ওসমানী হাসপাতালে গুরুতর আহত একজনকে ধরে স্বজনের আহাজারি। ছবি : শহিদুল ইসলাম সবুজ

পনের দিন আগে বিয়ে হয়েছে জৈন্তাপুরের চিকনাগুল এলাকার যাত্রগোল (ঠাকুরের মাটি) গ্রামের সন্তোষ পাত্রের স্ত্রী মঙ্গলি পাত্রের মেয়ের। আজ সোমবার (১৮ মার্চ) তাদের জামাইয়ের বাড়িতে বৌ-ভাতে যাওয়ার কথা। যাওয়ার জন্য ৫টি লেগুনা করে রওয়ানাও দিয়েছিলেন কনের অর্ধশতাধিক স্বজন। 

 


 


কিন্তু তারা জানতেন না, পথে অপেক্ষা করছে মৃত্যুদূত। চিকনাগুল থেকে উপজেলার মোকামপুঞ্জি যাওয়ার পথে প্রথম লেগুনোর সঙ্গে একটি পিকআপের মুখোমুখি সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত দুই শিশুসহ ৬ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। আর আহতদের মধ্যে অন্তত ৩ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

 

 


সোমবার দুপুর ১২টার দিকে জৈন্তাপুরে সিলেট-তামাবিল সড়কে পল্লি বিদ্যুৎ সমিতি-২-এর সামনে পিকআপ ও লেগুনা গাড়ির মুখোমুখি সংঘর্ষে দুই শিশুসহ ৫ জন নিহত হয়েছেন। এতে ঘটনাস্থলেই চারজন ও হাসপাতালে নেওয়ার পর একজন মারা যান।

 

 

নিহতরা হলেন- জৈন্তাপুরের চিকনাগুল এলাকার যাত্রগোল (ঠাকুরের মাটি) গ্রামের সন্তোষ পাত্রের স্ত্রী মঙ্গলি পাত্র (৫৫), একই গ্রামের নন্ত পাত্রের স্ত্রী সাবিত্রি পাত্র (৩৫), কুষ পাত্রের স্ত্রী সুচিতা পাত্র (৩৫), সুভেন্দ্র পাত্রের মেয়ে ঋতু পাত্র (৮) ও সুচিতা পাত্রের ৬ মাস বয়েসি মেয়েসন্তান বিজলী। 

 

 


আহতরা হলেন- মৃত নিপেন্ত্র পাত্রের স্ত্রী শ্যামলা পাত্র (৫৫), সুভেন্দ্র পাত্রের স্ত্রী প্রণতি পাত্র (৩৫) কুষ পাত্র (৪০) ও তার ২ ছেলে এবং লেগুনাচালক। তাদেরকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

 

 


প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্র জানায়, দুপুর ১২টার দিকে জৈন্তাপুরে তামাবিল সড়কে পল্লি বিদ্যুৎ সমিতি-২-এর সামনে সিলেটগামী গরুবোঝাই পিকআপের (সিলেট-মেট্রো-ন ১১-২২৬৪) সঙ্গে বিপরীত দিক থেকে আসা লেগুনার (সিলেট-ছ ১১-১২৫২) মুখোমুখি সংঘর্ষ হলে ঘটনাস্থলেই মঙ্গলি পাত্র, সুচিতা পাত্র, শিশু ঋতু পাত্র ও বিজলী মারা যান।

 

 


খবর পেয়ে হাইওয়ে ও থানাপুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে হতাহতদের উদ্ধার করে ওসমানী হাসপাতালে প্রেরণ করে। ওসমানীতে নেওয়ার পর সাবিত্রি পাত্র মারা গেছেন।

 

 


এদিকে, দুর্ঘটনায় আহত ৬ জন ওসমানী হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। আহতদের মধ্যে ৩ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক এবং একজন আইসিইউতে আছেন।

 

 


৬ জন নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জৈন্তাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাজুল ইসলাম (পিপিএম)। তিনি বলেন- দুর্ঘটনার পর সিলেট-তামাবিল সড়ক অবরোধ করেন স্থানীয়রা। এসময় সড়কটিতে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। পুলিশ প্রায় দেড় ঘণ্টার প্রচেষ্টায় অবরোধ তুলে যান চলাচল স্বাভাবিক করে।

 

 

সিলেটভিউ২৪ডটকম / ডালিম