নীতিমালার তোয়াক্কা না করে এক ছাত্রীকে হলে রাখার অভিযোগ উঠেছে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা হলের প্রভোস্টের বিরুদ্ধে। ওই ছাত্রী হলের প্রভোস্ট জোবেদা কনক খানের ‘আস্থাভাজন’ হওয়ায় স্নাতক ও স্নাতকোত্তরের ফলাফল প্রকাশিত হওয়ার পরও হলে থাকছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে হল কর্তৃপক্ষের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, লোকপ্রশাসন বিভাগের ২০১৬-১৭ সেশনের শিক্ষার্থী সাবিহা সায়মন পুষ্পের বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষাজীবন শেষ হয়েছে গত জানুয়ারিতে। বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের নিয়মানুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষাজীবনের শেষ সেমিস্টারের ফাইনাল পরীক্ষা দেওয়ার ৭ দিনের মধ্যে হল ছেড়ে দিতে হবে। কিন্তু সাবিহা হল ছাড়ননি। ফলে অন্য শিক্ষার্থী সিট পাচ্ছেন না। হল প্রভোস্ট জোবেদা কনক খান ও বিশেষ কিছু ব্যক্তির তদবিরে তিনি হলে থাকলেও কর্তৃপক্ষ কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছেন না বলেও অভিযোগ শিক্ষার্থীদের।
হলের নীতিমালার ১০ নম্বর ধারায় উল্লেখ রয়েছে, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয়ের শেষ সেমিস্টারের পরীক্ষা শেষ হবার ৭ দিনের মধ্যে ছাত্রীরা হলের সমুদয় পাওনা পরিশোধ করে এবং হল পাঠাগারের সকল বই পত্র ফেরত দিয়ে হল ছেড়ে যেতে বাধ্য থাকবেন। অন্যত্থায় অতিরিক্ত প্রতিদিন হলে অবস্থানের জন্য একশ টাকা হারে জরিমানা দিতে হবে।’’
জানুয়ারিতে শেষ সেমিস্টার পরীক্ষা শেষ হলেও গত তিন মাস ধরে হলের সিট দখল করে থাকার বিনিময়ে অতিরিক্ত ফি পরিশোধ করছেন না বলেও হল সূত্র জানায়।
শিক্ষার্থীরা আরও জানান, গত ২৬ মার্চ আবাসিক হলগুলোতে ইফতার বিতরণ করে বিশ্ববদ্যিালয় প্রশাসন। বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হল অফিসে লোকপ্রশাসন বিভাগের সাবেক ছাত্রী সাবিহা সায়মন পুষ্পের হাতে ইফতার তুলে দিচ্ছেন উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ, এমন একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এই ছবি দিয়ে একটি স্থানীয় পোর্টালে নিউজও প্রকাশিত হয়। অথচ এ শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে শেষ হয়ে গেছে বলে বিভাগ সূত্রে জানা গেছে।
ওই ছাত্রী ছাড়াও আরো অনেকে প্রজেক্ট ও থিসিসের অজুহাতে হলে থাকছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আবাসিক হলে সিট সংকটের কারণে অনেকেই বাইরে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকেন। পড়ালেখা শেষ হওয়ার পরে অনেকে নানা অজুহাতে হলে থাকেন। প্রভোস্টের কাছের লোক হলে পরীক্ষা শেষ হওয়ার পরেও হলে থাকা যায়। এভাবে আরো অনেক ছাত্রী হলে রয়েছেন।’
নিয়ম বহির্ভূতভাবে হলে থাকার কারণ জানতে চেয়ে সাবিহা সায়মন পুষ্পকে একাধিকবার কল দিলে তিনি রিসিভ করেননি।
এ বিষয়ে জানতে হলের প্রভোস্ট জোবেদা কনক খানের মুঠোফোনে গত তিন ধরে একাধিকবার কল ও হোয়াটসঅ্যাপে ক্ষুদে বার্তা পাঠালেও কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
পরে সহকারী প্রভোস্টের সঙ্গে কথা বললে তিনি বিষয়টি অবগত নন বলে জানান।
সিলেটভিউ২৪ডটকম / নোমান / ডি.আর