পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) দুর্যোগকালে ব্যবহারের জন্য প্রত্যেক সংসদ সদস্যের বিপরীতে আপৎকালীন ৫ কোটি টাকা করে বার্ষিক বরাদ্দ দেয়; কিন্তু ভোলা-৩ (লালমোহন-তজুমদ্দিন) আসনে এ টাকা জনগণের কোনো কাজে লাগেনি। বরাদ্দের পুরোটাই স্থানীয় এমপি নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন ও তার পাঁচ সহযোগীর পকেটে গেছে। ভুয়া প্রকল্প তৈরি করে ২০১০ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত ১৩ বছরে ৬৫ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন তারা। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) প্রাথমিক যাচাইয়ে এ অভিযোগের সত্যতা মিলেছে।

ক্যাসিনো কেলেঙ্কারিসহ নানা ঘটনায় বিতর্কিত এমপি শাওনের বিরুদ্ধে এমন আরও ১৮টি অভিযোগের প্রাথমিক যাচাইয়ে সত্যতা পেয়েছে দুদক। এসব অভিযোগ অনুসন্ধানে ‘হাই-প্রোফাইল’ টিম গঠন করা হয়েছে। টিম লিডার হিসেবে নেতৃত্ব দিচ্ছেন দুদক মহাপরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেন। গত ২০ ফেব্রুয়ারি দায়িত্ব পান তিনি।


নির্বাচনী হলফনামা ও আয়কর রিটার্নে শাওন ১৩ কোটি ৯২ লাখ ২২ হাজার ২৬০ টাকার যে স্থাবর সম্পদ দেখিয়েছেন, সেখানে প্রকৃত বাজারমূল্য আড়াল করা হয়েছে। প্রকৃত মূল্য আড়াল করেই দলিল করা হয়েছে বলে নিশ্চিত হয়েছে দুদক।

দুদক কমিশনার মো. জহুরুল হক বলেন, ‘অনুসন্ধান টিম যদি মনে করে তাকে ডাকা দরকার, ডাকবে। যদি মনে করে তথ্য নেওয়া দরকার, নেবে। এসব বিষয়ে কমিশন কোনো হস্তক্ষেপ করবে না। অভিযোগের সত্যতা মিললে অনুসন্ধান টিম কমিশনে প্রতিবেদন পাঠাবে। পরে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

দুদকের অনুসন্ধান বিষয়ে জানতে চাইলে নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন বলেন, ‘রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ বিভিন্ন অফিস, সংস্থায় অভিযোগ পাঠিয়ে আমাকে বিব্রত করার চেষ্টা করছে। আমার সবকিছু স্বচ্ছ। দুর্নীতি, অনিয়ম, অবৈধ সম্পদ অর্জন কোনো কিছুর সঙ্গেই আমার সম্পর্ক নেই। নির্বাচনী এলাকায় সময় দিই। সেখানকার উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছি।’ দুদকের অনুসন্ধানে প্রকৃত সত্য বেরিয়ে আসবে এবং এতে নির্দোষ প্রমাণিত হবেন বলেও দাবি তার।

দ্বিতীয় দফা অনুসন্ধানে দুদক : ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে ক্যাসিনোবিরোধী ‘শুদ্ধি’ অভিযানের সময় শাওন ও তার স্ত্রী ফারজানা চৌধুরী এবং তাদের সহযোগীদের নাম আলোচিত হয়। শাওন ও তার স্ত্রীর ব্যাংক হিসাব জব্দ করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড-এনবিআর। দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞাও দেওয়া হয়। তবে এখন সবকিছু স্বাভাবিক। ভ্রমণ বা চিকিৎসা সফরে মাঝেমধ্যেই বিদেশ যাচ্ছেন তারা। জব্দ হওয়া ব্যংক হিসাব, ব্যবসা সবই চালু আছে।

২০১০ সালের এপ্রিলে অনুষ্ঠিত উপনির্বাচনে ভোলা-৩ আসন থেকে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন শাওন। এরপর ২০১৪ ও ২০১৮ সালে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মনোনয়নে এমপি নির্বাচিত হন তিনি। ক্যাসিনো কেলেঙ্কারির সময়েই শাওনের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ, অর্থ পাচারসহ নানা অভিযোগ নিয়ে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। ওই অনুসন্ধান এখনো শেষ হয়নি। এর মধ্যেই দ্বিতীয় দফা অনুসন্ধান শুরু হয়েছে।

শাওনকে নিয়ে দুদকের দ্বিতীয় দফায় অনুসন্ধান শুরু হয়েছে ২০ ফেব্রুয়ারি। এবারের অনুসন্ধানে পানি উন্নয়ন বোর্ডের আপৎকালীন বার্ষিক বরাদ্দ আত্মসাৎ, বার্ষিক উন্নয়ন খাতের প্রকল্পে দুর্নীতিসহ ১৯টি অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। দুদকের নথি পর্যালোচনায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের আপৎকালীন বার্ষিক বরাদ্দ আত্মসাতে সংসদ সদস্য শাওনের পাঁচ সহযোগীর নাম জানা যায়। তারা হলেন লালমোহনের মহিউদ্দিন ভূঁইয়া, তজুমদ্দিনের আবু তাহের, চাচড়ার রিয়াজ উদ্দিন, সোনাপুরের মো. ইকরাম ও তজুমদ্দিন সদরের সুমন পাটোয়ারী।

২০১০ সাল থেকে চলতি বছর পর্যন্ত লালমোহন-তজুমদ্দিনে পানি উন্নয়ন বোর্ড ও স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) সব ঠিকাদারি নিয়ন্ত্রণে শাওন ও তার সহযোগীদের ভূমিকা খতিয়ে দেখবে দুদক। এ ছাড়া বার্ষিক উন্নয়ন সহায়তা খাতের প্রকল্প চূড়ান্ত থেকে শুরু করে দরপত্র আহ্বানে শাওন ও তার দুই সহযোগী তজুমদ্দিনের সুমন পাটোয়ারী ও লালমোহনের জসিম মেম্বারের ভূমিকা কী ছিল, কত টাকার দুর্নীতি হয়েছে, কার পকেটে কত টাকা গেছে—তাও খতিয়ে দেখা হবে।

টিআর, কাবিখা, কাবিটা, জিআর বরাদ্দে শাওনের সহযোগী তজুমদ্দিনের ইকরাম ও রিয়াজ এবং লালমোহনের সোহেল পঞ্চায়েতের ভূমিকা কী, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছোটখাটো মেরামতের জন্য সরকারি বরাদ্দের কত টাকা লোপাট হয়েছে, লালমোহনের ৩৮টি ও তজুমদ্দিনের ১৩টি হাটবাজারের ইজারা নিয়ন্ত্রণে শাওন ও তার সহযোগীদের অবস্থান কী, বেসরকারি স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, সরকারি স্কুলের পিয়ন, বিয়ের কাজি নিয়োগে কোনো অনিয়ম হয়েছে কিনা, লালমোহন উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশে পুকুর ভরাট করে পজিশন বিক্রির সঙ্গে কারা জড়িত, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে টাকার বিনিময়ে চেয়ারম্যান ও কাউন্সিলর প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়ার নেপথ্যে কার কী ভূমিকা, লালমোহনে জেলা পরিষদের স্টল বরাদ্দ দেওয়ার নামে কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের ঘটনার সঙ্গে কারা জড়িত, লালমোহন বাজারে যাত্রীবহনকারী মোটরসাইকেল, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও অন্যান্য যানবাহন চলাচলের নিয়ন্ত্রণ কার হাতে, গুচ্ছগ্রাম ও আশ্রয়ণ প্রকল্পের বরাদ্দ নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগের সত্যতা আছে কিনা, মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের সঙ্গে জড়িত কারা, পানি উন্নয়ন বোর্ড ও এলজিইডির ঠিকাদারি কাজ পাইয়ে দেওয়ার নামে লালমোহন ও তজুমদ্দিনের ঠিকাদারের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার অভিযোগের ভিত্তি কী, নদী সিকস্তি পরিবারের সদস্যদের জন্য সরকারের বরাদ্দ করা নগদ টাকা কারা আত্মসাৎ করেছে, এতে শাওন ও তার সহযোগীদের ভূমিকা কী, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী অধিদপ্তরের পল্লি ও শহর অঞ্চলে (ওয়াসা ও সিটি করপোরেশন ব্যতীত) সবার জন্য সুপেয় পানি ও নিরাপদ স্যানিটারি ব্যবস্থা নিশ্চিত করার প্রকল্পগুলোতে কারা হস্তক্ষেপ করেছে, কত টাকার দুর্নীতি হয়েছে, ঢাকার মুক্তিযোদ্ধা ক্লাব ও মতিঝিল ক্লাবে জুয়া পরিচালনা এবং দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে টেন্ডারবাজি করে শাওন ও তার সহযোগীদের অবৈধ আয় হয়েছে কিনা, লালমোহন ও তজুমদ্দিনের মাদক ব্যবসায়ীদের আশ্রয়দাতা কারা, মাদক বিক্রির টাকা কার পকেটে যায়—এমন সব অভিযোগ খতিয়ে দেখবে দুদক।

সম্পদের পাহাড় গড়েছেন শাওন>>
সংসদ সদস্য হওয়ার আগে লালমোহন ও তজুমদ্দিনে কোনো জমি ছিল না নুরুন্নবী চৌধুরী শাওনের। বর্তমানে লালমোহন উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ৭২৯ শতাংশ জমি আছে তার। তজুমদ্দিনে আছে ২৮ শতাংশ জমি। ২০১০ সালের উপনির্বাচনের সময় দাখিল করা হলফনামায় বার্ষিক আয় প্রায় ১০ লাখ টাকা উল্লেখ করেন তিনি। দশম ও একাদশ নির্বাচনের হলফনামা পর্যালোচনা করে দেখা যায়, দ্রুত গতিতে বেড়েছে শাওনের স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ। নির্বাচনী হলফনামা ও আয়কর নথি অনুযায়ী শাওন এখন পুরোদস্তুর ব্যবসায়ী। রিয়েল অ্যাস্টেট, আইটি সেক্টর সবখানেই বিচরণ তাদের।

মালয়েশিয়ায় সেকেন্ড হোম, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও সিঙ্গাপুরে ব্যবসা আছে শাওনের—এমন অভিযোগ প্রাথমিক যাচাইয়ে সত্যতা মেলার পর এ নিয়েও অনুসন্ধান শুরু করেছে দুদক।

২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের হলফনামায় শাওন লেখেন, তার বার্ষিক আয় ২ কোটি ২১ লাখ টাকা। একাদশ সংসদ নির্বাচনের হলফনামায় বার্ষিক আয় দেখিয়েছেন ১৫ কোটি ৭২ লাখ টাকা।

২০১৪ সালে বাড়ি ও দোকান ভাড়া থেকে ৭ লাখ টাকা এবং ব্যবসা থেকে ২ কোটি টাকা আয় করেছেন বলে হলফনামায় উল্লেখ করেন শাওন। অন্যান্য খাত থেকে বার্ষিক আয় ছিল ৩০ লাখ টাকা। একাদশ সংসদ নির্বাচনের হলফনামায় লিখেছেন, ভাড়া পাচ্ছেন ১১ লাখ টাকা। ব্যবসা থেকে পেয়েছেন ১৫ কোটি ৫১ লাখ টাকা। অন্যান্য খাত থেকে পান ১০ লাখ টাকা।

শাওনের নামে ১২টি ব্যাংক হিসাব আছে। তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নওয়াল কনস্ট্রাকশন ও ডিজিটাল টেকের নামে আছে আরও ২০টি ব্যাংক হিসাব।

রাজধানীর বাড্ডায় আড়াই কাঠা জমি, মধুবাগের ৩৫৮/১ নয়াটোলায় ১ হাজার ২০০ বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাট, পূর্বাচলে সাড়ে ৭ কাঠার প্লট, সিদ্ধেশ্বরীতে দশমিক ০১৮৯ অযুতাংশ জমি, একই এলাকায় দশমিক ০৪২৫ অযুতাংশ জমি, বড় মগবাজারের ৫৩ নয়াটোলায় ১ হাজার পাঁচ বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাট ও ১২০ বর্গফুটের কার পার্কিংয়ের জায়গা, বনানীতে দশমিক ০৮৯৬ অযুতাংশ জমি, জোয়ার সাহারার খিলক্ষেতে ৭ দশমিক ৩৯ কাঠা জমি আছে শাওনের, গাজীপুরের জামনগর মৌজায় আছে আরও ৪ শতাংশ জমি।

নির্বাচনী এলাকা ভোলার লালমোহন উপজেলার মেহেরগঞ্জ মৌজায় ৬ শতাংশ জমি ও পুকুর, মুন্সি হাওলায় ১০ শতাংশ জমি ও ভিটাবাড়ি, মেহেরগঞ্জে ভিটাবাড়িসহ ৪২ শতাংশ জমি আছে তার। ফরাজগঞ্জে ৪৮ শতাংশ জমি, একই মৌজায় ৩৭ শতাংশের একটি জমি, পুকুর ও বাগান, ৪৫ শতাংশের আরেকটি জমি, একই মৌজায় আরও দশমিক ৭ একর জমি, মেহেরগঞ্জে ৪২ শতাংশ জমি, মুন্সি হাওলায় ২৯ শতাংশ জমি, বালুর চরে ৪১ শতাংশ জমি এবং একই এলাকায় আরও ৪৩ শতাংশ জমি, মুন্সি হাওলায় ৬ শতাংশ জমি, মেহেরগঞ্জে ১৬ শতাংশ জমি, পাশকার হাওলা মৌজায় আরও ৫৬ শতাংশ জমির মালিক শাওন।

আরেক নির্বাচনী এলাকা তজুমদ্দিনের শশীগঞ্জ মৌজায় ৮ শতাংশ জমি, একই মৌজায় আরও ২০ শতাংশ জমি আছে তার। দুদকের তথ্য বলছে, প্রকৃত বাজারমূল্য গোপন করে এসব জমির দলিল করেছেন শাওন। তিনটি গাড়ি ও দুটি আগ্নেয়াস্ত্র আছে তার।

দলীয় ফোরামে বারবার সমালোচিত>>
টানা তৃতীয় দফায় ক্ষমতায় থাকায় বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ১০০ সংসদ সদস্যকে নিয়ে বিপাকে আছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। দলীয় ও সরকারের একাধিক সংস্থার প্রতিবেদনে এ নিয়ে বিস্তারিত তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে। এ তালিকায় শাওনের নামও আছে।

রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি, ঢাকা মহানগর (দক্ষিণ) ছাত্রলীগের সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি, ঢাকা মহানগর (দক্ষিণ) যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এবং যুবলীগের সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য ছিলেন শাওন। ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ডের সঙ্গে শাওনের যোগাযোগ আছে বলে প্রচারণা আছে। নানা সময়ে বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের জন্য নিজ দলের মধ্যেও সমালোচিত হয়েছেন।

২০০১ সালের মধ্য ফেব্রুয়ারিতে আওয়ামী লীগ নেতা ডা. এইচবিএম ইকবালের নেতৃত্বে হরতালবিরোধী মিছিল বের হয়। মিছিলটি মালিবাগ মোড়ে বিএনপিরি মিছিলের মুখোমুখি হলে সংঘর্ষ বাধে। এ সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে বিএনপির চার কর্মী নিহত হয়। পরে এ নিয়ে মামলা হলে শাওনসহ ২৪ জনকে আসামি করা হয়। ঘটনার পর দিন প্রায় প্রতিটি দৈনিকে দুলাল ও খোরশেদ আলম নামে দুই যুবক মিছিলের ভেতর থেকে পিস্তল দিয়ে সিনেমা স্টাইলে গুলি করছে এমন ছবি প্রকাশ হয়। দুলাল ও খোরশেদ শাওনের ঘনিষ্ঠ ছিল। ২০০২ সালের ২৯ ডিসেম্বর শাওনসহ ২৪ জনকে অভিযুক্ত করে মামলার চার্জশিট দেয় পুলিশ। মামলার রায় হয় ২০১০ সালের ২৬ আগস্ট। রায়ে অবশ্য খালাস পান সংসদ সদস্য শাওন।

শাওনের পিস্তলের গুলিতে নিহত হন যুবলীগ কর্মী ইব্রাহিম>>
২০১২ সালের ১১ জানুয়ারি ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে যুবলীগ কর্মী ইব্রাহিম হত্যা মামলার চার্জশিট দেয় সিআইডি। মামলার আসামিরা হলেন শাওনের গাড়িচালক কামাল হোসেন ওরফে কালা, দেহরক্ষী দেলোয়ার হোসেন, শাওনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী গোলাম মোস্তফা শিমুল, মাজহারুর ইসলাম মিঠু, নুর হোসেন মুন্না ও সোহেল। ইব্রাহিম হত্যা মামলায় শাওনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তবে ইব্রাহিমের পরিবারের পক্ষ থেকে দায়ের করা হত্যা মামলায় শাওনকে আসামি করা হলেও চার্জশিটে আসামি করা হয়নি তাকে।

চার্জশিটের তথ্য অনুযায়ী, ২০১০ সালের ১৩ আগস্ট নিজের গাড়িতে দুপুর ১টায় সংসদ ভবনের এমপি হোস্টেলে যান শাওন। গাড়ি থেকে নামার সময় ভুলে পিস্তলটি গাড়িতে রেখে এমপি হোস্টেলে চলে যান। ওই সময় আসামি মাজহারুল ইসলাম মিঠুও শাওনের সঙ্গে একটি মাইক্রোবাস নিয়ে এমপি হোস্টেলে যান।

বিকেল ৫টার দিকে যুবলীগ কর্মী ইব্রাহিম শাওনের গাড়ির কাছে আসেন, গাড়ির ভেতরে প্রবেশ করে শাওনের পিস্তলটি বের করে নাড়াচাড়া করতে থাকেন। তখন গাড়িচালক কামাল হোসেন কালা পিস্তল রেখে ইব্রাহিমকে গাড়ি থেকে নামতে বলেন। ইব্রাহিম না নামায় তাদের মধ্যে কথাকাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে কালা পিস্তল ছিনিয়ে নিয়ে ইব্রাহিমের চোয়ালে গুলি করে। লুটিয়ে পড়েন ইব্রাহিম।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/আরআই-কে


সূত্র : কালবেলা