হাকালুকি হাওরের জলমহাল ইজারা নীতিমালার শর্ত ভঙ্গ করে বিভিন্ন বিলের পাড়ে মেশিন বসিয়ে বিল শুকিয়ে অবৈধভাবে মাছ আহরণ করছে কতিপয় ইজারাদার। বিল শুকিয়ে মাছ আহরণের হিড়িক পড়লেও প্রশাসন যেন নির্বিকার।

 


এতে দ্রুত মাছের প্রজাতি বিলুপ্তি ও জীববৈচিত্র্য হুমকির সম্মুখীন। অবাধে বিল সেচে মাছ আহরণকারী ইজারাদারই ঘুরেফিরে পুনরায় জলমহাল ইজারা পাচ্ছে। এতে তারা আরও বেপরোয়া হয়ে নিধন চালাচ্ছে হাওরের মৎস্য সম্পদের, জলজ উদ্ভিদের ও জীববৈচিত্র্যের।

 

জানা গেছে, হাকালুকি হাওরে প্রায় পৌনে ৩শ’ জলমহাল রয়েছে। এর মধ্যে ৮টি মৎস্য অভয়াশ্রম রয়েছে। অভয়াশ্রম ব্যতীত বিলগুলো উপজেলা প্রশাসন, জেলা প্রশাসন ও ভূমি মন্ত্রণালয় পর্যায়ক্রমে লিজ দিয়ে থাকে। মূলত প্রভাবশালী ব্যক্তিরাই মৎস্যজীবী সমবায় সমিতিকে ব্যবহার করে জলমহাল ইজারা নিয়ে থাকেন। এসব প্রভাবশালীদের অনেকেই অধিক লাভের আশায় ইজারা শর্তভঙ্গ করে জলমহাল শুকিয়ে মাছ আহরণ করেন। এতে দিন দিন দেশীয় মাছ হারিয়ে যাচ্ছে। বিলুপ্ত হচ্ছে জলজ উদ্ভিদ ও কীটপতঙ্গ।

 

সরেজমিনে দেখা গেছে, হাকালুকি হাওরপাড়ের ঝগড়ি গ্রামে প্রায় ৩৬ একর আয়তনের শিয়ালী ঝগড়ি বিলের পাড়ে দুটি মেশিন বসিয়ে বিল সেচ দিচ্ছে ইজারাদারের লোকজন। বিল শুকিয়ে মাছ আহরণের কারণে বিলে থাকবে না কোনো মা মাছ। 

 

এর আগে কাত্তিজাউরি বিল শুকিয়ে মাছ আহরণ করেছে সংশ্লিষ্ট ইজারাদার। এতে মাছের বংশ ধ্বংসের পাশাপাশি জলজ উদ্ভিদও ধংস হচ্ছে। শিয়ালী ঝগড়ি বিলে দুইটি বড় আকারের পানির পাম্পে পানি সেচের কাজ চলতে দেখা গেছে। বিলের প্রায় ৭৫ ভাগ অংশ শুকিয়ে গেছে।


পানি সেচের কাজে থাকা লোকজন জানান, এই বিলটি ইজারা নিয়েছে উজানভাটি মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি। এর সভাপতি আব্দুল শুক্কুর, একরাম আলী ও সাহাব উদ্দিন তাদেরকে পানি সেচের কাজে লাগিয়েছেন। হাওরের আরও কয়েকটি জলমহাল সেচে মাছ আহরণ করতে দেখা গেছে।

 

বড়লেখা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান জানান, জলমহাল শুকিয়ে মাছ আহরণের কোনো নিয়ম নেই। ইজারা শর্তভঙ্গের দায়ে সংশ্লিষ্ট ইজাদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যায়। তিনি খোঁজ নিয়ে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেবেন। 

 

সিলেটভিউ২৪ডটকম/ নোমান