গ্র্যান্ড স্ট্যান্ডের ওপারে চমকে উঠল মেঘ, বোলিং হচ্ছিল সে প্রান্তেই। স্কয়ার লেগে দাঁড়ানো আম্পায়ার সাথিরা জাকির প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই ছুটে গেলেন আরেক আম্পায়ার মোর্শেদ আলী খানের দিকে। দুজন আলোচনা করে আবার খেলা চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেও একটু পরই নামা বৃষ্টিতে বন্ধ করে দিতে হলো খেলা। 

 


 


প্রায় পুরো দেশ যখন একটু বৃষ্টির আশায় অপেক্ষার প্রহর গুনছে, তখন সিলেটে দুই দফা ঝুম বৃষ্টিতে পুরো হতে পারল না সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি। অবশ্য তার আগেই দয়ালান হেমলতার ২৪ বলে ৪১ রানের ঝোড়ো ইনিংসে কাজটা সেরে রেখেছিল ভারত। ১২০ রানের লক্ষ্যে ৫.২ ওভারে ৪৭ রান তুলে ডিএলএস পদ্ধতিতে এগিয়ে থাকা ভারত শেষ পর্যন্ত ম্যাচটি জিতেছে ১৯ রানে। ৫ ম্যাচের সিরিজে সফরকারীরা এগিয়ে গেল ২-০ ব্যবধানে। 

 

 


প্রথম ইনিংসে বেশ জোরে বৃষ্টি হলেও সঙ্গে রোদও ছিল, মাঠও শুকায় দ্রুতই। কিন্তু সন্ধ্যায় নামা বৃষ্টি আর থামেইনি। ম্যাচ পরিত্যক্ত হওয়ার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসে স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৭-৫০ মিনিটের দিকে, তবে মাঠের ফ্লাডলাইটের বেশির ভাগ নিভে যায় আগেই। মাঠকর্মীরাও জানতেন, আর সম্ভব না খেলা!

 

 

তার আগে ১১৯ রানের সম্বল নিয়ে ইনিংসের দ্বিতীয় বলে শেফালি বর্মাকে আউট করে বাংলাদেশকে উজ্জীবিত করেছিলেন মারুফা আক্তার, কিন্তু ২০২২ সালের অক্টোবরের পর প্রথমবার আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে নামা হেমলতার ঝড়ের জবাব ছিল না তাঁদের কাছে। সব মিলিয়ে দর্শক আগের ম্যাচের চেয়ে একটু বেশি ছিল। তবে যারা এসেছিলেন, শেষ পর্যন্ত তাদের ফিরতে হয় হতাশ হয়েই।

 

 


অবশ্য টস জেতার পর শুরুটা বাংলাদেশের আশাজাগানিয়াই ছিল। সর্বশেষ কয়েকটি ম্যাচে তেমন কিছু করতে না পারলেও বাংলাদেশের টপ অর্ডার এবার ভালো একটা শুরুই এনে দেয়। তবে মিডল অর্ডারের ধসে ধাক্কা খায় স্বাগতিকেরা। ওপেনার মুর্শিদা খাতুন আগলে রাখেন এক প্রান্ত, ৪৯ বলে ৪৬ রান করে আউট হন নবম ব্যাটার হিসেবে। তাঁর ইনিংসেই লড়াই করার মতো সংগ্রহ আসে।

 

 

পাওয়ারপ্লেতে দিলারা আক্তার ও সোবহানা মোস্তারির উইকেট হারালেও ওঠে ৪৩ রান। এমন শুরুর পর মাঝের ওভারে বাংলাদেশের দরকার ছিল জুটির, মুর্শিদা খাতুনের সঙ্গে সেটি গড়ার ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন নিগার সুলতানা। কিন্তু ৭ বলের মধ্যে ৩ উইকেট হারিয়ে উল্টো চাপে পড়ে স্বাগতিকেরা। নিগার সুলতানা ও ফাহিমা খাতুন রাধা যাদবের পরপর ২ বলে হন এলবিডব্লিউ, পরের ওভারে শ্রেয়াঙ্কা পাতিলের বলে ক্যাচ তোলেন সুলতানা খাতুন।

 

 


১১ ওভার পর নামা বৃষ্টিতে এরপর বন্ধ হয়ে যায় খেলা। তাতে এক ঘণ্টার একটু কম সময় খেলা বন্ধ থাকলেও ওভার কাটা যায়নি কোনো। সে বিরতি বাংলাদেশের জন্য হয়ে আসে আশীর্বাদ হয়েই। এ ম্যাচে স্বর্ণা আক্তারের জায়গায় দলে আসা রিতু মনি খেলেন গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস। কিন্তু মুর্শিদার সঙ্গে তাঁর জুটিও সেভাবে বড় হয়নি। ১৮ রানেই শেষ ৫ উইকেট হারায় বাংলাদেশ।

 

 


৬ রানে ভারত অধিনায়ক হারমানপ্রীতের হাতে জীবন পাওয়া মুর্শিদা রানআউট হন ফ্রি হিটে, শেষ পর্যন্ত তিনি টিকে থাকলে হয়তো আর কয়েকটা রান বেশি হতো। অবশ্য মুর্শিদা সে পর্যন্ত না থাকলে তো বাংলাদেশ গুটিয়ে যায় আরও আগেই!

 

 

সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ: ২০ ওভারে ১১৯ (মুর্শিদা ৪৬, রিতু ২০, সোবহানা ১৯, দিলারা ১০, নিগার ৬ ; রাধা ৩/১৯, শ্রেয়াঙ্কা ২/২৪, দীপ্তি ২/১৪)।

ভারত: ৫.২ ওভারে ৪৭/১ (হেমলতা ৪১*, স্মৃতি ৫*; মারুফা ১/১১)

ফল: ভারত ১৯ রানে জয়ী (ডিএলএস)

 

 

সিলেটভিউ২৪ডটকম / প্রথম আলো / ডি.আর