দশ লাখ টাকা চাঁদা না দেওয়ায় সিলেটে '৬৪ জেলার ছোট নদী খাল এবং জলাশয় পুনখনন (প্রথম পর্যায়ে) খাল খনন' আটকে আছে। সিলেট সদর উপজেলার জৈনকার হাওরে ৪ কিলোমিটারের মধ্যে তিন কিলোমিটার খনন করা হলেও বাকি কাজ করতে পারছেন না ঠিকাদার। খাল খনন কার্যক্রমে বাধা দান ও চাঁদাবাজির অভিযোগে মামলাকরেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের কার্য সহকারী মো. মনোয়ার হোসেন বাদী হয়ে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের জালালাবাদ থানায় এ মামলা দায়ের করেন। মামলা স্থানীয় ১২ জনের নাম উল্লেখসহ আরো ৪-৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলার আসামিরা হলেন, সিলেট সদর উপজেলার শিবেরবাজারের উমাইরগাঁও গ্রামের গোলাম কিবরিয়া, জাহান উদ্দিন, আজির উদ্দিন, আফতাব উদ্দিন, ছইদুর রহমান, হেলাল আহমদ, মনির উদ্দিন, শফিক মিয়া, দিলওয়ার হোসেন, আব্দুল মান্নান, হেলাল উদ্দিন ও বদর উদ্দিন।
খাল খননে বাধা দান ও চাঁদাবাজির মামলা হলেও কোন গ্রেফতার না থাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলী ঠিকাদার নিরাপত্তাহীনতার কারণে কাজ করতে পারছেন না। ফলে বর্ষা মৌসুমের আগে ৪ কিলোমিটার খাল খননের কর্মসূচি বাস্তবায়িত না হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
মামলা এজাহারে উল্লেখ করা হয়, সিলেট সদর উপজেলার জালালাবাদ থানার জৈনকারকান্দি হতে ভাদেশ্বর নদী পর্যন্ত জৈনকার খাল খনন কাজ বাস্তবায়ন করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।৪ কিলোমিটার খালের মধ্যে ইতোমধ্যে ৩ কিলোমিটার খনন সম্পন্ন হয়েছে। চলমান কাজ পরিদর্শনেগত ৮ ফেব্রুয়ারি বিকেলে সরেজমিনে পরিদর্শনে যান পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা।
এ সময়ে স্থানীয় একদল লোক লাঠিসোটা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে কাজে বাধা দেয়। খননকাজে ব্যবহৃত এক্সাভেটর ভাংচুর ও ড্রাইভারকে মারধোর করে। এ সময়তাদের বাধা দিলে মামলার বাদীর দিকেতেড়ে যায় হামলাকারীরা। বাধ্য হয়ে তাৎক্ষনিক খাল খনন কাজ বন্ধ রাখা হয়।
হামলাকারীরা যাওয়ার সময় কাজ পুনরায় শুরু করলে এক্সাভেটর পুড়িয়ে দেওয়া ও মারধর করার হুমকি দেয়।এরপর থেকে খাল খনন কর্মসূচি বন্ধ রয়েছে। ফলে অনিশ্চয়তায় পড়েছে প্রকল্পটি। বর্ষা মৌসুমের আগে খনন কাজ শেষ না হলে আশপাশের কয়েক গ্রাম পানিতে প্লাবিত হতে পারে।
এদিকে খাল খনন কর্মসূচি বন্ধ করে দেয়ার দুদিন পর ঠিকাদারের প্রতিনিধি কামরুল হাসান চৌধুরীর কাছে খাল খনন চালিয়ে যেতে হলে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে আসামিরা। অন্যথায় এক্সাভেটর ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করবে বলে হুমকি দিয়ে যায়।
এজাহারে বাদী আরো উল্লেখ করেন, বিবাদীরা সরকারী খাল খননের কাজ বন্ধ করে দেওয়ায় কাজটি সঠিক সময়ে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হচ্ছে না। বিবাদীদের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে ও হুমকিতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা ও ঠিকাদারের শ্রমিকরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
খাল খনন কাজে বাধা দান চাঁদা দাবির ঘটনায় সিলেট জেলা পানি সম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা কমিটিরসভায় উদ্বেগ প্রকাশের পাশাপাশি সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত হলে, সে অনুযায়ী ৮ মার্চ মামলা করা হয়েছেবলে বাদী মো. মনোয়ার হোসেন জানিয়েছেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জালালাবাদ থানার এসআই মোহাম্মদ মাহবুব আলম মন্ডল মামলার সত্যতা নিশ্চিত করে আসামি গ্রেফতার নেই বলে জানিয়েছেন।
সিলেটভিউ২৪ডটকম/নাজাত