ডিগ্রি পাসের সার্টিফিকেট জাল করে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি প্রার্থী হওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন নতুন তালিকাভুক্ত কমিটির কয়েকজন সদস্য। ঘটনাটি সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায়।

জানা যায়, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ও কোম্পানীগঞ্জ ক্রিড়া সংস্থার কোষাধ্যক্ষ রাসেল আহমদ টুকেরবাজার মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি প্রার্থী হয়েছেন। তবে ডিগ্রি পাসের সার্টিফিকেট জাল করার অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে।  


সিলেটের এমসি কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী হয়ে স্নাতক উত্তীর্ণ হয়েছেন মর্মে যে ভুয়া সনদ তিনি দাখিল করেছেন সেটি ভুয়া উল্লেখ  করে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিতভাবে অভিযোগ দায়ের করেছেন নতুন কমিটির সদস্য ফাতেমা, আলেয়া বেগম, পারভীন আক্তার ও মনির হোসেন।

অভিযোগ দায়েরের পর সেটি তদন্ত করার জন্য উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে প্রধান করে তদন্ত কমিটি করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।

অভিযোগে তারা উল্লেখ করেন- ৩০ নভেম্বর টুকেরবাজার মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি হওয়ার জন্য ডিগ্রি পাশ সনদ দাখিল করেন রাসেল আহমদ। সনদটি সঠিক নয়- এমন সন্দেহ হওয়ায় তারা সিলেটের এমসি কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গ যোগাযোগ করেন। সেখানে যোগাযোগ করে  রাসেলের শিক্ষাসনদ ভুয়া বলে তারা জানতে পারেন। 

অভিযোগকারীরা জানান- গত ৪ ডিসেম্বর এমসি কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধানের স্বাক্ষরিত এক নোটিশে দেখা যায়, রাসেল আহমেদের প্রদর্শিত  শিক্ষাবর্ষ-২০০০-২০০১, রোল নং- ১৬২৯৮৮, রেজি নং-৭১৬২৯৮, পরীক্ষা-২০০৩ এর কাগজপত্রের সাথে এমসি কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে রক্ষিত রেজিস্ট্রার ও অন্যান্য সনদের মিল পাওয়া যায়নি। রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অন্যান্য সনদে ‘সামাজিক বিজ্ঞান’ শব্দ লিখা থাকলেও রাসেল আহমদের সনদে ‘ব্যাচেলর অব আর্টস’ লিখা রয়েছে। এর দ্বারা প্রতিয়মান হয়- রাসেলের সনদটি জাল। 

অভিযোগের বিষয়ে যুবলীগ নেতা রাসেল আহমদ সিলেটভিউ-কে বলেন- সব অভিযোগ মিথ্যা। আমি আওয়ামী রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত তাই বিপরীত আদর্শের এক নেতা ষড়যন্ত্র করছেন আমার বিরুদ্ধে। আমার সার্টিফিকেট আসল। আশা করি তদন্তে সত্যটা বেরিয়ে আসবে। 

এ বিষয়ে টুকেরবাজার মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা দিলোয়ারা বেগম সিলেটভিউ-কে বলেন- একটি কমিটির তালিকা করে গত ৩০ নভেম্বর সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোতে পাঠানো হয়েছে। তবে কমিটি এখনো অনুমোদন হয়নি। এরই মাঝে গত ৪ ডিসেম্বর এ কমিটির ৫ জন সদস্য সভাপতি প্রার্থী রাসেল আহমেদের বিরুদ্ধে সার্টিফিকেট জাল করার অভিযোগ তুলেছেন। এ বিষয়ে তারা ইউএনও এবং উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবরে লিখিত অভিযোগও দায়ের করেছেন। বিষয়টি তদন্ত করতে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির সিদ্ধান্তের উপরই তার সভাপতি হওয়া না হওয়া নির্ভর করে। 

এ প্রসঙ্গে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ও তদন্ত কমিটির প্রধান মো. জহিরুল হকের সঙ্গে মঙ্গলবার (৬ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাঁর মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়। 


সিলেটভিউ২৪ডটকম / ডালিম