১৬ ওভারে রান ওঠলো ১০১। কিন্তু পরের ৪ ওভারেই এলো ৫৩ রান!

আফগানিস্তানের ব্যাটিংয়ের এই পাল্টা আঘাতের সঙ্গে শেষদিকে বাংলাদেশের বোলিংয়ের কিছুটা ছন্নছাড়া এখানেই স্পষ্ট।


শেষের চার ওভারের ওই ঝড়ে দুই ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথমটিতে আফগানিস্তান করেছে ৭ উইকেটে ১৫৪ রান।

টসে জিতে বোলিংয়ে নামা বাংলাদেশের শুরুটা ছিল দুর্দান্ত। নাসুম, তাসকিনদের আঘাতে একের পর এক প্যাভিলিয়নের পথ ধরছিলেন সফরকারী ব্যাটসম্যানরা। তবে মোহাম্মদ নবি ক্রিজে যাওয়ার পর থেকে বদলাতে থাকে আবহ। তার সঙ্গে আজমতউল্লাহ ও নজিবুল্লাহের দারুণ সঙ্গে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য পেয়ে যায় আফগানরা। লড়াকু ফিফটি তুলে নেন নবি।

ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে তাসকিনের বলে ফিরতে পারতেন রহমানউল্লাহ গুরবাজ। তবে অনেকটা দৌড়ে গিয়ে কঠিন ক্যাচ শেষপর্যন্ত তালুবন্দি রাখতে পারেননি রনি তালুকদার। জীবন পাওয়া গুরবাজ ওই ওভারের শেষ বলে তাসকিনকে স্কয়ার লেগ দিয়ে ছক্কায় উড়ান।

পরের ওভারের প্রথম বলেই নাসমুকে স্লগ সুইপে কাউ কর্নার দিয়ে ছক্কা হাঁকান হজরতউল্লাহ জাজাই। কিন্তু পরের বলেই স্কয়ার লেগে তাওহিদ হৃদয়ের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যেতে হয় তাকে (১০ বলে ৮)।

ইনিংসের চতুর্থ আর নিজের দ্বিতীয় ওভারের তৃতীয় বলে গুরবাজের কাছে বাউন্ডারি হজম করেন তাসকিন। আগের ওভারে ছক্কা, এই ওভারে চার খেয়ে যেন তেতে ওঠেন এই পেসার। তাসকিনের আগুনে ওই ওভারের পঞ্চম বলে বিদায় নেন গুরবাজ। তাসকিনের একটু অ্যাঙ্গেলে করা স্লোয়ারে বিভ্রান্ত হন গুরবাজ। পুল করতে গিয়ে সীমানায় ক্যাচ তুলে দেন মিরাজের হাতে। ফেরার আগে ১১ বলে দুই চার, এক ছয়ে ১৬ রান করে যান গুরবাজ।

পরের ওভারে শরিফুল ইসলাম এসে তৃতীয় বলে ছক্কা হজম করেন ইবরাহিম জাদরানের কাছে। তবে পরের ব্যাক অব লেন্থের বলে অতিরিক্ত বাউন্সে পরাস্ত হয়ে উইকেটের পেছনে লিটনের হাতে ক্যাচ দেন জাদরান (৬ বলে ৮)। ওয়ানডে সিরিজের তিন ম্যাচেও ইবরাহিম জাদরানকে আউট করেছিলেন শরিফুল!

অষ্টম ওভারে সাকিবকে ছক্কায় উড়াতে গিয়ে বল আকাশে তুলে দেন করিম জানাত। মিড অফে দারুণ ক্যাচ নেন শান্ত।

মোহাম্মদ নবির সঙ্গে নজিবুল্লাহ জাদরানের জুটি জমে ওঠেছিল। সেই জুটি ভাঙেন মিরাজ। চতুর্দশ ওভারের চতুর্থ বলে মিরাজকে বাউন্ডারিতে পাঠান নজিবুল্লাহ জাদরান। তবে পরের বলেই পাল্টা আঘাত হানেন মিরাজ। স্কুপ করতে গিয়ে সিদ্ধান্ত বদলে ড্যাব করতে যান নজিবুল্লাহ। গড়বড় হয়ে যাওয়ায় ইনসাইড-এজে বল প্যাডে লেগে ক্যাচ ওঠে। উইকেটের পেছনে থাকা লিটন ক্ষিপ্রতায় ডাইভ দিয়ে দারুণ ক্যাচ নেন। তিন চারে ২৩ বলে ২৩ রান করেন নজিবুল্লাহ। তার বিদায়ে নবির সঙ্গে ৩৭ বলে ৩৫ রানের জুটিও ভাঙে।

ইনিংসের ৮৭ রানে পঞ্চম উইকেট হারানোর পর দারুণ প্রতিরোধ গড়ে তুলে আফগানরা। প্রত্যয়ী মোহাম্মদ নবির সঙ্গে যোগ দিয়ে আজমতউল্লাহ ওমরজাই হয়ে ওঠেন আগ্রাসী। নবি তাসকিনের একই ওভারে দুবার বল পাঠান গ্যালারিতে। আজমতউল্লাহ মোস্তাফিজকে ছক্কা হাঁকান লং অফ দিয়ে।

উনিশতম ওভারে সাকিবের প্রথম দুই বলকেই উড়িয়ে দেন আজমতউল্লাহ। তৃতীয় বলে ডাবলের পরের দুই বল ডট। শেষ বলে ফের উড়াতে যান আজমতউল্লাহ। তবে এবার গড়বড় হয়ে যায় টাইমিংয়ে। অনেকটা দৌড়ে এসে শর্ট থার্ডে দারুণ ক্যাচ নেন তাসকিন। ১৮ বলে চার ছয়ে ৩৩ রানে থামেন আজমতউল্লাহ।

মোহাম্মদ নবির সঙ্গে আজমতউল্লাহর জুটিতে ৩৭ বলে আসে ৫৬ রান।

দুর্দান্ত খেলা নবি শেষ ওভারের তৃতীয় বলে মোস্তাফিজকে বাউন্ডারিতে পাঠিয়ে তুলে নেন ৩৯ বলে ফিফটি।

শেষ ওভারের পঞ্চম বলে রশিদ খান ফিরে যান লং অনে শান্তর হাতে ক্যাচ দিয়ে। ৭ উইকেট ১৫৪ রানে থামে আফগানিস্তান।

নাসুম ৩ ওভারে ২০ রানে ১টি, তাসকিন ৪ ওভারে ২৯ রানে ১টি, সাকিব ৪ ওভারে ২৭ রানে ২টি, মিরাজ ২ ওভারে ১৩ রানে ১টি, শরিফুল ৩ ওভারে ৩০ রানে ১টি এবং মোস্তাফিজ ৪ ওভারে ৩১ রানে ১টি উইকেট নেন।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/আরআই-কে