বিএনপির নেতৃত্বে থাকাদের শিষ্টাচার, সভ্যতা, মূল্যবোধ, নৈতিকতা ও সততার ঘাটতি আছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ।

 


তিনি বলেন, ‘তাদের (বিএনপির) নেতা তারেক রহমান। তার কোনো সভ্যতা, ভদ্রতা আছে? যার কারণে স্বাধীনতা পেয়েছি, পতাকা পেয়েছি, সেই জাতির পিতার নাম বলার সময় বলে মুজিবুর রহমান। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা সারা বিশ্বে উন্নয়নের মডেল হিসেবে পরিচিত। তার নাম বলার সময় তারেক বলেন হাসিনা। ব্যাপারটা এমন যেন তার সমবয়সী। অথচ আমরা বেগম খালেদা জিয়া বলে সম্বোধন করি। দুর্নীতির দায়ে তিনি কারাগারে, তবুও তাকে আমরা সম্মান করে কথা বলি।’

 

শনিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ শিশু একাডেমী মিলনায়তনে ‘বঙ্গবন্ধু শিশু-কিশোর মেলার জাতীয় সম্মেলন ২০২৩’-এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

 

বিএনপি জনগণের আস্থা আর্জনে ধুঁকছে মন্তব্য করে মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, ‘বিএনপি জনগনের আস্থা অর্জনের জন্য সংগ্রাম করছে। কিন্তু কোনোভাবেই আস্থা পাচ্ছে না। তাদের দলে যে নেতৃত্বে আছে, সেই নেতৃত্বে শিষ্টাচার, সভ্যতা, মূল্যবোধ, নৈতিকতা ও সততার ঘাটতি আছে। তিনি (তারেক রহমান) সমাজের কাছে আদর্শ মানুষ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হননি। যিনি নিজে আদর্শ মানুষ হিসেবে নিজেকে তৈরি করতে পারেননি, তিনি কখনই জনগণের নেতা হতে পারে না।’

 

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা অর্থনৈতিক দিক দিয়ে অনেক দূর এগিয়ে গেছি। ২০০৯ সালেও আমাদের মাথাপিছু আয় ছিল ৬০০ ডলারের নিচে, দরিদ্রসীমা ছিল ৬০ শতাংশ। আওয়ামী লীগ দেশের দায়িত্ব নিয়ে দরিদ্র বাংলাদেশকে বদলে দিয়েছে। দেশের মানুষের মাথাপিছু আয় আজ প্রায় তিন হাজার ডলার। দরিদ্রসীমা ২০ শতাংশের নিচে নেমে গেছে। আমাদের লক্ষ্য ২০৪১ সালে বাংলাদেশকে উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত করা, যে স্বপ্ন জাতির পিতা দেখেছিলেন। সেই স্বপ্নপূরণই এখন আমাদের লক্ষ্য।

 

তিনি বলেন, শেখ হাসিনার মেধা, বিচক্ষনতায় আমরা উন্নয়নশীল রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছি। উন্নয়নের এ ধারা টেকসই রাখতে হলে আমাদের বর্তমান সমাজে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ মানুষকে আদর্শিক, নীতি-নৈতিকতা ও মানবিক মূল্যবোধসম্পন্ন সৎ নাগরিক গড়ে তোলা। কারণ অসৎ জাতি হলে এ উন্নয়ন ধরে রাখতে পারবো না।’

 

হানিফ বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় থাকতে সন্ত্রাসের রাজনীতি করেছে, নির্বিচারে মানুষ হত্যা করেছে। আওয়ামী লীগের লাখ লাখ নেতাকর্মীকে নির্যাতন করেছে। তাদের মধ্যে কোনো মানবতা বোধ ছিল না।

শিশু-কিশোরদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, পাকস্তানি শাসকগোষ্ঠীর দুঃশাসনের প্রতিবাদ করায় বঙ্গবন্ধুকে বারবার কারাবরণ করতে হয়েছে। দেশের জন্য তার আত্মত্যাগ জানতে হবে। অসমাপ্ত আত্মজীবনী, কারাগারের রোজনামচা পড়তে হবে। ভবিষ্যৎ প্রজন্ম এ দেশ গড়বে। এদের মধ্যে নৈতিকাতা, শিষ্টাচার না থাকলে সমাজ ভালোভাবে এগোতে পারবে না।

সম্মেলনে প্রধান আলোচক ছিলেন বঙ্গবন্ধু শিশু-কিশোর মেলার প্রধান উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী। তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শিশু-কিশোরদের নিয়ে ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন। কিন্তু বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে আমাদের সৌভাগ্যের দ্বার বন্ধ করে দিয়েছিল।

 

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন- ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মঈনুদ্দিন হাসান চৌধুরী, বাহাদুর বেপারী, লিয়াকত সিকদার, বঙ্গবন্ধু শিশু-কিশোর মেলার প্রধান পৃষ্ঠপোষক মীর মোশাররেফ হোসেন, এবি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তারিক আফজাল, বঙ্গবন্ধু শিশু-কিশোর মেলার উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা মনোরঞ্জন ঘোষাল ও ইঞ্জিনিয়ার মো. আব্দুস সোবহান প্রমুখ।

 


সিলেটভিউ২৪ডটকম/ডেস্ক/এসডি-০৮


সূত্র : জাগোনিউজ