আবার তো দেখা হবে/পিঠা-পুলি উৎসবে’ এই প্রত্যাশায় শেষ হলো সিলেট বিভাগীয় পিঠা উৎসব। রবিবার (১২ মার্চ) রাত এগারোটায় চার দিনব্যাপী এ আয়োজনের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।

এর আগে রাত সাড়ে ৮টায় অনুষ্ঠিত হয় সমাপনী আলোচনা এবং পুরস্কার ও সনদপত্র বিতরণী। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন সিলেট জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন খান। প্রধান অতিথি সিলেট জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন খান বলেন, আমাদের মতো বৈচিত্র্যময় কৃষ্টি-সংস্কৃতি-ঐতিহ্য অন্য কোন জাতির নেই। এই বৈচিত্রময়তার অনন্য উপাদান বাহারি পিঠা। অপসংস্কৃতি আর ইতিহাস বিকৃতির কালোথাবা আমাদেরকে এর থেকে দূরে সরিয়ে দিচ্ছিল; কিন্তু আমরা সকল চক্রান্ত-ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্নভিন্ন করে নিজস্ব কৃষ্টি-সংস্কৃতি-ঐতিহ্য রক্ষায় সফল হয়েছি। তিনি নতুন প্রজন্মকে পিঠা উৎসব জাতীয় কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত করার উপর গুরুত্ব আরোপ করেন।


বিশেষ অতিথি ছিলেন জাতীয় পিঠা উৎসব উদযাপন পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক খন্দকার শাহ আলম। খন্দকার শাহ আলম বলেন, পিঠা বাঙালির শিল্পমনের পরিচায়ক। বাংলাদেশের নারীদের এই শিল্পবোধ অনন্য। তাই পিঠাকে বাঁচিয়ে রাখতেই এ উৎসবের আয়োজন করা হচ্ছে। তিনি এ আয়োজনে সহযোগিতার জন্যে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়, স্কয়ার গ্রুপ, সিলেট জেলা প্রশাসন, জেলা পরিষদ ও জেলা ক্রীড়া সংস্থাসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।

জাতীয় পিঠা উৎসব উদযাপন পরিষদের সিলেট বিভাগীয় আহ্বায়ক আল আজাদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সবাইকে স্বাগত জানান জাতীয় পিঠা উৎসব উদযাপন পরিষদের বিভাগীয় সদস্য সচিব রজত কান্তি গুপ্ত।  সভাপতির বক্তব্যে আল আজাদ বলেন, স্বল্প সময়ের আয়োজনে যে সাড়া মিলেছে তা অভূতপূর্ব। আগামী বছর শীতের শুরুতেই আরও বড় পরিসরে পিঠা উৎসবের আয়োজন করা হবে।

অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করেন জাতীয় পিঠা উৎসব উদযাপন পরিষদের বিভাগীয় যুগ্ম আহ্বায়ক শামসুল আলম সেলিম, জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যন এ জেড রওশন জেবীন রুবা, বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোকাদ্দেস বাবুল, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট সিলেটের সাধারণ সম্পাদক গৌতম চক্রবর্তী। সঞ্চালনায় ছিলেন জাতীয় পিঠা উৎসব উদযাপন পরিষদের বিভাগীয় যুগ্ম সদস্য সচিব সুকান্ত গুপ্ত।

এবারের পিঠা উৎসবে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অধিকার করেছে যথাক্রমে সামায়ারা পিঠা ঘর, সাস্টেইন ফুড ও বান্দরবান হতে আগত সাঙ্গু নদীর পাড়।

সমাপনী দিনে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পর্বে দলগতভাবে অংশ নেয় চারুবাক, সুরাঞ্জলি, সিলেট নৃত্যালয় ,দ্বৈতস্বর, সুরসপ্তক, মৃত্তিকায় মহাকাল, নৃত্যসুধা, ললিত মঞ্জরি, নৃত্যরথ, তারুণ্য, নৃত্যসুধা, ভাবুক, উর্বশী আবৃত্তি পরিষদ, অনির্বান শিল্পী সংগঠন, অন্বেষা শিল্পী গোষ্ঠী।

আবৃত্তি ও গানে একক পরিবেশনায় ছিলেন মোকাদ্দেস বাবুল, আমিনুল ইসলাম চৌধুরী লিটন, নাজমা পারভীন, জ্যোতি ভট্টাচার্য, সুকান্ত গুপ্ত, সৈয়দ সাইমুম আনজুম ইভান।

একক সংগীত পরিবেশনায় অংশ নেন রানা কুমার সিনহা, বাউল আব্দুর রহমান, গৌতম চক্রবর্তী, মালতী পাল, বাউল বশির উদ্দিন সরকার, খোকন ফকির, ইকবাল শাঁই, আশরাফুল ইসলাম অনি প্রমুখ।

উৎসব মুখরতায় শেষ হয় চারদিন ব্যাপী সিলেট বিভাগীয় জাতীয় পিঠা উৎসব।


সিলেটভিউ২৪ডটকম/প্রেবি/পিডি