মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে সমতলভূমিতে বসবাসরত অনগ্রসর ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর আর্থসামাজিক ও জীবন মানোন্নয়নের লক্ষ্যে সমন্বিত প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী পরিবারের মধ্যে ২০টি করে মুরগি বিতরণে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।


প্রকল্পটির সুফলভোগীদের মধ্যে সোনালি বা দেশি জাতের সুস্থ মুরগি দেওয়ার কথা থাকলেও দেওয়া হচ্ছে কক ও ব্রয়লার জাতের মুরগি। ওজন ৮০০ গ্রাম থেকে ১ কেজি হওয়ার কথা থাকলেও দেওয়া হচ্ছে ৩০০-৪০০ গ্রাম ওজনের মুরগি। এতে সুফলভোগীদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।



গত সোমবার উপজেলার আদমপুর ইউনিয়নে ওজন ছোট ও ব্রয়লার জাতের মুরগি দেওয়া হচ্ছে এমন মৌখিক অভিযোগ পেয়ে তাৎক্ষণিক মুরগি বিতরণ বন্ধ কয়ে দেন জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা। অভিযোগ রয়েছে, ঠিকাদার ও স্থানীয় প্রাণিসম্পদ দপ্তরের যোগসাজশে এ অনিয়ম করা হচ্ছে।


খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে সমতলভূমিতে বসবাসরত অনগ্রসর ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর ১ হাজার ৪৯২ জন সুফলভোগীর মধ্যে ২০টি করে মোট ২৯ হাজার ৮৪০টি মুরগি ও খাদ্য উপকরণ বিতরণ শুরু হয়েছে। প্রাণিসম্পদ দপ্তরের প্রধান কার্যালয় থেকে দরপত্রের মাধ্যমে ঢাকার জেনটিক ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কমলগঞ্জে এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। প্রকল্পে ২০টি করে সোনালি কিংবা দেশি জাতের ৮০০ গ্রাম থেকে এক কেজি ওজনের সুস্থ মুরগি দেওয়ার কথা থাকলেও বাস্তবে অসুস্থ এবং কম ওজনের ব্রয়লার মুরগি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

 

গত সোমবার বিকেলে উপজেলার আদমপুর ইউনিয়নের মুরগি বিতরণকালে সরেজমিনে দেখা যায়, ইউনিয়ন পরিষদের সম্মুখে গাড়িতে করে কক ও ব্রয়লার জাতের অসুস্থ ছোট আকৃতির মুরগি নিয়ে আসা হয়েছে বিতরণের জন্য। মুরগিগুলোর ওজন ৩০০ থেকে ৪০০ গ্রাম হবে। আবার কোনো কোনো মুরগির ওজন ২৫০ গ্রামেরও কম। ওজনে কম থাকায় মুরগি নিতে না চাইলেও সুফলভোগীদের মধ্যে জোরপূর্বক বণ্টন করা হয় মুরগিগুলো। এ সময় সুফলভোগীরা সাংবাদিকদের মাধ্যমে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাকে অবগত করলে তিনি মুরগি বিতরণ বন্ধ করে দেন। আদমপুরে মুরগি নিতে আসা সুফলভোগী থৈবি বিবি, গুলেরজন বেগম ও রমিজ উদ্দিন দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আমরা কোনো মুরগি পাইনি। কাগজে স্বাক্ষর নিলেও মুরগি দেওয়া হয়নি। মুরগি ছোট হওয়ায় গাড়ি ফেরত নিয়ে যাওয়া হয়।’

 

এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত এক সপ্তাহে কমলগঞ্জ সদর, রহিমপুর, শমশেরনগর, মাধবপুর ও পৌরসভা এলাকায় বিতরণকৃত মুরগির বেশিরভাগই মারা গেছে।

 

এ বিষয়ে জানতে অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা কমলগঞ্জ উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ড. রমাপদ দে’র মুঠোফোনে একাধিকবার কল করেও পাওয়া যায়নি। তবে মৌলভীবাজার জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘মুরগি বণ্টনে অনিয়মের বিষয়টি জেনে তাৎক্ষণিক মুরগি বিতরণ বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।’

 

সিলেটভিউ২৪ডটকম/ নোমান