সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার সীমান্তবর্তী লোভাছড়া পাথর কোয়ারির দু’তীরে জব্দকৃত সেই প্রায় ১ কোটি ঘনফুট পাথরের অবশেষে গতি হতে যাচ্ছে। মজুত থাকা পাথরের মাপজোখ শুরু হয়েছে।

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয় ও খনিজ উন্নয়ন ব্যুরো (বিএমডি)-এর নির্দেশে রবিবার (২ এপ্রিল) থেকে লোভাছড়া কোয়ারিতে জব্দকৃত পাথরের পরিমাণ ও গুনাগুণ বিবেচনায় নিলামের লক্ষ্যে মূল্য নির্ধারণের জন্য প্রতিনিধি দল কাজ শুরু করেছেন। 


জানা যায়, রবিবার দুপুরে প্রতিনিধি দলের আহবায়ক খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরো (বিএমডি)-এর পরিচালক (যুগ্মসচিব) মো. আবুল বাসার সিদ্দিক আকন ও সদস্যসচিব বিএমডি’র উপ-পরিচালক (খনি ও খনিজ) (চ. দা.) মো. মাহফুজুর রহমানের নেতৃত্বে ৮ সদস্যের কমিটি কোয়ারি এলাকা পরিদর্শন করেন। এসময় তারা জব্দকৃত পাথরের স্তুপগুলো ঘুরে ঘুরে দেখন এবং পরিমাপের কাজও প্রত্যক্ষ করেন। প্রতিনিধি দল ৫ এপ্রিল পর্যন্ত কোয়ারি এলাকায় অবস্থান করে জব্দকৃত পাথরের পরিমাপ কাজের তদারকি করবেন বলে জানা গেছে। 

কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হলেন- সিলেটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. তৌছিফ আহমেদ, কানাইঘাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুমন্ত ব্যানার্জি, বাংলাদেশ ভূতাত্ত্বিক জরিপ অধিদপ্তর (জিএসবি)র উপ-পরিরচালক মো. আশরাফ হোসেন, কানাইঘাট সার্কেলের এসএসপি মো. আব্দুল করিম, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের একজন উপযুক্ত প্রতিনিধি ও পরিবেশ অধিদপ্তর সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো আলমগীর। 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুমন্ত ব্যানার্জি সিলেটভিউ-কে জানান- প্রতিনিধি দল রিট মামলার আওতা বহির্ভূত পাথরের পরিমাণ ও গুনাগুণ বিবেচনায় নিলামের লক্ষ্যে মূল্য নির্ধারণপূর্বক আগামী ২০ কার্যদিবসের মধ্যে বিএমডিতে প্রতিবেদন দাখিল করবেন। 

এর আগে প্রায় ৪ বছর আগে লোভাছড়া পাথর কোয়ারির ইজারার মেয়াদ শেষ হওয়ার পর কোয়ারির দু’তীরে অবস্থিত প্রায় ১ কোটি ঘনফুট পাথর জব্দ করে সিলেট পরিবেশ অধিদপ্তর। পাথর ব্যবসায়ীরা জব্দকৃত পাথরগুলো নিজেদের উত্তোলনকৃত বলে মহামান্য হাইকোর্ট ব্রেঞ্চসহ সরকারের বিভিন্ন দফতরে আবেদন করেন। কিন্তু কোনো সুরাহা হয়নি।

এ ৪ বছরে জব্দ করা সেই পাথর পরিবেশ অধিদপ্তর তিন দফা নিলাম ডাকে। তবে এ নিয়ে কয়েকজন পাথর ব্যবসায়ী নানা অভিযোগ তুলে মহামান্য হাইকোর্টে রিট মামলা করেন। ফলে প্রায় ৪ বছর ধরে লোভাছড়া পাথর কোয়ারিতে পড়ে থাকা এক কোটি ঘনফুট পাথরের নিলাম প্রক্রিয়া বিলম্বিত হয়। এতদিন সেই পাথরের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পালন করে উপজেলা প্রশাসন ও থানাপুলিশ।

এদিকে, দীর্ঘদিন পর জব্দকৃত এসব পাথরগুলো নিলামের প্রক্রিয়া শুরু হওয়ায় সংশ্লিষ্ট আশার আলো দেখা দেখছেন। স্থানীয় পাথর ব্যবসায়ীরা বলছেন- অন্তত নিলামের মাধ্যমে জব্দকৃত পাথরগুলো বিক্রি হলে তারা কিছুটা হলেও ক্ষয়ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবেন। 
দ্রুত নিলাম প্রক্রিয়া সম্পন্নের দাবি জানান তারা। 


সিলেটভিউ২৪ডটকম / মাহবুব / ডি.আর