সুদানে সামরিক-আধা সামরিক বাহিনীর মধ্যে সংঘাত শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ২ হাজার ৮০০ জনকে দেশটি থেকে সরিয়ে নিয়েছে সৌদি আরব। এদের মধ্যে সিংহভাগই বিদেশি নাগরিক।
 

শুক্রবার (২৮ এপ্রিল) সকালেও বাংলাদেশিসহ মোট ৫২ জন নাগরিক সুদান থেকে জেদ্দায় পৌঁছেছেন।
 


সৌদির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, সুদান থেকে সবশেষ জাহাজটি জেদ্দায় পৌঁছেছে শুক্রবার সকালে। এইচএমএস জুবাইল নামে ওই জাহাজে বাংলাদেশ, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, রাশিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, ঘানা, লেবানন, নাইজার, লিবিয়া, কানাডা ও গিনির মোট ৫২ জন নাগরিক ছিলেন।
 

এর আগে, বৃহস্পতিবার রাতে ২০০ জন আরোহী নিয়ে সুদান থেকে জেদ্দায় পৌঁছায় সৌদি জাহাজ এইচএমএস রিয়াদ। এতে পাকিস্তান, বাহরাইন, থাইল্যান্ড, আফগানিস্তান, ফিলিস্তিনসহ ১২টি দেশের নাগরিকরা ছিলেন।

সুদানে সংঘাত শুরুর জেরে গত ২৪ এপ্রিল থেকে বিভিন্ন দেশের নাগরিকদের উদ্ধারে হাত বাড়িয়ে দেয় সৌদি আরব। দেশটি এখন পর্যন্ত মোট ২ হাজার ৭৯৬ জনকে সুদান থেকে উদ্ধার করেছে। এদের মধ্যে মাত্র ১১৯ জন সৌদির, বাকি ২৬৭৭ জন অন্য ৭৮টি দেশের নাগরিক।
 

সৌদির এই উদ্ধার অভিযানের সবচেয়ে বড় প্রচেষ্টা ছিল ২৬ এপ্রিল। ওইদিন ৫৮টি দেশের ১ হাজার ৬৮৭ জনকে সুদান থেকে সরিয়ে নিয়েছিল তারা।

সৌদির উদ্ধার অভিযান শুধু সমুদ্রপথেই সীমাবদ্ধ নেই, আকাশপথেও চলছে সুদানে আটকেপড়া মানুষদের সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক, কর্মকর্তা, প্রবাসী নাগরিকদের নিরাপদে সরিয়ে নিতে সাহায্য করছে তারা।
 

প্রথমে এসব লোকদের জেদ্দায় নেওয়া হচ্ছে। সেখান থেকে তাদের স্বদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে।

গত ১৫ এপ্রিল থেকে সুদানে ব্যাপক লড়াই শুরু হয়। দেশটিতে কীভাবে বেসামরিক শাসন ফেরানো হবে, তা নিয়ে দুই ক্ষমতাধর সামরিক অধিনায়কের দ্বন্দ্ব থেকে এই লড়াই চলছে।

সুদানের বর্তমান সামরিক সরকার চলে মূলত সেনাপ্রধান জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহানের নেতৃত্বে। তার সঙ্গে উপনেতা হিসেবে রয়েছেন আরেকটি আধা-সামরিক বাহিনী র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) প্রধান মোহাম্মদ হামদান হেমেডটি দাগালো।
 

বেসামরিক শাসনে প্রত্যাবর্তনের পরিকল্পনা অনুযায়ী, এই দুটি বাহিনীকে একীভূত করার কথা। কিন্তু আরএসএফ তাদের বিলুপ্ত করার বিপক্ষে এবং এই পরিকল্পনা থামানোর জন্য নিজেদের বাহিনীকে রাস্তায় নামায়। এরপর থেকে এটি সেনাবাহিনী ও আরএসএফের মধ্যে একটি পূর্ণাঙ্গ লড়াইয়ে রূপ নেয়।
 

এতে এ পর্যন্ত প্রায় ৫০০ মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। আহত হয়েছেন চার হাজারেরও বেশি। সংঘাতের মধ্যে আহতদের চিকিৎসা দিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে মেডিক্যালকর্মীদের।

সুদানের এই সংঘাত বন্ধে এবং জনসাধারণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র, চীন, রাশিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও সংগঠন।


 


সিলেটভিউ২৪ডটকম/ডেস্ক/এসডি-০৩


সূত্র : জাগোনিউজ