নিজস্ব প্রতিবেদক, বড়লেখা :: মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার দাসেরবাজার আদর্শ কলেজের দ্বাদশ শ্রেণীর এক শিক্ষার্থী একই কলেজের একাদশ শ্রেণীর এক শিক্ষার্থীকে মারধর করেছে। রোববার (৩০ এপ্রিল) দুপুরে উপজেলার দাসেরবাজার এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।

এই ঘটনার জেরে ওইদিন দেড়টার দিকে মারধরের শিকার ওই শিক্ষার্থীর স্বজন ও এলাকার লোকজন বড়লেখা ও বিয়ানীবাজার উপজেলার সীমান্তবর্তী সোনাইনদী ব্রিজের ওপর অবস্থান নিয়ে সড়ক অবরোধ করে রাখেন। এতে বড়লেখা-বিয়ানীবাজার আঞ্চলিক মহাসড়কের উভয়পাশে যানবাহন আটকা পড়ে। ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়েন চালক ও যাত্রীরা। 


জনদুর্ভোগের দৃশ্য বড়লেখার চান্দগ্রাম এলাকার বাসিন্দা লন্ডনপ্রবাসী শরীফুল ইসলাম মুঠোফোনে ধারণ করায় বিয়ানীবাজার উপজেলার কতিপয় লোকজন তাকে মারধর করে ছুরিকাঘাত করেছে বলে অভিযোগ উঠে। এনিয়ে বড়লেখার চান্দগ্রাম ও বিয়ানীবাজারের বারইগ্রাম এলাকার লোকজনের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।

 খবর পেয়ে বিকেলে বড়লেখা উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা, বড়লেখা ও বিয়ানীবাজার থানার পুলিশ ও জনপ্রতিনিধিরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে উভয়পক্ষকে বুঝিয়ে বিষয়টি সমাধানের আশ্বাস দিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন।  

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বড়লেখার দাসেরবাজার আদর্শ কলেজে বড়লেখা উপজেলার পাশাপাশি পার্শ্ববর্তী সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার শিক্ষার্থীরা পড়ালেখা করে। ওই কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী বড়লেখা উপজেলার আল আমিনের সঙ্গে একই কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী বিয়ানীবাজার উপজেলার ইরফান আহমদ তানিমের সঙ্গে পূর্ববিরোধ ছিল। এর জেরে রোববার (৩০ এপ্রিল) দুপুরে দাসেরবাজার এলাকায় আল আমিন তানিমকে পেয়ে মারধর করে। বিষয়টি জানতে পেরে তানিমের স্বজনরা দাসেরবাজার এলাকায় এসে স্থানীয় লোকজনকে গালাগালি করেন। এনিয়ে তানিমের স্বজনদের সঙ্গে দাসেরবাজার এলাকার লোকজনের তর্কাতর্কি হয়। এ ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়লে তানিমের স্বজন ও এলাকার লোকজন বড়লেখা ও বিয়ানীবাজার উপজেলার সীমান্তবর্তী সোনাইনদী ব্রিজের ওপর অবস্থান নিয়ে সড়ক অবরোধ করেন। এতে বড়লেখা ও বিয়ানীবাজার আঞ্চলিক সড়কের উভয়পাশে শত শত যানবাহন আটকা পড়ে দীর্ঘ যানযটের সৃষ্টি হয়। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েন চালক-যাত্রী ও স্থানীয় লোকজন। জনভোগান্তির এই দৃশ্য চান্দগ্রাম এলাকার বাসিন্দা লন্ডনপ্রবাসী শরীফুল ইসলাম মুঠোফোনে ধারণ করায় ব্রিজের ওপাশ থেকে বিয়ানীবাজারের বারইগ্রাম এলাকার কতিপয় লোকজন তাকে ছুরিকাঘাত করেন। এনিয়ে বড়লেখার চান্দগ্রাম ও বিয়ানীবাজার উপজেলার সীমান্তবর্তী বারইগ্রামের এলাকায় চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে বিকেলে সাড়ে তিনটার দিকে বড়লেখা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুনজিত কুমার চন্দ, সহকারি কমিশনার (ভ‚মি) জাহাঙ্গীর হোসাইন, বড়লেখা থানার ওসি ইয়ারদৌস হাসান ও বিয়ানীবাজার থানা পুলিশ, জনপ্রতিনিধিরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে উভয়পক্ষকে শান্ত করে অবরোধ তুলে দেন।   

বড়লেখা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুনজিত কুমার চন্দ বলেন, দাসেরবাজার আদর্শ কলেজের দুই ছাত্রের মধ্যে কথা কাটাকাটি জেরে দুজনের এলাকার লোকজনকে মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ছাত্রদের একজনের বাড়ি বিয়ানীবাজারে এবং অপরজেনর বাড়ি বড়লেখায়। এই ঘটনা নিয়ে বিয়ানীবাজারের শিক্ষার্থীর পক্ষের লোকজন রাস্তা অবরোধ করে এবং ঘটনার চিত্র মুঠোফোনে ধারণ করায় বড়লেখার চান্দগ্রাম এলাকার একজনকে ছুরিকাঘাত করে। এতে উভয়পেক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এবং তারা রাস্তা অবরোধ করেন। পরে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে অবরোধ তুলে দিয়েছি। আগামী বুধবার উভয়পক্ষের লোকজন ও  সংশ্লিষ্টদে নিয়ে বসে বিষয়টি সমাধান করা হবে।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/লাভলু