতিপক্ষ ঘানা। প্রথম আফ্রিকান দল হিসেবে বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল খেলার স্বপ্ন দেখছিল ঘানাইয়ানরা। ম্যাচের প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে সুলি মুনতারির গোলে এগিয়ে যায় ঘানা। ৫৫তম মিনিটে দিয়েগো ফোরলান ম্যাচে ফেরান উরুগুয়েকে। নির্ধারিত ৯০ মিনিটে ১-১ সমতা। অতিরিক্ত ত্রিশ মিনিটে বড় বিতর্কের জন্ম দেন লুইস সুয়ারেজ। ঘানার স্টিফেন আপিয়ার শট প্রথম দফায় গোললাইন থেকে ফেরান তিনি। তবে ফিরতি বলে ডমিনিক আদিয়ার হেড ঢুকে যাচ্ছিল উরুগুয়ের পোস্টে। শেষ মুহূর্তে গোল লাইনে হাত দিয়ে বল ঠেকান সুয়ারেজ। এতে ম্যাচ রেফারি তাকে লাল কার্ড দেখান এবং পেনাল্টি পায় ঘানা। তবে স্পটকিকে ব্যর্থ হন ঘানার আসোমোয়াহ জিয়ান। তার শট ঠেকিয়ে দেন উরুগুয়ে গোলরক্ষক ফার্নান্দো মুসলেরা। এরপর ম্যাচ পেনাল্টি শুটআউটে গড়ায়। টাইব্রেকাকে ঘানাকে ৪-২ ব্যবধানে হারিয়ে সেমির টিকিট কাটে উরুগুয়ে। সেই থেকে ঘানাইয়ানদের চক্ষুশূল লুইস সুয়ারেজ।

 

 

সিলেটভিউ২৪ডটকম/ নাজাত-০২


সূত্র : মানবজমিন