পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে গত ২৪ মার্চ আন্তঃনগর ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু করে বাংলাদেশ রেলওয়ে। শুক্রবার (২৯ মার্চ) সকাল ৮টায় বিক্রি শুরু হয়েছে ৮ এপ্রিলের আন্তঃনগর ট্রেনের অগ্রিম টিকিট। এটি ট্রেনে ঈদযাত্রার ষষ্ঠ দিন। ঈদ উপলক্ষে আগামী ৩ এপ্রিল থেকে ট্রেনে যাত্রা শুরু হবে।

 


সকাল ৮টা থেকে বিক্রি হয়েছে পশ্চিমাঞ্চলের ট্রেনের টিকিট এবং দুপুর ২টা থেকে বিক্রি শুরু হয় পূর্বাঞ্চল অর্থাৎ সিলেট অঞ্চলের ট্রেনের টিকিট।

 

ট্রেনের অগ্রিম টিকিট অনলাইনে বিক্রির কারণে সিলেটে রেলস্টেশনের কাউন্টারে নেই উপচে পড়া ভিড়ে। অনলাইনে বিক্রির কারণে এখন সেই চিত্র বদলেছে। তবে টিকিট পেতে এখন সিলেটের মানুষকে যুদ্ধ করতে হচ্ছে অনলাইনে।

 

রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, টিকিট ছাড়ার প্রথম আধা ঘণ্টায় এক কোটির কাছাকাছি বার টিকিট কাটার চেষ্টা বা হিট হয়েছে। ২৮ মার্চ বিক্রি হয়েছে ৭ এপ্রিলের টিকিট। এদিন সকালে ট্রেনের পশ্চিমাঞ্চলে টিকিট বিক্রি শুরুর প্রথম আধঘণ্টায় ৯৪ লাখ বার এবং বিকেলে পূর্বাঞ্চল অর্থাৎ সিলেটে অঞ্চলে টিকিট বিক্রির প্রথম আধঘণ্টায় ৭৪ লাখ ৫০ হাজার হিট হয়েছে। এর আগের দিন পশ্চিমাঞ্চলের টিকিটের জন্য সকালের প্রথম আধঘণ্টায় কোটির আশপাশে এবং পূর্বাঞ্চলে প্রথম আধঘণ্টায় ৫০ লাখের মতে হিট হয়েছে।


ট্রেনের অগ্রিম টিকিটের শতভাগ অনলাইনে বিক্রি করা হলেও সেটা চাহিদার তুলনায় কম। প্রতিদিন যে পরিমাণ টিকিট অনলাইনে ছাড়া হয়, টিকিটপ্রত্যাশী থাকেন তার চেয়ে অনেক বেশি। বিশেষ করে সকালে ট্রেনের টিকিট বিক্রি শুরু হওয়ার প্রথম আধঘণ্টায় একেকটি টিকিট পেতে গড়ে ৬০০ জন চেষ্টা চালান। প্রতিদিন কমপক্ষে চার লাখ টিকিটের চাহিদা থাকে। আন্তনগর ট্রেনের ৩০ হাজারের কিছু বেশি টিকিট প্রতিদিন বিক্রি করা হচ্ছে। ফলে অনেকে টিকিট পাচ্ছেন না।


যাত্রীরা বলছেন, পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট কিনতে সাহ্‌রি খেয়েই লোকজন চলে আসতেন রেলস্টেশনে। উপচে পড়া ভিড়ে দীর্ঘ অপেক্ষার পর মিলত টিকিট। ট্রেনের অগ্রিম টিকিট অনলাইনে বিক্রির কারণে এখন সেই চিত্র বদলেছে। আগে মশার কামড় খেয়ে রাত জেগে কয়েক ঘণ্টা পার করতাম। তারপরও অনেক সময় টিকিট পেতাম না। এখন অনলাইনে যেকোনো জায়গা থেকে টিকিট কাটা যায়। তবে অনেক সময় অ্যাপে প্রবেশ করা যায় না।


তবে অনলাইন টিকিট বিক্রি নিয়ে যাত্রীদের অভিযোগও রয়েছে। অনেকেই জানান অনলাইনে সবাই টিকিট পাচ্ছেন না। নির্ধারিত গন্তব্য ও ট্রেনের আসন ফাঁকা রয়েছে দেখালেও সেই টিকিট কাটতে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।


সিলেট রেলওয়ে স্টেশনের স্টেশন ম্যানেজার নুরুল ইসলাম সিলেটভিউকে জানান, ঈদযাত্রায় ট্রেনের শতভাগ টিকিট অনলাইনে বিক্রি হওয়ায় কাউন্টারগুলোতে কোন চাপ নেই। ঈদের টিকিটের জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার দুর্ভোগ কমাতে এবং কালোবাজারি বন্ধে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। অনলাইনে টিকিট নিয়ে এখন পর্যন্ত কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি। যেহেতু অনলাইনে টিকিট বিক্রি হচ্ছে এবং সেটি নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে ঢাকা থেকে তাই কেউ টিকিট না পেলে আমাদের কিছু করার থাকছে না এখানে। একটি টিকিটের বিপরীতে একসঙ্গে অনেকে কেনার চেষ্টা করছেন। তাঁদের মধ্যে একজন সফল হলেও অন্যরা টিকিট পাচ্ছেন না। তবে যাত্রীদের ঈদযাত্রা ভোগান্তিহীন করতে আমরা সব প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।


এবার ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ২৪ মার্চ ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে। চলবে ৩০ মার্চ পর্যন্ত। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ১১ এপ্রিল ঈদ হবে ধরে নিয়ে এবারের ঈদযাত্রার সূচি সাজিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে।

 

 

সিলেটভিউ২৪ডটকম/ নাজাত