তিন বছর আগে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় বললেও দিব্যি আইপিএলে খেলে চলেছেন সাবেক ভারতীয় অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি। এই ‘ক্যাপ্টেন কুলে’র এখনও তুমুল জনপ্রিয়তা। ব্যাটার, উইকেটরক্ষক কিংবা অধিনায়ক ধোনি তিন জায়গাতেই তিনি সমান পারদর্শী। মাত্র ৭ বছরের নেতৃত্বে তিনি ভারতকে সম্ভাব্য সব বড় শিরোপা এনে দিয়েছেন। বর্তমানে ক্রিকেট ক্যারিয়ারের শেষ সময়ে দাঁড়িয়ে আছেন এই ক্যারিশমাটিক ক্রিকেটার। তার কণ্ঠেও শোনা গেল বিদায়ের সুর।
ক্রিকেট ক্যারিয়ারের ইতি টানার আগমুহূর্তেও তিনি রেকর্ড গড়ায় কোনো অলসতা দেখাতে রাজি নন। সেরকম আরেকটি অর্জনে যোগ করলেন নিজের ক্যারিয়ারে। স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতে উইকেটরক্ষক হিসেবে ধোনি সবচেয়ে বেশি ক্যাচ নেওয়ার রেকর্ড এককভাবে নিজের করে নিয়েছেন।
শুক্রবার (২১ এপ্রিল) সানরাইজার্স হায়দরাবাদের বিপক্ষের ম্যাচে তিনি ওই কীর্তি গড়েন। আগেও রেকর্ডটি ধোনিরই ছিল। পরে তাকে ছাড়িয়ে যান কুইন্টন ডি কক। এবারের আইপিএল শুরুর সময় ধোনির ক্যাচ ছিল ২০২টি, ডি ককের ২০৭টি। জাতীয় দলের সিরিজ খেলে দেরিতে আইপিএল দলে যোগ দেওয়ার পর এবারের আসরে এখনও মাঠে নামার সুযোগ পাননি প্রোটিয়া কিপার। এই সুযোগেই ধোনি তাকে পেরিয়ে যান। হায়দরাবাদের প্রোটিয়া ব্যাটার এইডেন মারক্রামের ক্যাচটি তার ক্যারিয়ারের ২০৮তম ক্যাচ।
সানরাইজার্সের বিপক্ষে ম্যাচ শেষ হওয়ার অনেকক্ষণ পরও চেন্নাইয়ের গ্যালারিতে দর্শকেরা রয়ে যান ধোনির প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করতে। পরে পুরস্কার বিতরণীতে ধারাভাষ্যকার হার্শা ভোগলের সঙ্গে ধোনি কথা বলতে এগিয়ে যেতেই গ্যালারি থেকে ভেসে আসে তুমুল চিৎকার। হার্শা প্রশ্ন শুরু করলেন এটি নিয়েই। চেন্নাইয়ের ক্রিকেট অনুসারীদের এই ভালোবাসার কথা বলতে গিয়েই ধোনি বললেন তার ক্যারিয়ারের গোধূলি লগ্নের কথা।
প্রতি ম্যাচের ন্যায় হায়দরাবাদের ম্যাচ শেষেও ধোনিকে নিয়ে তুমুল উন্মাদনা দেখান দর্শকরা। আইপিএল ক্যারিয়ারের শুরু থকেই চেন্নাই সুপার কিংসে খেলে ও নেতৃত্ব দিয়ে তিনি হয়ে উঠেছেন এই ফ্র্যাঞ্চাইজি ও এই শহরের সমার্থক। তার নিজের রাজ্য যে ঝাড়খন্ড, তার জন্ম-বেড়ে ওঠা রাঁচিতে, এটা অনেকের মনেও থাকে না। চেন্নাই আর ধোনি যে বরাবরের আপন। তবে সরাসরি খুব একটা আবেগ দেখাতে যায় না ক্যাপ্টেন কুলকে। ম্যাচ শেষে তিনি জানিয়েছেন, ‘বয়স তো হয়েছে… এটা আড়াল করার কোনো কারণ নেই। যতকিছুই হোক, আমি অবশ্যই ক্যারিয়ারের শেষ পর্যায়ে আছি… আর যতদিনই খেলি, গুরুত্বপূর্ণ হলো আইপিএলে খেলা উপভোগ করা।’
গ্যালারিভরা দর্শকদের উদ্দেশ্যে ধোনি বলছেন, ‘বছর দুয়েক পর তারা (দর্শক) মাঠে এসে খেলা উপভোগ করার সুযোগ পাচ্ছে। গ্যালারি একদম পরিপূর্ণ, মাঠে নতুন স্ট্যান্ড করা হয়েছে। এখানে খেলতে তাই সবসময়ই ভালো লাগে। তারা সবসময়ই অনেক ভালোবাসা ও অনুরাগ দেখিয়েছেন। খেলা শেষেও সবসময় আমার কথা শোনার জন্য রয়ে গেছেন। যদিও ব্যাটিংয়ের যথেষ্ট সুযোগ পাচ্ছি না। তবে অন্যরা ভালো করছে, আমার কোনো আপত্তি নেই! যেটা বললাম, এখানে খেলতে পারা সবসময়ই আনন্দের।’
আগে থেকেই ক্যাচ-স্টাম্পিং মিলিয়ে সবচেয়ে বেশি ডিসমিসালের রেকর্ড ধোনির দখলে ছিল। প্রথম কিপার হিসেবে ৩০০ ডিসমিসালের দিকেও এগিয়ে চলেছেন তিনি। এখন তার শিকার ২৯৩। এই রেকর্ডে দুইয়ে আছেন কামরান আকমল (২৭৪ ডিসমিসাল)। ২৭৩ ডিসমিসাল নিয়ে তিনে কার্তিক, ২৫৪ ডিসমিসাল করে চারে ডি কক। ২০৫ ডিসমিসাল করে অবসরে গেছেন কুমার সাঙ্গাকারা।
সিলেটভিউ২৪ডটকম/ডেস্ক/এনটি
সূত্র : ঢাকা পোস্ট