মিয়ানমারের যুদ্ধবিমান উত্তর-পূর্ব ভারতের মিজোরাম আন্তর্জাতিক সীমান্তে অন্তত দুটি অধিক ক্ষমতাসম্পন্ন বোমা ফেলেছে বলে জানা গেছে। গত মঙ্গলবার(১০জানুয়ারি) দুপুরে মিয়ানমারের চিন প্রদেশে একটি সশস্ত্র বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীর সদর দপ্তর লক্ষ্য করে হামলা চালায় মিয়ানমারের বিমানবাহিনী। এ হামলার বিস্তারিত সরকারিভাবে জানানো হয়নি। তবে ভারতের একটি সংবাদভিত্তিক ওয়েবসাইট জানিয়েছে, এ হামলায় পাঁচজন নিহত হয়েছেন।


সরকারি সূত্র ও স্থানীয় বাসিন্দাদের উদ্ধৃত করে দ্য প্রিন্ট নামের ওই ওয়েবসাইট জানিয়েছে, এ ঘটনায় অন্তত ১২ জন আহত হয়েছেন, তাঁদের মধ্যে অন্তত ২ জন শিশু। মিয়ানমারের বিমানবাহিনী গণতন্ত্রকামী বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র সংগঠন চিন ন্যাশনাল আর্মির (সিএনএ) সদর দপ্তর ক্যাম্প ভিক্টোরিয়া লক্ষ্য করে এ হামলা চালানো হয়েছে বলে জানা যায়।


ব্রিটিশ সংবাদপত্র দ্য গার্ডিয়ানও খবরটির সত্যতা স্বীকার করেছে। তবে গার্ডিয়ান জানিয়েছে, বোমা ফেলা হয়েছে ভারতের অর্ধে মিজোরামের ফকাওয়ান নামক এক গ্রামে। গার্ডিয়ান বলছে, এই ঘটনায় কেউ আহত হননি।


মিজোরামের রাজধানী আইজলে রাজ্যের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা প্রথম আলোকে আজ বৃহস্পতিবার বলেন, বোমা হামলা সম্পর্কে অস্পষ্ট তথ্য রাজ্য সরকারের কাছে এসেছে। ওই কর্মকর্তা বলেন, যত দূর জানা গিয়েছে, এ হামলা হয়েছে মিজোরাম লাগোয়া মিয়ানমারের ভেতরে চিন প্রদেশে। টিয়াউ নামের একটি ছোট নদী রয়েছে সেখানে, যে নদীর শুরুটা হচ্ছে মিয়ানমারের অর্ধে এবং শেষ হচ্ছে মিজোরামের ভেতর। টিয়াউয়ের উত্তরে অর্থাৎ মিয়ানমারের ভেতরে সে দেশের বাহিনী এ বোমা হামলা চালিয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ বোমা হামলার বিষয় এখনো কোনো মন্তব্য করেনি।

দুটি বোমাই অত্যন্ত উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ, সীমান্তবর্তী গ্রাম ফকাওয়ান ও তার পার্শ্ববর্তী খবুং-এর অসংখ্য বাড়ি বোমার তীব্রতায় কেঁপে ওঠে বলে ওই দুই গ্রামের বাসিন্দারা গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন। এ হামলা যে বেশ বড় ধরনের, তা স্বীকার করে নিয়েছে চিন মানবাধিকার সংগঠন। সংগঠনটি আমেরিকায় অবস্থিত।


মিয়ানামারে গণতন্ত্রের দাবিতে যেসব বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন সক্রিয়, তার মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী সিএনএ। গণতন্ত্রকামী বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তিগুলোর সার্বিক একটি সংগঠন পিপলস ডিফেন্স ফোর্সের অধীন থেকে সিএনএসহ সব সশস্ত্র বাহিনী মিয়ানমারে কাজ করে।

২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে মিয়ানমারে সেনাবাহিনী অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে। এর পর থেকে সিএনএ ও পিপলস ডিফেন্স ফোর্সের অধীন বিভিন্ন সশস্ত্র বাহিনীর সঙ্গে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর লড়াই চলছে। তবে এত বড় ধরনের হামলা সাম্প্রতিক সময় পিপলস ডিফেন্স ফোর্সের ওপর সেনাবাহিনী চালায়নি।

এই ঘটনার জেরে চিন প্রদেশ থেকে সাধারণ মানুষ নদী পেরিয়ে খোলা সীমান্ত দিয়ে মিজোরামে ঢুকবে বলে স্থানীয় প্রশাসন মনে করছে। ভারতের অর্ধে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।

 

 

সিলেটভিউ২৪ডটকম/ নাজাত-০৫


সূত্র : প্রথম আলো