ফাইল ছবি
মার্চের ৯ তারিখ ‘আন্তর্জাতিক নারী দিবস’। দিবসটি প্রতিবছরই আসে-যায়, কিন্তু সিলেটে নারী শ্রমিকরা মুক্তি পান না শ্রমবাজারের বৈষম্য থেকে। আজও তার পেতে শুরু করেননি কাজের ন্যায্য মজুরি।
সিলেট মহানগরের আখালিয়া এলাকার রোজিনা বলেন, ‘করোনায় কাজ বন্ধ থাকায় মাঝে মাঝে এক বেলা খেয়েছি। মেম্বার-চেয়ারম্যানরা কিছুই দেননি। তাই অভাবের সংসারে একটু ভালো থাকতে এখন মাঠে কাজ করি।'
রোজিনার কথা শেষ না হতেই পাশে বসে থাকা মাটিকাটা শ্রমিক নুরবানু বিবি বলেন, ‘আমাদের প্রত্যেক দিন কাজ করতে হয়। কাজ না করলে আমরা খাব কী? নারী দিবস কী আমরা জানি না। কেউ আমাদের কিছু জানায়নি। আর দিবস দিয়ে কী হবে! যদি সারা দিন কাজ করে ন্যায্য মজুরিই না পাই!'
মূলত প্রতিদিন মজুরি বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন সিলেট জেলার নারী শ্রমিকরা। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা না থাকায় জীবিকার তাগিদে বাধ্য হয়েই এসব নারীরা হাজিরাভিত্তিক মজুরিতে কাজ করেন। তবে শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত অসহায় এসব নারীর ন্যূনতম ধারণা নেই নারী দিবস কিংবা নিজেদের অধিকার সম্পর্কে। অথচ সংসারে সচ্ছলতা ফেরাতে এসব নারীরা প্রতিদিন রাজমিস্ত্রি, মাটিকাটা, গ্রামীণ রাস্তা নির্মাণ ও সংস্কার, মিল- চাতাল, কৃষিকাজসহ নানা কাজ করেন।
এ বিষয়ে আক্ষেপ নিয়ে সিলেট সদর উপজেলার ছালিয়া গ্রামের বাসিন্দা রফনা বেগম বলেন, ‘সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ৯ ঘণ্টা কাজ করি। আমরা হাজিরা পাই সর্বোচ্চ ৩০০ টাকা। একই কাজ করে পুরুষ শ্রমিকরা হাজিরা পান ৫০০ টাকা।
সচেতন মহলের নাগরিকরা বলছেন, দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে সর্বনিম্ন পর্যায় থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ স্থান পর্যন্ত নারীদের পদচারণা রয়েছে। কিন্তু স্বাধীনতার ৫০ বছরেও নারী শ্রমিকরা বঞ্চিত হচ্ছেন ন্যায্য মজুরি থেকে। পুরুষদের পাশাপাশি সমানতালে কাজ করেও কম বেতন ও মজুরি বৈষম্যের কারণে এখানকার নারীরা সাফল্যের মুখ দেখতে পাচ্ছেন না। শ্রম আইন মানার কোনো বালাই নেই ।'
সিলেটভিউ২৪ডটকম/মাহি /ডি.আর/পল্লব-১৮