বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘সুলতানা জেসমিনকে তুলে নেওয়া এবং নির্যাতনের কারণে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। একজন নাগরিক এবং সরকারি কর্মচারী, তাঁকে এভাবে তুলে নেওয়া ভয়াবহ আইনের লঙ্ঘন, সংবিধান লঙ্ঘন। তাঁকে তুলে নেওয়া হলো কোন আইনে?’
আজ রোববার মহিলা দলের উদ্যোগে রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ‘নওগাঁয় সুলতানা জেসমিনকে হত্যার প্রতিবাদে’ এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
নওগাঁয় র্যাবের হেফাজতে ইউনিয়ন ভূমি কার্যালয়ের অফিস সহকারী সুলতানা জেসমিনের (৪৫) মৃত্যুর ঘটনা প্রসঙ্গে ফখরুল বলেন, ‘একজন যুগ্ম সচিবের কথায় তাঁকে রাস্তার মধ্যে থেকে তুলে নেওয়া হয়েছে। এটা কোনো সভ্য দেশে হতে পারে না।’ তিনি বলেন, সুলতানা হত্যা প্রমাণ করে ক্ষমতাসীনরা হত্যা করে, মিথ্যা মামলা দিয়ে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায়।
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, গতকাল তাদের থানা পর্যায়ে যে কর্মসূচি ছিল, তাতে বেশির ভাগ জায়গায় পুলিশ ও আওয়ামী লীগ বাধা দিয়েছে। বিএনপির নেতাদের গ্রেপ্তার ও নেতা–কর্মীদের গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে বলে অভিযোগ তোলেন তিনি। তিনি বলেন, এই সরকার পরিকল্পিতভাবে বিরোধী দলের কর্মসূচিতে আক্রমণ করে সংঘাতময় পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চায়। বিএনপির এখন পর্যন্ত সব শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি দিয়েছে বলেন তিনি।
রাস্তায় আন্দোলন করতে গিয়ে ইতিমধ্যে বিএনপির ১৭ জন প্রাণ দিয়েছেন জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ৬০০ নেতা–কর্মীকে গুম করেছে এই সরকার। হাজারের বেশি নেতা–কর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। অধিকারে আদায়ে রাস্তায় দাঁড়াতে দেওয়া হয় না।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলা যাবে না? সরকার কি রাষ্ট্র? সরকার কি গড? গণতন্ত্রে বিশ্বাস করলে আমি অবশ্যই আমার কথা বলব। একমত না হতে পারি কিন্তু মতপ্রকাশের স্বাধীনতা থাকতে হবে।’
প্রথম আলোর সাংবাদিককে রাতে তুলে নেওয়া এবং সম্পাদকের বিরুদ্ধে মামলারও সমালোচনা করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, ‘অন্যায়ের কথা বললেই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করে দেয়। জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সংশোধন ও দুটি ধারা বাতিলের কথা বলেছে। কিন্তু সরকারের মন্ত্রীরা বলছেন, বাতিল করা হবে না। আইন দিয়ে মানুষের কথা বলার অধিকার বন্ধ করে দিতেই তারা তা বাতিল করবে না।’
নারীদের আরও সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, খালেদা জিয়ার ওপর নির্মম নির্যাতন করা হয়েছে। জেলে খালেদা জিয়ার সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছে, তা কোনো সভ্য দেশে হয় না বলে অভিযোগ করেন ফখরুল। তিনি আরও অভিযোগ করেন, খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করা হচ্ছে না। তাঁকে গৃহে অন্তরীণ করে রাখা হয়েছে। মানুষকে বোকা বানানোর জন্য সাজা স্থগিতের কথা বলছে।
মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাসের সভাপতিত্বে ও জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সম্পাদক হেলেন জেরিন খানের সঞ্চালনায় আলোচনায় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান ও মহিলা দলের নেতা–কর্মীরা।
সিলেটভিউ২৪ডটকম/এনটি
সূত্র : প্রথমআলো