শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে বাংলাদেশকে নিয়ে খুব ভালো কিছুর প্রত্যাশা ছিল না বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের। কিন্তু দল এতটা বাজে খেলবে, তা ভাবতেও পারেননি তিনি। সিলেট টেস্টে বাংলাদেশের খেলার ধরন, ব্যাটসম্যানদের শট নির্বাচন ও মানসিকতা নিয়ে ক্রিকেটারদের স্রেফ ধুয়ে দিলেন বাংলাদেশ ক্রিকেটের নিয়ন্তা সংস্থার প্রধান।


আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের অংশ এই সিরিজের প্রথম টেস্টে ৩৩৮ রানে হেরেছে বাংলাদেশ। দুই ইনিংসের কোনোটিতে দল পারেনি দুইশ ছুঁতে। গোটা ম্যাচে ফিফটি স্পর্শ করতে পারেন কেবল একজন ব্যাটসম্যান, ফিফটি জুটি ছিল মোটে একটি। শেষ ইনিংসে বিশাল লক্ষ্য তাড়ায় একের পর এক ব্যাটসম্যান উইকেট ছুড়ে এসেছেন বাজে শটে। লড়াইয়ের তাড়না খুব একটা দেখা যায়নি তাদের পারফরম্যান্সে।



অভিজ্ঞতার দিক থেকে অবশ্য শ্রীলঙ্কার চেয়ে কিছুটা পিছিয়েই ছিল বাংলাদেশ। চোটের কারণে সিরিজ থেকে ছিটকে গেছেন মুশফিকুর রহিম, বিশ্রামে ছিলেন সাকিব আল হাসান। তামিম ইকবালের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের তো শেষ বলেই ধরে নেওয়া যায়।


দেশের মাঠে সাধারণত যে ধরনের উইকেটে খেলে থাকে বাংলাদেশ, এবার সিলেটের পিচও সেদিক থেকে ছিল ব্যতিক্রম। উইকেটে ছিল ঘাসের ছোঁয়া, পেসারদের জন্য ছিল সহায়তা। নিজেরা এই ধরনের উইকেট বেছে নিলেও তাতে মানিয়ে নিতে পারেনি নাজমুল হোসেন শান্তর দল।


এই ব্যাপারগুলি তুলে ধরলেন নাজমুল হাসানও। বিসিবিতে মঙ্গলবার সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বিসিবি সভপতি বললেন, দলের পরাজয় নিয়ে তার দুর্ভাবনার জায়গা খুব একটা নেই।


“সবার কাছে যেমন লেগেছে, আমার কাছেও তেমনই। ভালো লাগার কোনো কারণ নেই অবশ্যই। হারা-জেতা নিয়ে আমার অতটা ভাবনা নেই। অন্যান্য দেশেও যখন তাদের অভিজ্ঞ ক্রিকেটাররা চলে যায়, নতুন একটা দল আসে, তারা চার-পাঁচ বছর ভুগতে থাকে। সেদিক থেকে বলব আমাদের দলের অবস্থা অতটা খারাপ হয় নাই, যতটা খারাপ অন্য দেশের হয়েছে। সেদিক দিয়ে মোটামুটি ভালো আছে।”


“দ্বিতীয়ত, উইকেট। পুরো অন্য ধরনের উইকেটে আমরা এখন খেলার চেষ্টা করছি। যারা খেলছে, তাদের জন্য নতুন অভিজ্ঞতা। পরের ধাপে যাওয়ার জন্য যা যা করা দরকার, আমরা করছি। কাজেই হারা-জেতাটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। কী হয়েছে, সেটা নিয়ে আমি একেবারেই চিন্তিত নই। এটা যে একেবারেই অপ্রত্যাশিত ছিল, তাও নয়। টেস্টে শ্রীলঙ্কার সঙ্গে জিতবই, ওরকম আত্মবিশ্বাস ছিল, এটা বলা ঠিক হবে না। আসলেই ছিল না।”


বিসিবি সভাপতির আপত্তি দলের খেলার ধরন নিয়ে। এভাবে অসহায় আত্মসমপর্ণ, কোনো তাড়না না দেখানো, উইকেট বিলিয়ে আসা, এসব মানতেই পারছেন না তিনি।


“সমস্যা এখানে হারা নিয়ে নয়। সমস্যা হচ্ছে, যেভাবে তারা হেরেছে। যেভাবে তারা খেলেছে, তাদের যে মাইন্ডসেট, অ্যাটিটিউড, শট নির্বাচন, এটা জঘন্য, বিচ্ছিরি ছিল দেখতে। মনে হয়েছে, হয় তারা এই সংস্করণ খেলতে চায় না, অথবা অন্য কোনো সমস্যা। এটা নিয়ে আমরা কষ্ট পেয়েছি।”


“এই ধরনের শট নির্বাচন, এই ধরনের মাইন্ডসেট, এটা টেস্টে যায় না। এরা কেউ বাচ্চা ছেলে নয় যে হঠাৎ করে আজকে মাঠে নেমেছে এবং এসব বলে দিতে হবে। তারা প্রত্যেকে জানে। এসব নিয়েই আমাদের মন খারাপ হয়েছে।

 


সিলেটভিউ২৪ডটকম/বিডিনিউজ/ নাজাত