গত বছরের শেষ দিকে সৌদি আরবের ক্লাব আল নাসরে যোগ দেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। কিন্তু ইংল্যান্ডে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে থাকাকালীন নিষেধাজ্ঞার কারণে সৌদি ক্লাবটির হয়ে আনুষ্ঠানিক অভিষেকের জন্য মাসখানেক অপেক্ষা করতে হয় পর্তুগিজ তারকাকে। শেষ পর্যন্ত গত রবিবার আল নাসরের জার্সিতে অভিষেক হয়েছে তার। তবে সেই রেশ কাটতে না কাটতে ফের নিষেধাজ্ঞার শঙ্কায় রোনালদো।

 


দলবদলের চুক্তি ও অর্থ নিয়ে মিথ্যাচার করায় ১৫ পয়েন্ট জরিমানা করা হয়েছে জুভেন্টাসকে। ফলে ইতালিয়ান লিগ সিরি আ'তে পয়েন্ট টেবিলের তিন নম্বর থেকে এক লাফে ১১ নম্বরে নেমে যায় ওল্ড লেডিরা। স্বাভাবিকভাবেই আগামী মৌসুমের চ্যাম্পিয়ন্স লিগে জুভেন্টাসের টিকিট পাওয়া নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। পাশাপাশি অতীত ও বর্তমান মিলিয়ে ১১ জন পরিচালকের ওপর বিভিন্ন মেয়াদে নিষেধাজ্ঞাও আরোপ করেছেন আদালত।

তবে জুভেন্টাসের শাস্তির এখানেই শেষ নয়। ইতালিয়ান ক্লাবটিতে ওই সময় খেলা ২৩ জন খেলোয়াড় নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়তে পারেন। নিষেধাজ্ঞার ঝুঁকিতে থাকা খেলোয়াড়দের মধ্যে আছেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোও। ২০১৮ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত তিন মৌসুমে তুরিনের বুড়িদের জার্সিতে মাঠ মাতিয়েছেন সিআর সেভেন।

জুভেন্টাসের বিরুদ্ধে অভিযোগ, গত কয়েক বছরে খেলোয়াড় কেনা-বেচার ক্ষেত্রে সঠিক দাম গোপন করার পাশাপাশি খেলোয়াড়দের বেতনের হিসাবও ঠিকঠাক দেয়নি ক্লাবের বোর্ড। উচ্চ বেতনভুক্ত খেলোয়াড়দের বেতন কম দেখিয়েছে ইতালিয়ান ক্লাবটি। খেলোয়াড়েরাও তাতে সহায়তা করেছেন বলেই ধারণা করা হচ্ছে।

বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২১ সালে জুভেন্টাস ছাড়লেও ক্লাবটির কাছে এখনও বেতন বাবদ অর্থ পাওনা রয়েছে রোনালদোর। একই ঘটনা ঘটেছে সুইডিশ মিডফিল্ডার দেজান কুলুসেভস্কি এবং উরুগুইয়ান মিডফিল্ডার রদ্রিগো বেন্টাঙ্কুরের বেলায়ও। ফলে তিনজনই মুখোমুখি হতে পারেন এক মাসের বেশি সময়ের নিষেধাজ্ঞার।

ইতালিয়ান সাংবাদিক পাওলো জিলিয়ানি জানান, যদি খেলোয়াড়রা মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে কম বেতন নিয়ে থাকে, এক্ষেত্রে তাদের ৩০ দিনের বেশি সময়ের জন্য নিষিদ্ধ করা হতে পারে। এমনকি অভিযুক্তদের কেউ এখন জুভেন্টাসে না খেললেও শাস্তি এড়াতে পারবেন না। তদন্তের অংশ হিসেবে সব ফুটবলারকে যখন এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল, তখন তারা সবাই কম বেতন নেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছিল।


তিনি আরও জানান, ম্যাজিস্ট্রেটদের কাছে ডাচ সেন্টারব্যাক ম্যাথিয়াস ডি লিট এবং ইতালিয়ান রাইট ব্যাক মাত্তিয়া ডি সিগলিও হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটের একটি অনুলিপি সরবরাহ করেছিলেন। ওই চ্যাটে ইতালিয়ান সেন্টারব্যাক জর্জিও কিয়েল্লিনি বিষয়টি ফাঁস না করার জন্য সাংবাদিকদের কাছে অনুরোধ করে পুরো কেলেঙ্কারির ব্যাপারটি সবার কাছে ব্যাখ্যা করেছিলেন।

 

আর্থিক হিসাব-নিকাশকে কৃত্রিমভাবে সমৃদ্ধ করতে দলবদল নিয়ে মিথ্যাচার করার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে শাস্তি পেলেও এর বিরুদ্ধে আবেদন করতে পারবে জুভেন্টাস। রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার কথাও ইতালিয়ান ক্লাবটির পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে।

এর আগে, গত নভেম্বরে দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করেন ক্লাবের প্রেসিডেন্ট আন্দ্রে আগনেল্লি ও ভাইস প্রেসিডেন্ট পাভেল নেদভেদ। দুজনই যথাক্রমে ২৪ মাস ও ৮ মাসের নিষেধাজ্ঞা পেয়েছেন। গত বছরের এপ্রিলে জুভেন্টাসসহ একাধিক ক্লাবের বিরুদ্ধে শুরু হয় তদন্ত।

জুভেন্টাস অবশ্য শুরু থেকেই কোনো ধরনের দুর্নীতির সঙ্গে জড়ানোর কথা অস্বীকার করে আসছে। এক বিবৃতিতে ক্লাবের আইনজীবী বলেছেন, “আমরা এটিকে লাখো ভক্তের প্রতি হওয়া অবিচার বলে মনে করছি। আমরা আশা করছি, এটি শিগগিরই আদালতের মাধ্যমে ঠিক করে ফেলা হবে।”

 

 

সিলেটভিউ২৪ডটকম/ নাজাত-১১


সূত্র : ঢাকা ট্রিবিউন