এখন থেকে একটি লাইসেন্সের আওতায় ৫জিসহ সব ওয়্যারলেস মোবাইল সেবা দিতে পারবে অপারেটররা। সে লক্ষ্যে দেশের তিন মোবাইল অপারেটরের কোম্পানিকে একীভূত লাইসেন্স দিয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। এর মাধ্যমে আগের ২জি, ৩জি, ৪জি প্রযুক্তি ও তরঙ্গ ফির জন্য আলাদা লাইসেন্স এবং নির্দেশিকা পরিবর্তে সব বিষয়কে এক লাইসেন্সের আওতায় আনা হয়েছে।

 


সোমবার (১১ মার্চ) বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের বিটিআরসি ভবনের প্রধান সম্মেলন কক্ষে এ লাইসেন্স অপারেটরদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
 

বিটিআরসির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ‘বাংলাদেশে সেলুলার মোবাইল পরিষেবার জন্য নিয়ন্ত্রক এবং লাইসেন্সিং নির্দেশিকা’ গাইডলাইনের আলোকে এ লাইসেন্স হস্তান্তর করা হয়েছে। এর ফলে টেলিযোগাযোগ খাতের উন্নয়ন এবং ৫জিসহ পরবর্তী প্রজন্মের প্রযুক্তিগত সুবিধা বাড়বে। শুরুতে মোবাইল অপারেটর গ্রামীণফোন লিমিটেড, রবি আজিয়াটা লিমিটেড এবং টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেডকে প্রযুক্তি নির্বিশেষে একক লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে।

 

লাইসেন্স হস্তান্তর অনুষ্ঠানে বিটিআরসির চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. মহিউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি  প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।

 

প্রতিমন্ত্রী বলেন, বিটিআরসির সময়োপযোগী সিদ্ধান্তে বর্তমানে টেলিযোগাযোগ খাতে ১৯ কোটি মোবাইল গ্রাহক এবং প্রায় ১৩ কোটি ইন্টারনেট গ্রাহক রয়েছে। একীভূত লাইসেন্স প্রদানের সিদ্ধান্ত টেলিযোগাযোগ খাতে ইতিবাচক ফলাফল বয়ে আনবে। অপারেটররা আগামীতে গ্রাহককে উচ্চগতির ওয়্যারলেস ইন্টারনেট সুবিধা প্রদান করতে পারবে।
 

তিনি বলেন, বহুমাত্রিক সেবা দেওয়ার সুযোগ থাকায় অপারেটরগুলো তাদের বিনিয়োগের সুফল পাবে এবং সরকারের রাজস্ব আহরণও বাড়বে। ভয়েস কলের পাশাপাশি ডাটার ব্যবহার বাড়ছে জানিয়ে অপারেটরদের ডিজিটাল প্রোডাক্ট চালুর পরামর্শ দেন প্রতিমন্ত্রী।
 

সভাপতির বক্তব্যে বিটিআরসি চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, টেলিযোগাযোগ প্রযুক্তি বর্তমানে এতটাই বিস্তৃতি লাভ করেছে যে দেশে প্রতিনিয়ত মোবাইল সংযোগ ও ইন্টারনেট গ্রাহক সংখ্যা বাড়ছে। ৫জি প্রযুক্তি বাস্তবায়নের জন্য ইতোমধ্যে অপারেটরদের অনুকূলে তরঙ্গ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে এবং একীভূত লাইসেন্স প্রদানের ফলে ৫জিসহ নতুন প্রযুক্তিগত সেবা প্রদানে জটিলতা থাকবে না। একীভূত লাইসেন্সের আওতায় যেসব সেবা প্রদানের সুযোগ রয়েছে মোবাইল অপারেটরগুলোকে তা দ্রুততার সঙ্গে বাস্তবায়ন করার আহ্বান জানান তিনি।
 

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বিটিআরসির স্পেকট্রাম বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান জুয়েল। উপস্থিত ছিলেন বিটিআরসির অন্যান্য বিভাগের প্রধানসহ গ্রামীণফোন লিমিটেডের গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ইয়াসির আজমান, রবির চিফ কর্পোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অফিসার মোহাম্মদ সাহেদুল আলম, টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে এম হাবিবুর রহমান।
 

উল্লেখ্য, ১৯৯৬ সালে প্রথমবারের মতো ২জি লাইসেন্স নামে বাণিজ্যিকভিত্তিতে সেলুলার মোবাইল সেবা সংক্রান্ত লাইসেন্স প্রদান করা হয়। যা ২০১১ সালে ১৫ বছরের জন্য ২০২৬ সাল পর্যন্ত নবায়ন দেওয়া হয়। ২০১৩ সালে চার মোবাইল অপারেটরকে ২০২৮ সাল মেয়াদ পর্যন্ত ৩জি লাইসেন্স দেওয়া হয়। পরবর্তীতে ২০১৮ সালে ২০৩৩ সাল পর্যন্ত চার অপারেটরের অনুকূলে ৪জি লাইসেন্স দেওয়া হয়। বর্তমানে ওই লাইসেন্সগুলোর আওতায় দেশে সেলুলার মোবাইল সেবা প্রদান করা হচ্ছে।

 

সিলেটভিউ২৪ডটকম/ডেস্ক/এনটি