প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষার সংশোধিত ফলাফলে কেউ কেউ নতুন করে বৃত্তি পেয়েছে আবার কেউ হারিয়েছে। যারা নতুন করে পেয়েছে তারা আনন্দিত হলেও যারা বৃত্তি হারিয়েছে তাদের কষ্টটাই বেশি। বৃত্তি হারানো এক স্কুলের শিক্ষক বলছে, বাচ্চার মন ভেঙে গেছে।


বুধবার (১ মার্চ) রাত সাড়ে ১০টার পর প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষার সংশোধিত ফল প্রকাশ করা হয়। প্রকাশিত ফলাফলে বৃত্তির সংখ্যা ঠিক থাকলেও প্রতিষ্ঠানভেদে নতুন করে পাওয়া এবং হারানোর তথ্য পাওয়া গেছে।


রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার রূপসী আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ফয়সাল আহম্মেদ নামে এক ছাত্র সাধারণ কোটায় বৃত্তি লাভ করে। কিন্তু সংশোধিত ফলে তার বৃত্তি হারিয়ে গেছে। এ স্কুলের এক সহকারী শিক্ষক নাম প্রকাশ না করে বলেন, বাচ্চাটার কি দোষ ছিল। বাচ্চাটার মনটাই ভেঙে গেছে।

বদরগঞ্জের গোপালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রথমবার মাত্র একজন বৃত্তি পেলেও দ্বিতীয়বার পেয়েছে আরও তিনজন।

এর বাইরে ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সংশোধিত ফলাফলে পরিবর্তন হয়েছে বলে অনেকে জানিয়েছেন। তবে এ পরিবর্তনের সংখ্যা কত- অধিদপ্তর বা মন্ত্রণালয় থেকে তা কেউ কিছু জানায়নি।

বৃত্তির ফলাফল সংশোধনে কেউ বাদ পড়া এবং নতুন করে যোগ হওয়াকে শিক্ষাক্ষেত্রে বিশৃঙ্খলা মনে করছেন অভিভাবক ঐক্য ফোরামের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. জিয়াউল কবির দুলু। তিনি বলেন, এটা নিয়ে বিশৃঙ্খলা করা ঠিক হয়নি। নতুন করে ফল ঘোষণা হলে যারা বাদ পড়েছেন তাদের মন ভেঙে যাবে। তাদের আত্মবিশ্বাসে ঘাটতি তৈরি হবে। ভবিষ্যতে পড়ালেখায় তা নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

গত ২৮ ফেব্রুয়ারি মন্ত্রণালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে বৃত্তির ফল প্রকাশ করেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন। ফলাফলের কারিগরি ত্রুটি দেখা দেওয়ায় ঐদিন ফলাফল স্থগিত করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ২০২০ ও ২০২১ সালে কোভিড-১৯ পরস্থিতিরি কারণে প্রাথমকি শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা না হওয়ায় প্রাথমিক বৃত্তি প্রদান করা সম্ভব হয়নি। ২০২২ সালের ২৮ নভম্বের প্রাথমিক ও গণশক্ষিা মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠতি আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় ২০২২ সাল থেকে প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা গ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়। গত ৩০ ডিসেম্বর একযোগে সারাদেশে প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।

পঞ্চম শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে মেধাক্রম অনুসারে ২০ শতাংশ শিক্ষার্থী নিয়ে বৃত্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। বাংলা, প্রাথমিক গণিত, ইংরেজি ও প্রাথমিক বিজ্ঞান এ চারটি বিষয়ে বৃত্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। মোট নম্বর ছিল ১০০ এবং সময় ছিল ২ ঘণ্টা।

এবারের বৃত্তি পরীক্ষায় ৪ লাখ ৮৩ হাজার ৭৫৯ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে।

বৃত্তির সংখ্যা বাড়ানোর পাশাপাশি বৃত্তির অর্থের পরিমাণও ২০১৫ সাল থেকে বাড়ানো হয়েছে। আগে ট্যালেন্টপুল বৃত্তিপ্রাপ্তদের মাসে ২০০ টাকা করে দেওয়া হলেও ২০১৫ সাল থেকে ৩০০ টাকা এবং সাধারণ গ্রেডে বৃত্তিপ্রাপ্তদের মাসে ১৫০ টাকার পরিবর্তে ২২৫ টাকা করে দেওয়া হচ্ছে। তাছাড়া উভয় ধরনের বৃত্তিপ্রাপ্তদের প্রতি বছর ২২৫ টাকা করে এককালীন দেওয়া হচ্ছে।

অভিভাবকেরা বলছেন, শুধু বৃত্তির টাকা প্রাপ্তির বিষয়টি মুখ্য নয়, শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নের বিষয়টি প্রধান।
 


সিলেটভিউ২৪ডটকম/ডেস্ক/পল্লব-১১