মানুষের অতিরিক্ত শিকারের কারণে সতেরো শতকে পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হয় বিশালাকার ডোডো পাখি। অথচ সেই পাখিকেই কিনা আবারও বিচরণ করতে দেখা যাবে পৃথিবীর বুকে।
এমনই আশার কথা শুনিয়ে ডালাসভিত্তিক বিলিয়ন ডলারের স্টার্টআপ কোম্পানি ‘কলোসাল বায়োসায়েন্সেস’ দাবি করেছে, বিলুপ্ত হওয়া ডোডো পাখিকে পুনরুজ্জীবিত করার কাছাকাছি চলে এসেছে তারা।
এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে কোম্পানিটি জানিয়েছে, এরই মধ্যে তারা ডোডোর সম্পূর্ণ জিনোম উন্মুক্ত করেছে।
কেবল জিনোম সিকোয়েন্স বের করলেই একটি প্রাণীকে ফিরিয়ে আনা যায় না। এর জন্য জীবন্ত কোনো প্রাণীর ভ্রূণে ডোডো-নির্দিষ্ট জিন স্থাপন করার উপায় বের করতে হয়।
আর এই ধাপের জন্য এরই মধ্যে গবেষকরা কাজ শুরু করে দিয়েছেন। প্রকল্পের প্রধান জেনেসিস্ট (জিন বিশেষজ্ঞ) বেথ শাপিরো জানিয়েছেন, ডোডোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত নিকোবর পায়রা, রড্রিগ্রেস সলিটায়ারের জিনগত তুলনা চলছে।
শাপিরো জানিয়েছেন, তাদের চূড়ান্ত পরিকল্পনা হচ্ছে, ডোডো পাখিদের পুনরায় মরিশাসে ফিরিয়ে আনা, যেখানে তারা মানুষের হাতে নিশ্চিহ্ন হওয়ার আগে বসবাস করত।
যদিও এ পদ্ধতিতে আসলে সংকর রূপের নতুন এক প্রাণী জন্ম নেবে। যা হবে প্রকৃত ডোডোর খুব কাছাকাছি।
ইউরোপীয় আণবিক জীববিজ্ঞান গবেষণাগারের উপপরিচালক ইওয়ান বার্নি পুরো পরিকল্পনাকে খুবই চ্যালেঞ্জিং হিসেবে বর্ণনা করেছেন। যদিও তিনি এই প্রকল্পের সঙ্গে সরাসরি সংযুক্ত নন। এ ছাড়া বার্নির মতে, বন্য পরিবেশে ছেড়ে দেওয়ার লক্ষ্য নিয়ে একটি প্রজাতিকে তৈরি করার বিষয়ে নৈতিকতার প্রশ্ন জড়িত। বরঞ্চ বিলুপ্ত হওয়ার আগে আমাদের বাকি প্রজাতিগুলোকে রক্ষা করা উচিত।
যদিও কলোসাল বায়োসায়েন্সেসের মতে, পাখিটিকে ফিরিয়ে আনাই তাদের একমাত্র উদ্দেশ্য নয়। এর সঙ্গে সচেতনতা সৃষ্টির বিষয়টিও জড়িত।
শাপিরো বলেন, ‘আমরা স্পষ্টতই একটি বিলুপ্তির সংকটের মাঝখানে রয়েছি এবং আমাদের দায়িত্ব হলো (বিলুপ্ত হওয়া প্রাণীদের) গল্পগুলো সামনে নিয়ে আসা এবং মানুষদের মধ্যে এমন উত্তেজনা তৈরি করা, যা তাদের এই মুহূর্তে চলমান বিলুপ্তির সংকট সম্পর্কে চিন্তা করতে অনুপ্রাণিত করবে।’
‘ডোডো’ পাখিটিকে দীর্ঘদিন ধরেই বিজ্ঞানীরা ফিরিয়ে আনতে চাইছেন। তবে কলোসাল বায়োসেন্সের বিলুপ্ত প্রাণী ফিরিয়ে আনার চেষ্টায় ডোডো কেবল একাই নয়, তারা গত শতকে বিলুপ্ত হওয়া তাসমানিয়ান নেকড়ে ও বড় পশমযুক্ত হাতির মতো প্রাণী ম্যামথকেও ফিরিয়ে আনতে চাইছে।
সিলেটভিউ২৪ডটকম/ নাজাত-০৮
সূত্র : প্রতিদিনের বংলাদেশ