পৃথিবীতে এমন কিছু মোটরসাইকেল আছে যেগুলোর দাম গাড়িকেও হার মানাবে। সবচেয়ে দামি বাইকের প্রসঙ্গ উঠলে অনেকেরই মাথায় আসে হারলে ডেভিডশন অথবা বিএমডাব্লিউ-এর নাম। কিন্তু জানেন কি? এদের থেকেও দামি মোটরসাইকেল রয়েছে পৃথিবীতে।

এই সব বাইক সচরাচর রাস্তায় দেখা যায় না। সাধারণ মানুষের কাছ এই সমস্ত বাইক স্বপ্নের চেয়ে কম নয়। অত্যাধিক দাম এবং বিলাসবহুল হওয়ার কারণে খুবই সীমিত সংখ্যায় এই বাইকগুলো বিক্রি করে প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানগুলো। জানুন বিশ্বের সবচেয়ে দামি মোটরসাইকেল সম্পর্কে।


নেইম্যান মারকাস লিমিটেড এডিশন ফাইটার

এসইউভি গাড়ির ক্যাপাসিটি সমান ইঞ্জিন রয়েছে এতে। নেইম্যান মারকাস লিমিটেড এডিশন ফাইটারের ইঞ্জিন ১৯৬৬.৫৫ সিসি এয়ার কুলড ভি টুইন অর্থাৎ প্রায় ২ লিটার। বাইকের টপ স্পিড ১৯০ কি.মি. প্রতি ঘণ্টা। নেইম্যান মারকাস লিমিটেড এডিশন ফাইটার বাইকটি স্টোর করা হয়েছে আমেরিকান লাক্সারি ডিপার্টমেন্ট স্টোরে।

এই মোটরসাইকেলের দাম প্রায় শত কোটি টাকা হলেও বাইকটির রিটেল প্রাইজ শুনলে ভিমড়ি খাবেন। ১১ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে বিক্রি করা হয়েছে এই ফাইটার এডিশন মোটরসাইকেলটি। সারা বিশ্বে নেইম্যান মারকাস লিমিটেড এডিশন ফাইটাররের গ্রাহক সংখ্যা মাত্র ৪৫ জন।

১৯৪৯ ই৯০ এজিএস পরকুপাইন

১৯৪৯ সালে ব্রিটিশ সংস্থা এজিএস মোট ৪টি ই৯০ পরকুপাইন রেসিং মোটরসাইকেল বানিয়েছিল। এই বাইকের দেওয়া হয়েছে ৫০০ সিসির টুইন সিলিন্ডার ইঞ্জিন। বাইকের সর্বোচ্চ গতি ২১৭ কি.মি. প্রতি ঘণ্টা। এতে রয়েছে ৪৫ ডিগ্রি অ্যালমুনিয়াম হুইল। ১৯৪৯ সালের অনুষ্ঠিত বিশ্বের প্রথম গ্র্যান্ড প্রিক্স ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপ জিতেছিল এই মোটরসাইকেল। বর্তমানে ১৯৪৯ ই৯০ এজিএস পরকুপাইন বাইকের দাম প্রায় ৭ মিলিয়ন ডলার।

ইকস ইএস১ স্পিরিট

দুর্ধর্ষ ডিজাইনের মোটরসাইকেল ইকস ইএস১ স্পিরিট। কারণ এই বাইকে নেই কোনও চেসিস ফ্রেমওয়ার্ক বা রিয়ার সাসপেনশন। যা ছাড়া আজকের প্রতিষ্ঠানগুলো বাইক বানানো কল্পনাই করতে পারে না। বলা হয়, প্রফেশনাল ড্রাইভারদেরও নাকি এই বাইকে রাইডিং করার জন্য ২ সপ্তাহ ট্রেনিংয়ের প্রয়োজন হয়। ইকস ইএস১ স্পিরিটে মজুত ১০০০ সিসি ইঞ্জিন। বাইকটি সর্বোচ্চ ২০০ হর্সপাওয়ার তৈরি করতে পারে। এই মোটরসাইকেলের সর্বোচ্চ গতি ঘণ্টায় ৩৭০ কিলোমিটার। বাইকটির দাম ৩০ কোটি টাকা।

হিল্ডব্র্যান্ড অ্যান্ড উলফমুলার

১৯৮৪ সালে বানানো হয়েছিল বাই-সাইকেলের মতো দেখতে এই মোটরবাইক। আকর্ষণীয় বৈশিষ্ট্য হল হিল্ডব্র্যান্ড অ্যান্ড উলফমুলার বাইকে না আছে ক্লাচ না আছে প্যাডেল। বাইকটি রাস্তায় দৌড় করার জন্য ধাক্কা দিতে হয় এবং তারপর লাফিয়ে বসতে হয়। এতে ইঞ্জিন রয়েছে ১৪৮৯ সিসি। বাইকটির সর্বোচ্চ গতি ৪৫ কিমি প্রতি ঘণ্টা। বর্তমানে এই মোটরসাইকেলের দাম ২৯ কোটি টাকা।

বিএমএস নেমেসিস

অনেকটা এয়ার-রাইড সিস্টেমে কাজ করে এটির সিঙ্গেল সাইডেড সুইংআর্ম রিয়ার সাসপেনশন যা বাইকটিকে মাটির ১০ ইঞ্চি উপরে অথবা ১০ ইঞ্চি নিচে নিয়ে আসে। এই বাইকের সবচেয়ে আকর্ষণীয় বৈশিষ্ট্য এতে উপস্থিত ২৪ ক্যারেট সোনা। মোটরসাইকেলটির দাম ২৫ কোটি টাকারও বেশি।

হারলে ডেভিডসন কসমিক স্টারশিপ

হারলে ডেভিডসন ২০২২ ভি-রোড নামক একটি মডেলকে বিখ্যাত জ্যাক আর্মস্ট্রংয়ের কসমিক স্টাইলে পেইন্ট করা হয়। তারপর থেকেই মোটরসাইকেলটির নাম পড়ে যায় হারলে  ডেভিডসন কসমিক স্টারশিপ। বাইকটির মূল্য ১.৫ মিলিয়ন ডলার হলেও কিছু বছর আগে ৩.৫ মিলিয়ন ডলারে মোটরসাইকেলটি বিক্রি করে হারলে ডেভিডসন।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/ডেস্ক/মিআচৌ