বিগত ৭ই জানুয়ারী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার পর থেকেই সিলেটের প্রবাসী অধ্যুষিত বিশ্বনাথে আসন্ন ‘৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন’র জমঝমাট হওয়ার আবাস শুরু হয়ে ছিলে। প্রতি নির্বাচনের মতো এবারও উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে সম্ভাব্য প্রতিদ্বন্দি প্রার্থীদের তালিকায় প্রবাসীদের সংখ্যাই রয়েছেন বেশি। দলীয় নির্বাচন না হলেও, সব দলের প্রার্থীদের অংশগ্রহনে ‘বিশ্বনাথ উপজেলা পরিষদ’ নির্বাচন জমে উঠার আবাস রয়েছে নির্বাচনী মাঠে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রেশ কাটতে না কাটতেই ‘উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে’ চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দিতা করতে ইচ্ছুক প্রার্থীদের গ্রাম থেকে শহরে চলছে সরব প্রচার-প্রচারণা।

 


দলীয় প্রতীক ছাড়া এবারের উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার ফলে শুরুর দিকে প্রচার-প্রচারণায় থাকা উপজেলা চেয়ারম্যান পদের প্রার্থীদের মধ্যে যেমন ইতিমধ্যে কিছু সংখ্যক সড়ে দাঁড়িয়েছেন, তেমনি আবার নতুন কিছু প্রার্থীও প্রচার-প্রচারণার সাথে যুক্ত হয়েছেন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি অংশ না নিলেও আসন্ন ‘বিশ্বনাথ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে’ প্রতিদ্বন্ধিতার প্রচার-প্রচারণায় রয়েছেন বিএনপি ঘরণার ৪ জন প্রার্থী। প্রার্থীদের ওই তালিকায় রয়েছেন জাতীয় পার্টি, জামায়াত, আঞ্জুমানে আল-ইসলাম’র রাজনীতির সাথে যুক্ত থাকা প্রার্থীরা। তবে সব চেয়ে বেশি ৬ জন প্রার্থী রয়েছেন ক্ষমতাশীন দল আওয়ামী লীগে।

 

১৯৮৫ সাল থেকে শুরু হওয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে এখনও পর্যন্ত প্রবাসী অধ্যুষিত ‘বিশ্বনাথ উপজেলায়’ প্রবাসী ছাড়া কেউই উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হতে পারেননি। বিগত ৫টি নির্বাচনে ৪ জন প্রবাসী নির্বাচিত হন। প্রথম ও তৃতীয় নির্বাচনে উপজেলা চেয়ারম্যান হন মুহিবুর রহমান, দ্বিতীয় নির্বাচনে দেওয়ান শমসের রাজা, চতুর্থ নির্বাচনে সুহেল আহমদ চৌধুরী ও পঞ্চম নির্বাচনে এস এম নুনু মিয়া। ২০০৯ সালে অনুষ্ঠিত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে যুক্তরাজ্য প্রবাসী গৌছ খান ‘প্রথম ভাইস চেয়ারম্যান’ হিসেবে নির্বাচিত। এক কথায় বিশ্বনাথের স্থানীয় নির্বাচন যেনো প্রবাসী ছাড়া চলেই না।

 

আগামী ৮ই মে নির্বাচন বিশ্বনাথ উপজেলায় ১ লাখ ৮৪ হাজার ১৪৯ জন (পুরুষ ৯৪ হাজার ৬৬৪ জন ও নারী ৮৯ হাজার ৪৮৫ জন) ভোটার ৭৪টি ভোট কেন্দ্রে নিজের ভোটাধিকার প্রয়োগ করে ৫ বছরের জন্য নিজেদের পছন্দের প্রার্থীকে উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত করবেন। সেই নির্বাচিত ব্যক্তি বিশ্বনাথ উপজেলাবাসীকে কাঙ্খিত উন্নয়ন উপহার দেবেন নাকি উন্নয়ন বাণিজ্য করে নিজের আখের গুছাবেন, তা অবশ্য জানেন না কোন ভোটারই। তাই এবারের নির্বাচনে অনেক সর্তক অবস্থানে রয়েছেন ভোটাররা, যাতে করে সত্যিকার একজন জনপ্রতিনিধিকে নিজেদের অভিভাবক হিসেবে নির্বাচিত করা যায়।

 

নির্বাচনে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দি প্রার্থীদের মধ্যে আওয়ামী লীগ ঘরণার তালিকায় রয়েছে উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের উপদেস্টা মন্ডলীর সদস্য যুক্তরাজ্য প্রবাসী এস এম নুনু মিয়া, জেলা পরিষদের সদস্য ও উপজেলা আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট গিয়াস উদ্দিন আহমেদ, বিশ্বনাথ পৌর আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহবায়ক আলতাব হোসেন, কার্যনির্বাহী সদস্য ও যুক্তরাজ্যের ডরসেট আওয়ামী লীগের সভাপতি যুক্তরাজ্য প্রবাসী আব্দুল রোশন চেরাগ আলী, যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য ও যুবলীগের সহ সভাপতি যুক্তরাজ্য প্রবাসী শমসাদুর রহমান রাহিন, যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী আওয়ামী লীগ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী এনাম।

 

উপজেলা চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দি প্রার্থীদের মধ্যে বিএনপি ঘরণার তালিকায় রয়েছে উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা বিএনপির সাবেক সহ সভাপতি যুক্তরাজ্য প্রবাসী সুহেল আহমদ চৌধুরী, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক যুক্তরাজ্য গৌছ খান, যুক্তরাজ্য বিএনপির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ও বিশ্বনাথ স্পোটর্স ডেভোলাপমেন্ট ট্রাস্ট ইউকের যুগ্ম সম্পাদক যুক্তরাজ্য প্রবাসী সেবুল মিয়া, যুক্তরাজ্য প্রবাসী বিএনপি নেতা সফিক উদ্দিন।

 

উপজেলা চেয়ারম্যান পদে এছাড়া প্রতিদ্বন্দি প্রার্থীদের তালিকায় রয়েছেন উপজেলা পরিষদের বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা আঞ্জুমানে আল-ইসলাহ’র সাধারণ সম্পাদক মাওলানা হাবিবুর রহমান, জেলা খেলাফত মজলিসের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল ওয়াদুদ, উপজেলা জামায়াতে ইসলামের আমীর ও খাজাঞ্চী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন সিদ্দিকী, উপজেলা জাতীয় পার্টির আহবায়ক জয়নাল আহমদ মিয়া, ফ্রান্স প্রবাসী জাতীয় পার্টি নেতা জয়নাল আবেদীন।

 

 

সিলেটভিউ২৪ডটকম/নাজাত