শিক্ষা মন্ত্রণালয় অধীনস্থ কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. মো. সিরাজুল ইসলাম বলেছেন, দেশের প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থায় কারিগরি শিক্ষাকে অনতিবিলম্বে প্রথম পছন্দের তালিকায় নিয়ে আসা এখন সময়ের দাবি।

 


এ শিক্ষা অর্জনের ফলে দেশে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সকল চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করা সম্ভব। কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষাসপ্তাহ উপলক্ষে ২য় দিনের কর্মসূচিতে 'স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মান ও চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় কারিগরি শিক্ষা ' শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেছেন। তিনি আরও বলেন, উন্নত সমৃদ্ধ স্মার্ট সোনার বাংলাদেশ গঠন করতে হলে কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদেরকে ও আধুনিক এবং স্মার্ট হতে হবে। কারন ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার এবং কারিগরি শিক্ষা সংশ্লিষ্টরাই খুব সহজেই পারে একটি দেশকে উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত করতে। আর সে কারনেই কারিগরি শিক্ষাকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে গ্রহণ করা এখন সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন।

 
সিলেট পলিটেকনিক ইনষ্টিটিউট এর অধ্যক্ষ মোহাম্মদ রিহান উদ্দিনের সভাপতিত্বে সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড.মোহাম্মদ ফরহাদ রাব্বি। সেমিনারে মূল প্রবন্ধের উপর আলোচনা করেন ইনষ্টিটিউট এর মেকানিক্যাল ডিপার্টমেন্ট এর বিভাগীয় প্রধান ও চীফ ইনষ্ট্রাকটর ইঞ্জিনিয়ার এ কিউ এ জোবায়ের। সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ মণজুরুল আলম।


মূল প্রবন্ধে অধ্যাপক ড.মোহাম্মদ ফরহাদ রাব্বি বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লব এর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় প্রযুক্তিতে স্বয়ংক্রিয়করণ এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা অর্থাৎ আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্স সহ নতুন নতুন প্রযুক্তি কাজে লাগাতে হবে। আর সেজন্য চাই দক্ষ যোগ্য এবং কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত মানুষ। তাই বেশিরভাগ শিক্ষার্থীরা যাতে সাধারণ শিক্ষার দিকে না ঝুকে কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত হয় সে বিষয়ে সবাইকে খেয়াল রাখতে হবে। প্রবন্ধ উপস্থাপন কালে ড.রাব্বি আরো বলেন,  সবাই যদি ফার্ষ্ট চয়েজ হিসেবে কারিগরি শিক্ষাকে গ্রহন করে তবেই বাংলাদেশ খুব দ্রুততম সময়ের মধ্যে সত্যিকারের স্মার্ট বাংলাদেশে রুপান্তরিত হবে। 

 

সেমিনারে সিলেট বিভাগের বিভিন্ন কারিগরি শিক্ষা ও প্রকৌশল সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক এবং উর্দ্ধতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। এসময় কারিগরি শিক্ষাক্ষেত্রে নানান সমস্যা সম্ভাবনার কথা তুলে ধরেন অতিথিবৃন্দ।  


সেমিনার শেষে সিলেট পলিটেকনিক ইনষ্টিটিউট এর বিভিন্ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান এর সাথে সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর প্রদান করেন সিলেটে অবস্থিত বিভিন্ন শিল্প কারখানা প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ। বিভিন্ন শিল্প কারখানা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিগন আগামীতে সিলেট পলিটেকনিক ইনষ্টিটিউটের শিক্ষার্থীদের যথাযথ ব্যবহারিক প্রশিক্ষন এবং চাকুরী প্রদানের জন্য সব ধরনের সহযোগিতা করার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।

 

উল্লেখ্য সারাদেশে একযোগে শুরু হয়েছে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা সপ্তাহ। সারা দেশের ন্যায় সিলেট পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটেও পালিত হচ্ছে চার দিন ব্যাপি এই অনুষ্ঠান। কারিগরি শিক্ষা সপ্তাহের ৩য় দিনে ( ৩০ এপ্রিল) দেশের স্বনামধন্য ইন্ডাস্ট্রিজ এবং সিলেট বিভাগের সকল কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হবে চাকুরি মেলা। যেখান থেকে সরাসরি সাক্ষাৎকারের  মাধ্যমে শতাধিক চাকুরিপ্রত্যাশিদের  চাকুরি প্রদানের কথা রয়েছে। সমাপনী দিনে (০২ মে)   মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে চারদিনব্যাপী অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষনা করা হবে।

 


সিলেটভিউ২৪ডটকম/নাজাত