সিলেট বিভাগের অন্যতম বৃহৎ প্রধান গ্রামীণ বাজার সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার ‘জাউয়া বাজার’ ইজারা এবার সিন্ডিকেটমুক্ত হয়েছে। অতীতে বার বার সিন্ডিকেট করে ইজারা নিলেও এবার তারা পারেনি। ফলে ইজারা না নিতে পেরে ওই পক্ষ মিথ্যচার শুরু করে। বৃহস্পতিবার সিলেট জেলা প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক পাল্টা সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন ১৪৩১ বাংলা সনের ইজারাদার, ছাতক উপজেলার জাউয়া বাজার এলাকার দেবেরগাঁও গ্রামের হাজি রহমত আলীর ছেলে জাহাঙ্গীর আলম।  


ইজারাদার জাহাঙ্গীর আলম সংবাদ সম্মেলনে বাজারের ইজারা প্রক্রিয়া ও উচ্চ আদালত সম্পকে গত বুধবার সিলেটে সংবাদ সম্মেলন করে জাউয়া গ্রামের শফিক উদ্দিনের ছেলে মো. আজির উদ্দিন যে মিথ্যাচার করেন তার প্রতিবাদ জনান।



জাহাঙ্গীর জানান, জাউয়া বাজারসহ ছাতক উপজেলার ২৭টি হাটবাজার ইজারার জন্য ইজারা বিজ্ঞপ্তি চলতি বছরের ৩০ জানুয়ারি দৈনিক যুগান্তর ও সিলেটের ডাক পত্রিকায় প্রকাশ করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গোলাম মুস্তফা মুন্না। বিজ্ঞপ্তিটি ছাতক উপজেলার ওয়েবসাইট, ফেসবুক পেজসহ বিভিন্ন মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়। অথচ প্রতিপক্ষ আজির উদ্দিন গোপন আতাতের মাধ্যমে তা প্রকাশ করা হয় বলে মিথ্যাচার করে। বিজ্ঞপ্তিতে সরকারি মূল্য ১ কোটি ২৬ লাখ ৩২ হাজার ৪৯৯টাকা চাওয়া হয়। অংশগ্রহনকারীদের মধ্যে তিনি সর্বোচ্চ ১ কোটি ৪০ লাখ টাকা এবং অন্যরা ১ কোটি ২৬ লাখ ৮২ হাজার টাকার মধ্যেই দর উল্লেখ করেন। পরবর্তীতে উপজেলা প্রশাসন সকল পক্রিয়া সম্পন্ন করে তাকে ইজারা প্রদান করে। গত ৫ মার্চ তিনি ভ্যাটটেক্সসহ ১ কোটি ৮২ লাখ টাকা খাজনা প্রদান করেন। পরবর্তীতীতে  গত ২০ মার্চ হাট সমঝে দেওয়া হয় বলে জানান জাহাঙ্গীর আলম।


ইজারাদার জানান তিনি ইজরা সমঝে নেওয়ার পর দুই বছর আগের ইজারাদার আজির উদ্দিন ও ফাহিম গংরা সিন্ডিকেট করতে না পারায় তারা ইজারা প্রক্রিয়া বাতিল করতে তৎপর হয়ে উঠেন। প্রথমে তারা গত ২৫ ফেব্রুয়ারি ইজারা পুনরায় আহবান দাবি করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে আবেদন করেন। নীতিমালা অনুযায়ী ৫ মার্চ তা নিস্পত্তি করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। সেখানে ব্যর্থ হয়ে আজির উদ্দিন উচ্চ আদালতে রিট (৩৩২০/২৪) করেন। অথচ আজির উদ্দিন এবার টেন্ডারে অংশই নেননি। তিনি দুই বছর আগে ইজারা নিয়েছিলেন। গতবার ছিলেন সিন্ডিকেটের সাথে। এবার সিন্ডিকেট করতে না পেরে নানা উৎপাৎ শুরু করেছেন বলে দাবি করেন জাহাঙ্গীর।


এক প্রশ্নের জবাবে জাহাঙ্গীর জানান উচ্চ আদালত স্থগিতাদেশ দিলে তিনি সুপ্রীম কোর্টের আপিল বিভাগে (নং-২৯৮/২০২৪) আপিল দায়ের করেন। আপিল শুনানী শেষে চেম্বার জর্জ আদালত স্থিতাবস্থা জারি করেন। আগামি ২২ এপ্রিল পর্ন্ত তা বলবত রয়েছে। অথচ প্রতিপক্ষ সংবাদ সম্মেলন করে উচ্চ আদালতের আদেশ অমান্যসহ নানা অভিযোগ করেন। যা কাম্য হতে পারেনা। তারা বিভ্রান্তি ছড়িয়ে ফায়দা হাসিলের চেষ্টা করছে।


সংবাদ সম্মেলনে ইজারাদার বাজার থেকে টোল আদায় করছেন উল্লেখ করে জানান শান্তিশৃঙ্খলা ভঙ্গের কোনো কারণ নেই। যদি ইজারা বঞ্চিতরা কোনো অপতৎপরতা চালায় তা হলে সেই দায়ভার তাদের নিতে হবে। তাদের জন্য ইজরায় লোকসানের কারণ হলে প্রয়োজনে আইনী সহায়তা নেবেন। তিনি এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক ও ইউএনওসহ পুলিশ প্রশাসনের সাবিক সহযোগিতা কামনা করেন। সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন এলাকার বাসিন্দা ও অংশিদার হীরক তালুকদার, আঙ্গুর মিয়া, মো. নুর মিয়া, আকবর আলী, কামরুল ইসলাম প্রমুখ।

 

সিলেটভিউ২৪ডটকম/প্রেবি/মিআচৌ