নানমুখী সমস্যায় জর্জরিত হয়ে পড়েছে হবিগঞ্জ বিসিক শিল্পনগরীটি। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দীর্ঘদিন যাবত পানি, নিরাপত্তা প্রাচীর ও ড্রেনেজ ব্যবস্থাসহ চিহ্নিত সমস্যাগুলো সমাধানের দাবি জানিয়ে আসছেন বিসিকে গড়ে উঠা শিল্প প্রতিষ্টানের মালিকরা।
কিন্তু কাজের কাজ হচ্ছে না কিছুই। ফলে বাধ্য হয়ে লোকসানের মুখে বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিয়েছেন মালিকগণ।
শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিকদের অভিযোগ, পানির সংকট, ড্রেনেজ ব্যবস্থা ও নিরাপত্তা প্রাচীর না থাকার ফলে বহিরাগতরা অবাধে যাতায়ত করছে। যার কারণে প্রায়ই ঘটছে চুরি ডাকাতির মতো ঘটনা। সবশেষ গত শনিবার দিবাগত রাতে ধুলিয়াখালস্থ ওমেগা ফিডস নামে একটি ফ্যাক্টরিতে ডাকাতির ঘটনা ঘটে।
ডাকাতদল নাইটগার্ডকে কুপিয়ে ক্ষত বিক্ষত করে প্রায় ২৫ লক্ষাধিক টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। যে কারণে ওই এলাকার ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
জানা যায়, কর্মসংস্থান বৃদ্ধি ও নতুন নতুন শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ার লক্ষে ১৯৯৮ সালে ১৫ একর জায়গা নিয়ে শহরতলীর ধুলিয়াখাল এলাকায় প্রতিষ্ঠিত হয় হবিগঞ্জ বিসিক শিল্পনগরী। বিসিকে ৭০টি ফ্লটের মধ্যে কারখানা গড়ে উঠেছে ৫৯টিতে। বাকি ১১টি ফ্লট বরাদ্দ হলেও খালি অবস্থায় পরে রয়েছে। আবার গড়ে ওঠা ৫৯টি কারখানার মধ্যে চালু রয়েছে মাত্র ৩৫টি।
শিল্প উদ্যোক্তাদের অভিযোগ, দুই যুগেও বিসিকে ব্যবসায়ি বান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি না হওয়া এবং নানা সমস্যার কারণে লোকসানে পরে ডজনেরও অধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান উৎপাদন বন্ধ করে দিয়েছে।
তারা বলছেন, বিসিকে শুরুতেই বিশাল আকারের পানির ট্যাংক নির্মাণ করা হলেও তা চালু হয়নি দীর্ঘদিনেও। ফলে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় পানি তোলতে গিয়ে অতিরিক্ত টাকা খরচ করতে হচ্ছে। এছাড়াও অপরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থা, পণ্য পরিবহনে সমস্যা ও বেহাল রাস্তা তো রয়েছেই।
বিসিক শিল্প নগরী হবিগঞ্জের উপদেষ্টা মো. দেওয়ান মিয়া জানান, বর্তমানে বিসিকে ব্যবসা পরিচালনা করার মতো কোন পরিবেশ নেই। ব্যবসায়ীরা তাদের সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে সমাধানের জন্য দীর্ঘদিন যাবত দাবী জানিয়ে আসলেও তাতে কর্ণপাত করছেন না বিসিক কর্তৃপক্ষ। পানি, ড্রেনেজ ও নিরাপত্তা প্রাচীর না থাকাসহ নানা কারণে ব্যবসায়ীরা এখান থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। এছড়াও সৃষ্টি হচ্ছে না নতুন নতুন উদ্যোক্তার।
ওমেগা ফিডস ফ্যাক্টরির ডাইরেক্টর (অপারেশন) মহিব উদ্দিন আহমেদ সোহেল জানান, ব্যবসা পরিচালনার ক্ষেত্রে নিরাপত্তাকে প্রদান্য দিতে হবে কর্তৃপক্ষের। অন্যথায় ব্যবসায়ীরা আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে হবিগঞ্জ বিসিক শিল্পনগরীর সহকারী ব্যবস্থাপক মাহামাদুল হাসান জানান, সমস্যাগুলোর বিষয়ে আমাকে কেউ অবগত করেননি। যদি লিখিত আকারে দেন তা হলে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক ইশরাত জাহান বলেন, আমি ইতোমধ্যে বিসিক শিল্পনগরি পরিদর্শন করেছি। কর্তৃপক্ষকে সাথে নিয়ে দ্রুত এসব সমস্যার সমাধান করা হবে।
সিলেটভিউ২৪ডটকম/জাকির/এসডি-০৬