নানান কর্মকান্ডে বিতর্কিত হওয়া ও ভূয়া আইনজীবি উপাধী পাওয়ার আলোচিত-সমালোচিত প্রভাষক শংকু রাণী সরকার ইন্স্যুতে এবং চলমান অচলাবস্থা নিরসনের লক্ষ্যে সিলেটের ‘বিশ্বনাথ সরকারি কলেজ’র সর্বশেষ চলমান পরিস্থিতি জনসম্মুখে তুলে ধরতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মানিক মিয়া।
রবিবার (১২ মার্চ) দুপুরে বিশ্বনাথ সরকারি কলেজের শিক্ষক মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মানিক মিয়া স্থানীয় সাংবাদিকদের জানান, বিশ্বনাথ সরকারি কলেজের ‘ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা’ বিষয়ের প্রভাষক শংকু রাণী সরকারের কারণে কলেজে সৃষ্ট অচলাবস্থার প্রেক্ষিতে বিশ্বনাথবাসীর উদ্যোগে ও আমার আমন্ত্রণে শনিবার (১১ মার্চ) সকালে শিক্ষক মিলনায়তনে এক বিশেষ সভা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত বিশেষ সভায় উপস্থিত সকলেই প্রভাষক শংকু রাণী সরকারের অতীত ইতিহাস ও বর্তমান কর্মকান্ড নিয়ে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করার পাশাপাশি দ্রুত তার (শংকু) অপসারণ দাবি করেন।
অধ্যক্ষ সাংবাদিকদের জানান, বিশেষ সভাতে সভাপতিত্ব করেন তিনি (মানিক)।
সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও স্থানীয় সাবেক সংসদ সদস্য শফিকুর রহমান চৌধুরী।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- বিশ্বনাথ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের উপদেস্টা মন্ডলীর সদস্য এস এম নুনু মিয়া, বিশ্বনাথ থানার অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) গাজী আতাউর রহমান, বিশ্বনাথ সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ সিরাজুল হক, সাবেকতাপসী চক্রবর্তী, এনামুল হক, বিশ্বনাথ উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শাহ আসাদুজ্জামান আসাদ, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল আজিজ সুমন’সহ কলেজের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকবৃন্দ এবং উপজেলার বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার ব্যক্তিবর্গ ও কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিগণ।
অধ্যক্ষ মানিক মিয়া আরো জানান, শংকু রাণী সরকারের অতীত ইতিহাস ও বর্তমান কর্মকান্ড নিয়ে কলেজ শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও এলাকাবাসির মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করার ধারণা স্পষ্ট হয় বক্তারাদের বক্তব্যে। সভায় বক্তারা বলেন, নিজেকে কখনও ভূয়া আইনজীবি, কখনও সাংবাদিক বা রাজনৈতিক নেতা পরিচয় দিয়ে এবং মানসিক ভারসাম্যহীন বিকারগ্রস্ত মানুষ কখনও এপ্রতিষ্ঠানে চাকুরী করতে পারেনা, শংকু রাণী চাকুরী করলে বিশ্বনাথের শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে যাবে মন্তব্য করেন বক্তারা।
এছাড়া ইতিমধ্যে কলেজের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা প্রভাষক শংকু রাণী সরকারের অপসারণের দাবিতে প্রায় ৭ শতাধিক শিক্ষার্থীর গণসাক্ষর, অনলাইন ও বিভিন্ন প্রিন্ট মিডিয়ায় প্রকাশিত ডকুমেন্টসসহ ৬৩ পৃষ্ঠা সংবলিত একটি লিখিত আবেদন আমার বরাবরে পেশ করেছেন।
শনিবারের (১১ মার্চ) অনুষ্ঠিত বিশেষ সভায় উপস্থিত সাবেক সংসদ সদস্য শফিকুর রহমান চৌধুরীও প্রভাষক শংকু রাণী সরকারের ব্যাপারে উপস্থিত অন্যান্য ব্যক্তিবর্গের বক্তব্যের সাথে একাত্মতা পোষণ করে আমাকে আইনানুগ প্রক্রিয়া চালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন এবং এব্যাপারে তিনি মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব ও শিক্ষামন্ত্রীর সাথে আলাপ করবেন বলে উপস্থিত সবাইকে আশ্বস্ত করেন।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মানিক মিয়া বলেন, আমার বিরুদ্ধে শংকু রাণীর সরকারের করা চাঁদা চাওয়ার অভিযোগ সম্পর্ন মিথ্যা ও বানোয়াট। আমাকে সামাজিকভাবে অপধস্থ করার জন্য সে চলনায় আশ্রয় নিয়েছে। এর সাথে সাথে আমাকে জামায়াতি নেতা বানানোর ষড়যন্ত্র করছে। আমি জামায়াতের সাথে জড়িত নই। আমি একজন শিক্ষক, এটাই আমার বড় পরিচয়।
সিলেটভিউ২৪ডটকম/প্রনঞ্জয়/এসডি-৩৫