আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিভিন্ন পৌরসভা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের নির্বাচনে বিএনপির দলীয় প্রতীক (ধানের শীষ) ছিল না, কিন্তু ঘোমটা পরে সব খানেই তাদের প্রার্থী ছিল। এই ঘোমটা পরা প্রার্থী কিন্তু সিটি নির্বাচনেও থাকবে। সিলেটের বর্তমান মেয়র আরিফ অলরেডি ঘোষণা দিয়েছেন। অন্যান্য সিটিতেও ঘোমটাপরা তাদের স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছে।

কাদের বলেন, সিটি নির্বাচনে আমরা তাদের (বিএনপিকে) আমন্ত্রণ করছি না। নির্বাচন অংশগ্রহণ করা তাদের অধিকার। জাতীয় নির্বাচন যেমন, সিটি নির্বাচনও তেমন।


মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল) ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস (১৭ এপ্রিল) পালন উপলক্ষ্যে ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে নির্দিষ্ট জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক, ওই জেলাগুলোর দলীয় সংসদ সদস্য ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানদের মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, আগামী নির্বাচনেও আমাদের টার্গেট মুক্তিযুদ্ধবিরোধী, স্বাধীনতার চেতনাবিরোধী বিএনপির নেতৃত্বে অপশক্তি যেন ছায়া বিস্তার করতে না পারে। এই অপশক্তির যে বিষ বৃক্ষের জন্ম দিয়েছে, তা উদঘাটন না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন, সংগ্রাম ও লড়াই চলবে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি এখনো স্বাধীনতা মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে সম্পর্কিত দিবসগুলো অস্বীকার করে। তারা পালন করে না, উপেক্ষা করে। এর মধ্যে ১৭ এপ্রিল একটা। এই দিন দেখবেন বিএনপির কোনও কর্মসূচি নেই, তারা পালন করে না। 

তিনি বলেন, যে ভাষণ একটি জাতিকে স্বাধীনতা এনে দিয়েছে, ৭ মার্চ তারা স্বীকারও করে না, পালনও করে না। এরা নাকি স্বাধীনতা বিশ্বাসী। দেখবেন বিজয় দিবসে তাদের প্রোগ্রামে বঙ্গবন্ধু নেই, স্বাধীনতা দিবসেও দেখবেন বঙ্গবন্ধু নেই, জিয়া রহমান যা শুরু করে দিয়ে গেছে, সেই ধারা বিএনপি এখনো অব্যাহত রেখেছে। তারা বিজয় দিবস পালন করে বিজয়ের মহানায়ক নেই। তারা স্বাধীনতা দিবস পালন করে তাদের স্বাধীনতার স্থপতি নেই। ক্ষমতায় থাকত তারা এটা করেছে এখনো তারা একই ভাবধারায়। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা তারা ধারণ করে না। স্বাধীনতার আদর্শ বিশ্বাস করে না। এটা আজকে বাংলাদেশের প্রমাণিত সত্য। 

তিনি আরও বলেন, বিএনপি স্বাধীনতার ঘোষক বলে যাকে দাবি করেন যিনি ঘোষণার অন্যতম পাঠক। আবুল কাশেম সন্দীপ, এম এ হান্নান, এরকম অনেক পাঠক ছিল। জিয়াউর রহমানও তাদের মধ্যে একজন ঘোষণার পাঠক। ঘোষণার পাঠক ঘোষক হতে পারে না। ঘোষণা বৈধ অধিকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছাড়া আর কারও ছিল না। বঙ্গবন্ধুরই একমাত্র বৈধ অধিকার ছিল। সত্তরের নির্বাচনের যে মেন্ডেট এদেশের জনগণ তাকে দিয়েছিল, সে মেন্ডেটের ঘোষণা বলেই স্বাধীনতা ঘোষণা করার অধিকার তারই ছিল।

সেতুমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার ঘোষণার বৈধ অধিকার যার নেই, তাকে তারা ঘোষক বানাতে চায়। একটা বাঁশির ফুতে স্বাধীনতা হয়নি। সংগ্রাম আন্দোলনের একটা ইতিহাস যেখানে বীরের বীরত্ব আছে, পাশাপাশি ষড়যন্ত্রও আছে। জিয়াউর রহমান বাংলাদেশ ইতিহাসে কূটনট হতে পারে, কিন্তু নায়ক মহানায়ক তাকে বানানো তাদের একটা উদ্ভট কল্পনা যার সঙ্গে বাস্তবের কোনও সংযোগ নেই। এটা ইতিহাসের নির্লজ্জ বিকৃত উদাহরণ জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষক। জিয়াউর রহমান ইতিহাসের নায়ক নয়, ইতিহাসের কূটনট। তার আজকে অনেক কিছু বলতে তাদের বলার কোন শেষ নেই।  আমরা আমাদের লক্ষণ নিয়ে এগিয়ে যাব। এই দেশ মুক্তিযুদ্ধের দেশ, এই দেশ স্বাধীনতা সংগ্রামের দেশ। 

তিনি আরো বলেন, তারা বলে ত্রিশটির বেশি সিট নাকি আওয়ামী লীগ পাবে না, প্রমাণ করবেন কীভাবে? নির্বাচনে আসেন, জনগণ ভোট দেবে। মনে কি নেই ২০০৮ সালে নির্বাচনের আগে বেগম খালেদা যে বলেছিলেন, আওয়ামী লীগ ত্রিশটা আসনও পাবে না। মনে আছে?

সভায় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, উপ প্রচার সম্পাদক সৈয়দ আব্দুল আউয়াল শামীম, উপ দপ্তর সম্পাদক সায়েম খানসহ খুলনা বিভাগীয় নেতারা।


সিলেটভিউ২৪ডটকম / ঢাকা পোস্ট / ডি.আর