জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক সমরেশ মজুমদার আর নেই। ভারতের স্থানীয় সময় সোমবার (৮ মে) বিকাল ৫টা ৪৫ মিনিটে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। বড় মেয়ে দোয়েল মজুমদার তার বাবার মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

১৯৪২ সালের ১০ মার্চ জন্ম নেওয়া সমরেশ মজুমদার পেয়েছেন দীর্ঘ সৃষ্টিশীল জীবন। রচনা করেছেন একের পর কালজয়ী উপন্যাস। পশ্চিমবঙ্গের বাংলাভাষী মানুষের পাশাপাশি বাংলাদেশেও তার উপন্যাস জনপ্রিয়।


ফুসফুসে সংক্রমণ নিয়ে কয়েকদিন আগে হাসপাতালে ভর্তি হন সমরেশ মজুমদার। তবে আর সেরে ওঠা হলো না এই কথাসাহিত্যিকের। ৭৯ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন।

সমরেশ মজুমদারের প্রাথমিক শিক্ষা শুরু হয় ভারতের পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়ি জেলা স্কুল থেকে। পরে ১৯৬০ সালে কলকাতায় আসেন তিনি। বাংলায় স্নাতক সম্পন্ন করেন কলকাতার স্কটিশ চার্চ কলেজ থেকে এবং মাস্টার্স সম্পন্ন করেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। কর্মজীবনে তিনি আনন্দবাজার পাবলিশার্স প্রাইভেট লিমিটেডএর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। গ্রুপ থিয়েটার এর প্রতি তার প্রচণ্ড আসক্তি ছিলো। তার প্রথম গল্প “অন্যমাত্রা” লেখাই হয়েছিলো মঞ্চনাটক হিসাবে। তার লেখকজীবনের শুরু সেখান থেকেই। দেশ পত্রিকায় ১৯৬৭ সালে অন্যমাত্রা গল্পটি ছাপা হয়েছিলো। তার প্রথম উপন্যাস “দৌড়”। এটিও ছাপা হয়েছিলো দেশ পত্রিকাতে ১৯৭৫ সালে। শুধু গল্প বা উপন্যাস নয়, ছোটগল্প, ভ্রমণকাহিনি থেকে গোয়েন্দাকাহিনি, কিশোর উপন্যাস লেখনিতে সমরেশ মজুমদারের জুড়ি মেলা ভার।

সমরেশ মজুমদারের উল্লেখযোগ্য উপন্যাসগুলির মধ্যে সাতকাহন, তেরো পার্বণ, স্বপ্নের বাজার, উজান, গঙ্গা, ভিক্টোরিয়ার বাগান, আট কুঠুরি নয় দরজা, অনুরাগ ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। তার ট্রিলজি 'উত্তরাধিকার, কালবেলা, কালপুরুষ' বাংলা সাহিত্যজগতে তাকে বিশেষ খ্যাতির অধিকারী করেছে।

জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক অনেক পুরস্কার অর্জন করেছেন সমরেশ মজুমদার। ১৯৮২ সালে আনন্দ পুরস্কার, ১৯৮৪ সালে সাহিত্য আকাদেমী পুরস্কার, বঙ্কিম পুরস্কার এবং আইয়াইএমএস পুরস্কার জয় করেছেন। চিত্রনাট্য লেখক হিসাবে জয় করেছেন বিএফজেএ, দিশারী এবং চলচ্চিত্র প্রসার সমিতির অ্যাওয়ার্ড।


সিলেটভিউ২৪ডটকম / ঢাকা টাইমস / ডি.আর