“সারা দিন চলে যায় যেমন তেমন, তবে অন্ধকার নামা মাত্রই চলে আসে মরণ ভয়। নদীভাঙনের তীব্রতা যে হারে বাড়ছে চিন্তা হয় কখন যেন ঘুমের মধ্যে ঘরবাড়ি চলে যায় নদীতে।” এভাবেই অনুভূতি ব্যক্ত করেন সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলার নাইন্দা তীরবর্তী মানুষ।
সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলার নাইন্দা নদীর তীব্র ভাঙনে হুমকির মুখে শতবর্ষী জনপদ সদরপুর গ্রাম। নাইন্দা নদীর ভাঙনে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন তীরবর্তী উপজেলার জয়কলস ইউনিয়নের নাইন্দা নদীর উত্তর-দক্ষিণ অংশের তীরবর্তী সদরপুর গ্রামের প্রায় অর্ধশত পরিবার।
ভাঙনে বিলীন হয়ে যাচ্ছে বতসভিটা। ইতোমধ্যে ভাঙনের কারণে ঘরবাড়ি নদীগর্ভে চলে যাওয়ায় অন্যত্র আশ্রয় নিতে হয়েছে গ্রামের বেশ কয়েকটি পরিবারকে পরিবারকে। ঘোলা পানিতে ভেসে যাচ্ছে বেঁচে থাকার স্বপ্ন। অব্যাহত ভাঙনে ইতোমধ্যে নদীগর্ভে বিলীন হয়েগেছে গ্রামের অনেক ঘরবাড়ি, সড়ক, ফসলি জমিসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। তবে ভাঙন ঠেকাতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নেই কোন পদক্ষেপ। প্রশাসনের পক্ষ থেকও নেয়া হচ্ছেনা কোন ব্যবস্থা।
স্থানীয়রা জানান, যেভাবে নদী ভাঙন হচ্ছে এতে আমাদের এখানে অবস্থান করা প্রায় অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমাদের বসতবাড়ি হয়তো কিছুদিনের মধ্যে তলিয়ে যেতে পারে। ঘর তলিয়ে গেলে যাওয়ার কোনো জায়গা নেই আমাদের। নতুন করে কোন জায়গা কেনার সামর্থ্যও নেই আমাদের। কোনো সহযোগিতাও পাচ্ছিনা। পরিবার নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি কখন সবকিছু নদীতে তলিয়ে যায়।
সরকারের কাছে পুনর্বাসন ব্যবস্থা করে দেয়ার অকুতিও করেন অনেকে।
দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ফারুক আহমেদ জানান, নদী ভাঙনের বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া উপজেলা পরিষদের পক্ষে সম্ভব নয়। আমরা আমাদের জায়গা থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি। পানি উন্নয়ন বোর্ডকে ব্যবস্থা নিতে বলছি। ভাঙন ভয়াবহ রুপ ধারণ করেছে। সেসব এলাকার অনেকেই অন্যত্র সরে গেছেন। যারা আছেন তাদেরকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে।
এ ব্যাপারে জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড অফিস নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শামসুদ্দোহা সিলেটভিউকে জানান, আমাদের নজরে বিষয়টি আছে। বিভিন্ন কারণে ভাঙন হতে পারে, এর মধ্যে একটি কারণ মাটির প্রকৃতি। ভাঙন রোধে এখনো কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। তার উপর প্রচুর পরিমান অর্থের প্রয়োজন হবে। আর ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নিলেও কোন কজে আসবে না, কারণ সেই এলাকার মাটির অবস্থা ভাল না। যতই ব্যবস্থা নেয়া হউক ভাঙন অব্যাহত থাকবে।
সিলেটভিউ২৪ডটকম/ নাজাত /এসডি-৩৮