‘সে ছোট্ট মানুষ, যখনেই হাতের বেদনা (ব্যাথা) শুরু হয়, তখনেই অঝোরে কাঁদতে থাকে। কারও কাছে কিচ্ছু কইতেও পারেনা, সইতেও পারেনা।’- এমনটিই বলছিলেন সুনামগঞ্জের মধ্যনগর উপজেলার বংশীকুন্ডা দক্ষিণ ইউনিয়নের হামিদপুর গ্রামের বিরল রোগে আক্রান্ত দুই বছর বয়সী শিশু সুইটি’র দাদী নূরজাহান বেগম। সুইটি হামিদপুর গ্রামের হতদরিদ্র জুয়েল-সাজমা দম্পতির ৩য় কন্যা সন্তান।

জানা যায়, জুয়েল-সাজমা দম্পতির ঘরে জমজ কন্যা সন্তান এলে একটি শিশু স্বাভাবিক থাকলেও অপর শিশুটি জন্মের সময় বুকের ডান পাশে ও ডান হাত লালচে বর্ণ ধারন করে ফোলা ফোলা ভাব দেখা যায়। প্রথমে এগুলো আমলে না নিলেও কিছুদিন পর চিন্তার ভাঁজ পড়ে শিশুটির মা-বাবার কপালে। তারা প্রথমে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা করাতে চাইলে তারা উন্নত চিকিৎসার জন্য বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে পরামর্শ প্রদান করেন। সেই থেকেই শুরু চিকিৎসা সংগ্রামের। প্রথমের দিকে টাকা ধার-দেনা করে সুইটিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান। সেখানে দীর্ঘ ১২ দিন চিকিৎসা শেষে কোন উন্নতি না দেখে তাকে ঢাকায় উন্নত চিকিৎসার পরামর্শ দেন সেই চিকিৎসক। কিন্তু শিশুটির পরিবার ঢাকায় চিকিৎসার ব্যয়ভার চালানোর মতো সামর্থ্য না থাকায় অসহ্য যন্ত্রণা ও অস্বস্তি নিয়েই দিন কাটাতে হচ্ছে সুইটির।


এ বিষয়ে জানতে চাইলে শিশুটির বাবা জুয়েল মিয়া বলেন, ‘আমি একজন হতদরিদ্র ট্রলি চালক। ট্রলি চালিয়ে কোন রকম দু-বেলা দু-মুঠো ভাই খাই। আমার মেয়ে বিরল রোগে আক্রান্ত। আমি সরকারের কাছে আমার মেয়ের চিকিৎসার জন্য আর্থিক সাহায্য প্রার্থনা করছি।’

বংশীকুন্ডা দক্ষিণ ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য কামাল মিয়া বলেন, ‘শিশুটির পিতা একজন হতদরিদ্র ট্রলি চালক। শিশুটির উন্নত চিকিৎসার জন্য আমি উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তার কার্যালয়ে যোগাযোগ করেছি। তারা শিশুটিকে দেখেছে এবং আর্থিক অনুদান বিষয়ক একটি আবেদন ফরম পূরণ করে জমা দেয়ার কথা জানিয়েছে।’

ইউনিয়ন সমাজকর্মী সুয়েল আহমদ জানান, ‘সুইটিকে নিয়ে তার পরিবার আমাদের কাছে এসেছিল। আমরা তাকে সুবর্ণ নাগরিক কার্ড করে দিয়েছি। অচিরেই সে সমাজসেবা কার্যালয় থেকে সুবিধা পাবে।’


সিলেটভিউ২৪ডটকম/এএইচ/পিডি