সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে লড়েন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মুক্তাদির আহমদ মুক্তা। দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ায় তাকে দল থেকে অব্যাহতি দেয় আওয়ামী লীগ।

পরবর্তীতে সংগঠনবিরোধী কর্মকাণ্ডের বিষয়টি স্বীকার করে ক্ষমা চান মুক্তা। এ প্রেক্ষিতে তাকে ক্ষমা করা হয়েছে মর্মে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। চিঠিতে কড়া ভাষায় তিনি উল্লেখ করেছেন, ‘ভবিষ্যতে কোনো প্রকার সংগঠনবিরোধী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হলে তা ক্ষমার অযোগ্য বলে বিবেচিত হবে।’


গতকাল বৃহস্পতিবার এই চিঠি পাঠানো হয় মুক্তাকে।

চিঠিতে ওবায়দুল কাদের লিখেছেন, “জাতীয় নির্বাচন ও স্থানীয় সরকার পর্যায়ের বিভিন্ন নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতার অভিযোগে ইতোপূর্বে আপনাকে সংগঠন থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হয়।

আপনার বিরুদ্ধে আনীত সংগঠনবিরোধী কর্মকাণ্ডের অভিযোগ স্বীকার করে আপনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন এবং ভবিষ্যতে সংগঠনের গঠনতন্ত্র, নীতি ও আদর্শ পরিপন্থী কোনো কার্যকলাপে সম্পৃক্ত হবেন না মর্মে লিখিত অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন।

এমতাবস্থায়, গত ১৭ ডিসেম্বর ২০২২ তারিখে গণভবনে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটির সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সংগঠনের গঠনতন্ত্রের ১৭(৬) এবং ৪৭(২) ধারা মোতাবেক আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের নিকট সাধারণ ক্ষমা প্রার্থনা করে আপনার প্রেরিত লিখিত আবেদন পর্যালোচনা এবং ভবিষ্যতে সংগঠনের স্বার্থ পরিপন্থী কর্মকাণ্ড ও শৃঙ্খলা ভঙ্গ না করার শর্তে আপনার প্রতি ক্ষমা প্রদর্শন করা হলো।”

চিঠির অনুলিপি আওয়ামী লীগের সিলেট বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বরাবরেও পাঠানো হয়েছে।

এদিকে, দলের ক্ষমা পেয়ে মুক্তাদীর আহমদ মুক্তার পক্ষ থেকে একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি প্রেরণ করা হয়েছে। যেখানে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন তিনি।

মুক্তাদীর আহমদ মুক্তা বলেন,  ‘বিগত দুটি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলের মনোনয়ন বোর্ডে আমার নাম প্রেরণ করা হয় নি।  তাই দলের  মনোনয়ন চেয়ে আমাকে আবেদন করার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা হয়েছিল। এর প্রতিবাদে আমি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলাম। দলের দুর্দিনের কর্মী হিসেবে আমার আবেদন বিবেচনায় নিয়ে মাননীয় সভাপতি আমাকে ক্ষমা করে দিয়েছেন। এর জন্য বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা ও সাধারণ সম্পাদক জননেতা ওবায়দুল কাদেরের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।’

মুক্তা আরও বলেন, ‘এখন নতুন উদ্যোমে সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডে সংক্রিয় হওয়ার চেষ্টা করবো। আমি রাজনীতির জন্য নির্বাচন করি। নির্বাচনের জন্য রাজনীতি করি না। উপজেলার টেকসই সুষম উন্নয়নে আমি আমার অবস্থান থেকে অতীতের ন্যায় ভবিষ্যতেও সোচ্চার থাকবো ‘

প্রসঙ্গত, গত বছরের ২ নভেম্বর অনুষ্ঠিত জগন্নাথপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আনারস প্রতীকে চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী ছিলেন মুক্তাদীর আহমদ মুক্তা। এর আগে তিনি জগন্নাথপুর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেছেন। ওই সময়ে উপজেলার গ্রামীণ অবকাঠামোগত উন্নয়নে তাঁর ভূমিকা প্রশংসা কুড়ায়। ছাত্রলীগের রাজনীতির মধ্য দিয়ে মুক্তা আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে আসেন।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/আরআই-কে