গত বৃহস্পতিবার (১৬  মার্চ) সিলেট সদর উপজেলার ৩টি ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর মধ্যে একটি খাদিমনগর। এ ইউনিয়নের ৭, ৮ ও ৯নং ওয়ার্ডে সংরক্ষিত সদস্য পদে প্রার্থী হয়েছিলেন মীনা বেগম ও সমলা বেগম নামে দুজন। তারা পরাজিত হওয়ার পর বিজয়ী প্রার্থীর বিরুদ্ধে তুলেছেন ষড়যন্ত্রের অভিযোগ। অনিয়মের আশ্রয় নিয়ে ওই প্রার্থীকে প্রত্যক্ষভাবে সহযোগিতা করার অভিযোগ তোলা হয়েছে প্রিজাইডিং ও পুলিং অফিসারদের বিরুদ্ধে। ফলে ৭, ৮ ও ৯নং ওয়ার্ডে পুনঃনির্বাচনের দাবি জানিয়ছেন তারা।

এছাড়া খাদিমনগরের ৭ নং ওয়ার্ডে সাধারণ সদস্য প্রার্থী মো. ইলিয়াস আলীও প্রিজাইডিং অফিসারের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ এনে এ ওয়ার্ডে পুনঃনির্বাচন দাবি করেছেন। তিনি তালা প্রতীক নিয়ে ৭ নং ওয়ার্ডে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পরাজিত হয়েছেন।


অপরদিকে, খাদিমনগর ইউনিয়নে ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে নৌকার প্রার্থীকে পরাজিত করা হয়েছে বলে দাবি করছেন সাধারণ ভোটাররা।

এ বিষয়ে শনিবার (১৮ মার্চ) দুপুরে সিলেট জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে মীনা বেগম, সমলা বেগম, ইলিয়াস আলী ও ইউনিয়নের সাধারণ ভোটাররা উপস্থিত হয়ে স্মারকলিপি প্রদান করেন। 

স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়- গত বৃহস্পতিবারের নির্বাচনে খাদিমনগর ইউনিয়নের ৭, ৮ ও ৯নং ওয়ার্ডের বিভিন্ন কেন্দ্র ও বুথে ভোটগ্রহণের সময় নানা অনিয়ম হয়েছে। এতে প্রত্যক্ষভাবে অনিয়তে জড়িত ছিলেন দায়িত্বশীল প্রিজাইডিং ও পুলিং অফিসার। এসব কেন্দ্রের বুথগুলোতে প্রিজাইটিং  অফিসার ও তাঁর সহকারী অফিসাররা নিজে ভোটারদের বই প্রতীকের প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার জন্য চাপ দিয়েছেন। তারা ইচ্ছাকৃতভাবে ৭, ৮ ও ৯নং ওয়ার্ডের বুথ বন্ধ রেখে ভোটারদের বিভ্রান্ত এবং অনিয়ম করেছেন। ভোটাররা দীর্ঘ সময় লাইনের দাঁড়িয়ে থেকে বুথে ভোট দিতে গেলে ‘আপনার ভোট এখানে নেই’ বলে তাদের বের করে দেন প্রিজাইডিং ও পুলিং অফিসাররা।

এছাড়াও এসব অফিসার নিজেরা ইভএমে টিপ মেরেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। 

স্মারকলিপিতে আরও উল্লেখ করা হয়- অভিযোগকারী প্রার্থীদের এজেন্টদেরকে ভোটকক্ষ থেকে বাহির করে দেন প্রিজাইডিং অফিসার। মেশিনে  সমস্যা- এ অজুহাত দেখিয়ে অফিসাররা বার বার ভোট কক্ষে প্রবেশ করে বই প্রতীকের প্রার্থী মনোয়ারা বেগমের পক্ষে ভোট নিশ্চিত করেছেন। পরে বিকাল ৪টার দিকে আধা ঘণ্টা সময় বাকি থাকা সত্ত্বেও ভোটাদের কেন্দ্র থেকে বের করে দিয়ে দায়িত্বরত অফিসাররা এজেন্টদের কাছ থেকে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু এজেন্টরা রেজাল্ট শিট দেওয়ার আগে স্বাক্ষর দিকে অস্বীকৃতি জানান। পরে রাত ৮টার দিকে ফলাফল প্রকাশ করা হয়। ফলাফল প্রদানের আগে প্রিজাইডিং অফিসার অভিযোগকারী প্রার্থীদের এজেন্টদের বলেন- ‘আপনারা স্বাক্ষর না দিলেও আমরা ফলাফল ঘোষনা করে ফেলবো, এটি উপরের নির্দেশ।’

বই প্রতীকের মহিলা প্রার্থীর পক্ষে প্রকাশ্যে প্রিজাইডিং ও পুলিং অফিসাররা কাজ করেছেন উল্লেখ করে মীনা বেগম ও সমলা বেগম অভিযোগ তুলেন- ভোটের দিন রাতে মনোয়ারা বেগমের বাড়িতে গিয়ে খাওয়া-দাওয়া করেছেন প্রিজাইডিং ও পুলিং অফিসাররা। ৭, ৮ ও ৯নং ওয়ার্ডে অন্য অফিসারদের মাধ্যমে ফের ভোটগ্রহণের দাজি জানিয়েছেন মীনা ও সমলা।

এদিকে, একই অভিযোগ করেছেন খাদিমনগরের ৭ নং ওয়ার্ডের সদস্য প্রার্থী মো. ইলিয়াস আলী। তিনিও ওই ওয়ার্ডে পুনঃনির্বাচনের দাবি জানিয়ে শনিবার জেলা প্রশাসক বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করেছেন। 

এছাড়াও বৃহস্পতিবার ভোটের দিন খাদিমনগর ইউনিয়নের বিভিন্ন কেন্দ্রে ভোট জালিয়াতি করে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ইকলাল আহমেদকে পরাজিত করা হয়েছে উল্লেখ করে পৃথক আরেকটি স্মারকলিপি প্রদান করেন সাধারণ ভোটাররা। তারা পুরো ইউনিয়নে পুনঃনির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন। 


সিলেটভিউ২৪ডটকম / ডালিম